তুর্কি টিভি’র সাংবাদিকদের দুই মাসের জেল দিয়েছে মিয়ানমার
১১ নবেম্বর, ইন্টারনেট : তুরস্কের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ‘টার্কিশ রেডিও অ্যান্ড টেলিভিশন করপোরেশন’ (টিআরটি)’র দুই সাংবাদিকসহ চারজনকে দুই মাসের কারদ- দিয়েছেন মিয়ানমারের একটি আদালত। দেশটির পার্লামেন্টের ওপর দিয়ে ড্রোন চালানোর অভিযোগে শুক্রবার তাদেরকে এ দ- দেয়া হয় বলে তাদের আইনজীবী জানিয়েছেন। গত ২৭ অক্টোবর রাজধানী নাইপেদোতে ড্রোনের মাধ্যমে ভিডিও ধারণের সময় এই চারজনকে আটক করে নিরাপত্তা বাহিনী। ২১ অক্টোবর তারা পেশাগত কাজে মিয়ানমার গিয়েছিলেন। গ্রেপ্তারের পর টিআরটির সিঙ্গাপুর প্রতিনিধি মক চয় লিন, ক্যামেরাম্যান ল হং মেং, দোভাষী অং নেইং সোয় এবং ড্রাইভার হিলা তিনের বিরুদ্ধে সংসদ ভবনের পাশে বিনা অনুমতিতে ড্রোন ওড়ানোর অভিযোগ আনা হয়। তবে তুরস্কের টিআরটি বলছে, সাংবাদিকরা সেখানে কিছু ভিডিও ধারণ করবে এটি মিয়ানমারের তথ্য মন্ত্রণালয়কে আগেই জানানো হয়েছিল। কিন্তু ভিডিও ধারণের জন্য ড্রোন উড়ানোর আগেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
টিআরটি জানিয়েছে, দলটি দেশটির একজন এমপির সাক্ষাৎকার নেয়ার পর পার্লামেন্ট ভবনের চিত্র ধারণ করতে চাইছিল। টিআরটি আরো জানায়, পুলিশ স্থানীয় সাংবাদিক অং নাইং সুর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে এবং তার কম্পিউটার ও হার্ডড্রাইভ জব্দ করেছে। আটকের পরপরই দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করে। তদন্তে দেখা যায় আটককৃতরা বিমান আইন ছাড়াও আমদানি-রপ্তানি আইন ভঙ্গ করেছেন। কিন্তু বিচারক ১৯৩৪ সালের বিমান আইনের একটি ধারাকে প্রাধান্য দিয়ে ২ মাসের সাজা দেন। যথাযথ লাইসেন্স ছাড়া ‘নিষিদ্ধ’ পণ্য আমদানির দায়ে দলটি অতিরিক্ত তিন বছরের কারাদ-ের মুখোমুখি হতে পারে বলে আইনজীবী জানিয়েছেন। ১৬ নভেম্বর এ নিয়ে বিচার শুরু হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে সাজাপ্রাপ্তদের আইনজীবী খিন মং জো মনে করেন, বিদেশি হিসেবে মিয়ানমারের আইন না জানা স্বাভাবিক। এজন্য তাদের কারাদ- দেয়া সঠিক নয়; বরং জরিমানাই যুক্তিযুক্ত।
তিনি বলেন, যেহেতু আসামিরা ভুল করেছে বলে স্বীকার করেছে সেহেতু তাদের জরিমানা হতে পারে। কারাদ- গ্রহণযোগ্য নয়। শিগগিরই আপিল করা হবে বলেও তিনি জানান। শুক্রবার রায় ঘোষণার আগে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আসলে কী হচ্ছে আমরা কিছুই জানি না। বন্দিদের তাদের পরিবারের সঙ্গেও কথা বলতে দেয়া হচ্ছে না। কি আইনে কিভাবে বিচার হচ্ছে তাও আমাদের বিস্তারিত জানানো হয়নি। মিয়ানমারের মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন নিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশটির সঙ্গে তুরস্কের চলমান উত্তেজনার মধ্যে এ ঘটনা ঘটল।