মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

সাত দিন পায়ে হেঁটে যেভাবে পালিয়ে এলেন অন্তঃসত্ত্বা হাসিনা

বিবিসি : একটি বাঁশের লাঠি ধরে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছিলেন হাসিনা বেগম। তিনি ছমাসের অন্তঃসত্ত্ব¡া। টানা সাতদিন ধরে হাঁটছেন। পা ফুলে ঢোল হয়ে গেছে। বলছিলেন আর পারছেন না এভাবে। তার সাথে যখন আমার কথা হয় তখন পর্যন্ত পুরো চব্বিশ ঘণ্টা তার পেটে দানাপানি পড়েনি। আরো আটটি সন্তান রয়েছেন তার সঙ্গে। আর রয়েছেন স্বামী।

হাসিনা বেগম বলছিলেন, কাজ করতে পারিনা, কিছু করতে পারিনা, তাই ঘরবাড়ি ফেলে রেখে আসছি।

তিনি বলেন, সেনাবাহিনী বা স্থানীয় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা তাদের কোন কাজ দিচ্ছে না আর।

তার স্বামী একজন রাজমিস্ত্রী। সেনাবাহিনী কিংবা বৌদ্ধদের বাড়িঘর ও প্রতিষ্ঠানেই একমাত্র তার কাজ করার সুযোগ ছিল। কিন্তু দুমাস ধরে কোন কাজ পাননি তার স্বামী।

তারা খাদ্যসঙ্কটে পড়ে গিয়েছিলেন। তাদের দশজনের সংসার এবং অনাগত একজন রয়েছে পেটে, কিন্তু রোজগার নেই।  খাদ্য যখন নেই, আমরা সেখানে কি করে থাকব? তাই নিরুপায় হয়ে পালিয়ে এসেছি, বলছিলেন হাসিনা বেগম।

  পালংখালির আনজুমপাড়া সীমান্তে হাসিনা বেগমের মতো আটকে আছেন আরও বহু শরণার্থী 

হাসিনার মতো হাজার হাজার মানুষ গত সোমবার থেকে অপেক্ষা করছে পালংখালির আনজুমপাড়া সীমান্তের বাংলাদেশ অংশের শূন্য রেখা বরাবর।

তাদের সেখান থেকে আর এগোতে দিচ্ছে না বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবি।

বলা হচ্ছে যাচাই-বাছাই হবে তাদের এবং তারপর রোহিঙ্গা শিবিরগুলো থেকে সেনাবাহিনীর নির্দেশনা এলেই তাদের এগোতে দেয়া হবে।

তারা খোলা আকাশের নিচে ধানক্ষেতের আলের উপর রয়েছেন।

রোদে পুড়ছেন, বৃষ্টিতে ভিজছেন। অনাহারে-অর্ধাহারে থাকছেন।

প্রাথমিক হিসেব বলছে তাদের সংখ্যা হবে পনেরো হাজার।

এদের কাছ থেকে জানা যাচ্ছে, সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের শূন্য রেখায় রয়েছে আরো হাজার হাজার রোহিঙ্গা।

তারা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় আছেন। 

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ