প্যারাডাইস পেপার্স কেলেঙ্কারিতে ১০ বাংলাদেশীর নাম
স্টাফ রিপোর্টার : বারমুডাভিত্তিক কয়েকটি প্রতিষ্ঠান থেকে ফাঁস হওয়া প্যারাডাইস পেপার্সখ্যাত গোপন নথিতে বিদেশে গোপনে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগকারীদের তালিকায় উঠে এসেছে ১০ বাংলাদেশীর নাম।
গত শুক্রবার কর ফাঁকি দিয়ে পাঁচ লাখ ২০ হাজার অফশোর প্রতিষ্ঠান, এসবে গোপনে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগকারী ও এর মধ্যস্থতাকারীদের নাম প্রকাশ করে অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (আইসিআইজে)। এতে বাংলাদেশী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম উঠে আসে।
ওই নথিতে প্রাপ্ত বাংলাদেশীদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল আউয়াল মিন্টু, স্ত্রী নাসরিন ফাতিমা আউয়াল এবং তিনপুত্র তাবিথ আউয়াল, তাফসির আউয়াল ও তাজওয়ার মোহাম্মদ আউয়াল। আরো রয়েছেন তাজওয়ারের অভিভাবক হিসেবে আব্দুল আওয়াল মিন্টুর নাম। এছাড়া রয়েছেন ফয়সাল চৌধুরী, ফরিদা মুঘল, শহীদ উল্লাহ এবং সামির আহমেদের নাম। তালিকায় রয়েছে ব্রুমার্স এন্ড পার্টনার্স কোম্পানির নামও।
আইসিআইজে বারমুডার আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান অ্যাপলবি থেকে ফাঁস হওয়া গোপন নথির বরাতে জানায়, আউয়াল পরিবারের সদস্যরা ১৯৯৯ সালের ৯ আগস্ট বারমুডায় ‘এনএফএম এনার্জি লিমিটেড’ নামে একটি গ্যাস অনুসন্ধান ও ড্রিলিং কোম্পানি খুলে গোপনে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেন।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের শুরুতে কর ফাঁকি দিয়ে অফশোর কোম্পানিতে বিনিয়োগের কেলেঙ্কারির তথ্য প্রকাশ করে আইসিআইজে।
অ্যাপলবি ছাড়াও বারমুডার আরো দুটি কর্পোরেট সার্ভিস ফার্ম এসটেরা ও এশিয়াসিটি ট্রাস্ট থেকে পাওয়া এক কোটি ৩৪ লাখ গোপন নথিকে প্যারাডাইস পেপার্স নাম দিয়ে ফাঁস করে।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ বিশ্বের প্রায় ১৮০টি দেশের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, রাজনিতীবিদের নাম আছে প্যারাডাইস পেপার্সে। নিজ দেশে কর ফাঁকি দেয়ার জন্য, কর দিতে হয় না বা দিলেও খুবই স্বল্প হারে দিতে হয় এমন দেশে (ট্যাক্স হ্যাভেন) নিজেদের অর্থ বিনিয়োগ করে রেখেছেন।
এই পেপার্সে তাদের নাম এসেছে যারা নিজ দেশে কর থেকে বাঁচার জন্য বিভিন্ন ট্যাক্স হ্যাভেনে (কর দিতে হয় না কিংবা খুবই নিম্ন হারে কর দেওয়া যায় এমন দেশ) বিনিয়োগ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। এতে গোপনে বিপুল পরিমাণ অর্থ করস্বর্গ হিসেবে পরিচিত দেশ ও অঞ্চলের অফশোর কোম্পানিতে বিনিয়োগের তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
আইসিআইজের কাছ থেকে এসব নথি যায় বিবিসি, গার্ডিয়ানসহ ৬৭টি দেশের ১০০টি সংবাদমাধ্যমের কাছে। এসব প্রতিষ্ঠানের ৩৮২ জন সাংবাদিক নথির তথ্য নিয়ে তদন্তে নামে।
উল্লেখ্য, প্যারাডাইস পেপার্সের আগে গত বছরের এপ্রিলে প্রকাশিত পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারিতেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাসহ বাংলাদেশের ২১ ব্যক্তি ও ৩টি প্রতিষ্ঠানের নাম এবং ১৮টি ঠিকানা প্রকাশ করা হয়েছিল।