শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

ম্যারাডোনার জন্যই গ্রুপ বি'র দিকে সকলের দৃষ্টি

আসন্ন বিশ্বকাপ ফুটবলে গ্রুপ বি একমাত্র দিয়েগো ম্যারাডোনার জন্যই ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। আর তাই দক্ষিণ আফ্রিকায় বিশ্বের শতকোটি ভক্তের আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে বিশেষ করে এই গ্রুপটিকে ঘিরেই। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ জয়ী দলের তারকা এবং একই সাথে বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার হিসেবে ম্যারাডোনার প্রতি আগ্রহ সবসময়ই একটু বেশী থাকে। তার উপর ৪৯ বছর বয়সী এই ফুটবলারের বর্ণাঢ্য এবং বিতর্কিত জীবন এবং ফুটবল ছেড়ে দেবার পরে জাতীয় দলের কোচ হিসেবে আবির্ভাব সবকিছুই যেন আর্জেন্টিনাকে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছে। এবারের আসরের চূড়ান্ত পর্বে আসাটাই ছিল আর্জেন্টিনার জন্য বড় ভাগ্যের ব্যপার। উরুগুয়ের বিপক্ষে বাছাইপর্বে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়ে শুধুমাত্র দক্ষিণ আফ্রিকার টিকেটই নিশ্চিতই করেনি আকাশী সাদা জার্সিধারীরা একইসাথে তখন থেকে ম্যারাডোনার অধীনে নিজেদের মেলে ধরার জন্য যথেষ্ট পরিশ্রমও করেছে। যার লক্ষণও ইতোমধ্যেই সকলে দেখতে পেয়েছে। বিশেষ করে গত মার্চে জার্মানীর বিপক্ষে প্রদর্শনী ম্যাচে ১-০ গোলের জয় সমালোচকদের মুখ অনেকটাই বন্ধ করে দিয়েছে। আর তখন থেকেই আর্জেন্টিনার সাফল্য নিয়ে আলাদা করে তারা ভাবতে শুরু করেছে। তার ওপর দলে যখন বর্তমান সময়ে ইউরোপীয়ান বর্ষসেরা খেলোয়াড় লিয়নেল মেসি রয়েছেন তখন তাদের সম্ভাবনা নিয়ে হতাশ হবার কিছুই নেই। ইন্টার মিলানের তারকা জুটি জেভিয়ার জানেট্টি এবং এস্টেবান ক্যামবিয়াসো বাদে তারুণ্য এবং অভিজ্ঞতার সংমিশ্রণে যে স্কোয়াড ঘোষণা করা হয়েছে সেটাও যে কোন দলকে প্রতিরোধ করার জন্য যথেষ্ট। গ্রুপ পর্বে আর্জেন্টিনা, গ্রীস, নাইজেরিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়াকে মোকাবিলা করবে। দুইবারের চ্যাম্পিয়ন দলটি যদি এই মুহূর্তে খুব একটা ভাল অবস্থায় নাও থাকে সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই বলেই আশস্ত করেছেন দলীয় অধিনায়ক জেভিয়ার মাসকেরানো। লিভারপুলের এই মিডফিল্ডার বলেন, ‘‘সমালোচকরা যেভাবে বলেন দীর্ঘ সময় ধরে দলের পারফরমেন্স কি অবস্থায় রয়েছে সেটাই বিবেচ্য বিষয়। কিন্তু আমি মনে করি বিশ্বকাপ চলাকালীন সময়ে ঐ মাসটিতে আমাদের পারফরমেন্স কি সেটাই সবাই দেখবে। অনেকের মতে স্পেন এবং ব্রাজিল বাকিদের তুলনায় প্রস্তুতিতে কিছুটা এগিয়ে রয়েছে। কারণ গত দুই বছরে তারা বেশ কিছু শিরোপা লাভ করেছে। কিন্তু অভিজ্ঞতা থেকে আমি বলতে পারি টুর্নামেন্টে যে দলটি ধীরে ধীরে নিজেদের উন্নতি দেখাতে পারবে তারাই বিশ্বকাপ জিতবে। এখানে এমন নয় যে দলটিকে সেরা দলই হতে হবে।’’ এদিকে বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার সাফল্যের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী মনোভাবই পোষণ করেছেন দলীয় কোচ ম্যারাডোনা। তিনি বলেন, ‘‘আমি আমার খেলোয়াড়দের বলে দিয়েছি ৩০ দিনের কঠোর ত্যাগের পরে বিশ্বকাপ ট্রফি স্পর্শ করা একজন মানুষের জন্য বিশেষ কিছু নয়। কিন্তু এ ধরনের কৃতিত্ব অর্জন করা একজন মানুষের জন্য আকাশ ছোঁয়ার সামিল। আমি বিশ্বকাপে খেলে দুটি ফাইনালে পৌঁছাতে পেরেছি। আমি বুঝি এর মর্ম কি।‘‘বলিভিয়ায় বাছাইপর্বের ম্যাচে ৬-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে এবং প্রথমবারের মত নিজেদের মাঠে ব্রাজিলের কাছে বিধ্বস্ত হবার পরেও বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নেওয়াটাই এবার আর্জেন্টিনার কাছে ছিল অবিশ্বাস্য ঘটনা। আর তাই এবারের আসরে অপেক্ষাকৃত সহজ গ্রুপে পড়ার পরে নিজেদের সাফল্যের ব্যাপারে অনেকটাই আত্মবিশ্বাসী ম্যারাডোনা বাহিনী। তবে ২০০২ সালে নিজেদের মাঠে সেমিফাইনালিস্ট দক্ষিণ কোরিয়া, আফ্রিকান সিংহ নাইজেরিয়া এবং ২০০৪ ইউরো চ্যাম্পিয়ন গ্রীসও যে নিজেদের সামর্থ্যের শতভাগ উজাড় করে দিবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। বিশেষ করে এশিয়ান বাছাইপর্বে গ্রুপ অব ডেথ থেকে কঠিন লড়াইয়ের পরে নিজেদের বের করে নিয়ে আসা দক্ষিণ কোরিয়া আর্জেন্টিনার জন্য শক্ত বাঁধা বলেই বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন। আটবার চূড়ান্ত পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জনকারী দক্ষিণ কোরিয়া এক্ষেত্রে এশিয়ান রেকর্ডও গড়ে ফেলেছে। -ইন্টারনেট

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ