শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

নিরাপত্তার নিশ্চয়তাহীন প্রত্যাবাসনে আরাকানে ফিরে যেতে মুসলমান কিশোরীদের মাঝে আতঙ্ক

কামাল হোসেন আজাদ, কক্সবাজার: মাস তো কয়েকটি পেরিয়েছে; নির্যাতন তো বন্ধ হয়নি। অব্যাহত রয়েছে জাতগত বৈষম্যমূলক হিংসাত্মক অত্যাচার। মগসেনা কর্তৃক সেদিনের পাশবিক জুলুম নির্যাতনের দুঃসহ স্মৃতি ভুলে যাবার মতো নয়। এখনও সেই অবর্ণনীয় বিভীষিকাময় স্মৃতি তাড়িয়ে বেড়ায় রফিকা, কুলসুমা, নাছিমাদের মতো শত শত রোহিঙ্গা মুসলিম কিশোরীদের। আবারও আমরা তাদের পাশবিকতার উপকরণ হবো? এমনটি ভাবতেই অশ্রু গড়িয়ে পড়ে ভুক্তভোগি কিশোরীদের চোখ থেকে।
নিরাপত্তার নিশ্চয়তাহীন প্রত্যাবাসনে আমাদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হবে এমন প্রশ্নও কিশোরীরা বিশ্ব বিবেকের কাছে ছুঁড়ে দিয়েছেন। এভাবে বর্মী নিয়ন্ত্রিত প্রত্যাবাসন চুক্তি কিশোরীদের জন্য শংকা ও আতঙ্কের বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলেন, নারীদের নিশ্চয়তার কোন কথা চুক্তিতে আসেনি। কিনতু বেপরোয়া হারে মুসলমান খুনের পাশাপাশি উগ্রপন্থী রাখাইন ও মগসেনাদের হাতে সবচেয়ে গণধর্ষণসহ পাশবিক হত্যার শিকার হয়েছে নারী, তরুণী ও কিশোরীরা।
সূত্রে প্রকাশ, স্বদেশে ফিরে যেতে রোহিঙ্গা কিশোরীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। দেশে ফেরার পর তারা পুনরায় নির্যাতিত হওয়ার আশংকা, সেনাবাহিনীর নৃশংস হত্যার বিভীষিকা এখনো তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।
গত ২৫ আগস্ট বার্মার সামরিক সরকারের নারকীয় হত্যাকান্ডে ৬ লাখ নব্বই হাজারের অধিক রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।তাদের মধ্যে এতিম হয়ে যাওয়া শিশু এবং কিশোরীরা মানসিক বিপর্যয়ে পড়েছে। বেশিরভাগ কিশোরী বার্মার মিলিটারি ও উগ্রপন্থী বৌদ্ধদের দ্বারা পাশবিক নির্যাতনসহ গণধর্ষণের শিকার হয়েছে।
সূত্রমতে, বালুখালী অস্থায়ী শরণার্থী শিবিরে আশ্রিত রোহিঙ্গা কিশোরী রফিকা বলেন, “আমরা আমাদের দেশে ফিরে যেতে চাই। কিন্তু আমরা যে মগের নির্যাতনের শিকার হবো না তার নিশ্চয়তা কোথায়? কে দিবে আমাদের নিরাপত্তা? আমাদের মত অনেক মেয়ে গণধর্ষণ করে খুন করেছে মগসেনারা।”
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কি রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে? না, পূর্বের মত তারা নির্যাতনে পড়ে বাংলাদেশে আশ্রয়গ্রহণ করবে, সংশয় রয়ে গেছে সবার মাঝে।
রোহিঙ্গা কিশোরীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং পূর্ণ অধিকার নিশ্চিত করণে আন্তর্জাতিক মহলের ভূমিকা রাখা উচিত বলে মনে করছেন বিশ্লেকরা। রোহিঙ্গাদের পূর্ণ অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে স্বদেশে ফেরত পাঠানো হলে আরো বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে ধারণা করছেন তারা।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ