শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

মূল সমস্যার সমাধান আজ একান্ত প্রয়োজন

তানিয়া আক্তার : মূল সমস্যার দিকে যদি দৃষ্টিপাত না করে শাখা সমস্যার দিকে দৃষ্টি দেয়া হয়,তবে কোন সমস্যারই সমাধান হবে না। আমাদের বর্তমান সমাজ ব্যবস্থা এখন এরকমই হয়ে গেছে। কোন বৃক্ষের প্রতিটি পাতায় পানি দিতে হয় না, মূলে পানি দিলেই, সেই পানি প্রতি পাতায় পৌছে যায়। ঠিক একই ভাবে আমরা যদি সমাজ থেকে অশ্লীলতা, অন্যায়, অপরাধ কমাতে চাই তবে আলাদা ভাবে প্রতিটি অন্যায় এর দিকে দৃষ্টি না দিয়ে মূল অন্যায় বা সমস্যা র দিকে নজর দিতে হবে।  দুর্ভাগ্য হলেও সত্য, বর্তমানে কিশোর বয়স থেকেই অন্যায়ের প্রথম ধাপ শুরু হয়। আর তাই মূল সমস্যার সমাধান দিতে এ সময় থেকেই চেষ্টা চালাতে হবে।আর তা হলো নৈতিকতার অভাব। আমাদের সমাজে নৈতিকতারও ভুল ব্যাখ্যা দেয়া হয়! নৈতিকতার সাথে ব্যক্তির বিশ্বাস  এর এক গভীর যোগ আছে। বিশ্বাস যত মজবুত, সঠিক ও দৃঢ় হবে, তার নৈতিকতাও সেই মাপের হবে।
আর এক্ষেত্রে পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সঙ্গ প্রধান ভূমিকা পালন  করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে নৈতিকতা বলতে এখন সত্য কথা বলা, গুরু জনে সম্মান করা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। ব্যক্তির ব্যবহারিক চরিত্র সংশোধন এর কোন কার্যকরী উপাদান উপস্থিত নেই তাতে।
যদি কোমলমতি সন্তানদের  ছোটবেলা থেকেই সঠিক আদর্শ ঠিক করে দেয়া না হয় তবে তারা নিজেরাই চারপাশ থেকে আদর্শ বানিয়ে নিবে। ফলশ্রুতিতে যা হবার তাই হয়।আমাদের শিক্ষক সমাজ ধর্মীয় বিশ্বাসের আলোকে  নৈতিকতা শিক্ষা দিতে নারাজ। সবার মাঝেই নৈতিক গুণাবলী থাকে, কিন্তু সঠিক বিশ্বাসের অভাবে এ নৈতিকতার স্থায়িত্ব  বেশিদিন থাকেনা। তাই টেকসই নৈতিক চরিত্রের জন্য চাই, সঠিক, টেকসই বিশ্বাস।
 তাই ইসলাম এর সঠিক ও পর্যাপ্ত জ্ঞান, রাসূল (সা) ও সাহাবায়ে কেরামের জীবন পদ্ধতি ছোট বেলা থেকেই ব্যবহারিক ভাবে শিক্ষা দিতে হবে। ইসলাম এর বিশ্বাস শুধু দুনিয়া পর্যন্তই সীমিত নয়। তাই ইসলাম মানুষ এর মাঝে যে ধরনের মানসিকতা,নৈতিকতা,জীবন পদ্ধতি শিক্ষার বীজ বপন করে দেয়,তা সে আমৃত্যু মানার ব্যাপারে সচেষ্ট থাকে।  কিন্তু দুঃখের বিষয় হল,যদি এসব বুলি কাগজের প্রতি পাতায় সীমাবদ্ধ থাকতে দেয়া হয়,তবে আমাদের আরো দেখতে হবে ঐশীর মত মা বাবাকে হত্যাকারী সন্তান, আরো রাস্তার আশে পাশে ডাস্টবিন এ পড়ে থাকা নবজাতকের জীবিত বা মৃত দেহ, আরো দেখতে হবে প্রেমের জন্য কিশোর- কিশোরীদের আত্মহত্যা।
ভাবতে খুবই অবাক লাগে, যে পিতামাতা নিজেরাই ঘুষ দিয়ে সন্তানকে ভালো স্কুলে ভর্তি করছে, তারা কি আশা করছে তাদের সন্তান থেকে? মা-বাবা নিজেরাই যদি সন্তানদের প্রিয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে বাছাই করে দেন বারবি,  ডোরিমন কে তারা আসলে কি আশা করছে এ সন্তানদের থেকে?
ব্যতিক্রম মা-বাবা অবশ্য আছে, যারা চেষ্টা করে সন্তানকে সঠিক ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত করতে, সেই সন্তান যখন সমাজেরই অন্যদের সাথে মিশবে, সে কি নিজেকে সংযত রাখতে পারবে? সেই জন্য চাই  ব্যবহারিক প্রশিক্ষন।
নিজের ও সন্তানের চরিত্র এমন ভাবে গঠন করা যাতে আরো দশ জন কে নিজের মত করে তৈরি করতে পারে, নিজে প্রভাবিত না হয়ে অপরকে প্রভাবিত করতে পারে নৈতিকতার পথে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ