শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

শিক্ষামন্ত্রীর সাংবাদিক সম্মেলন আজ

স্টাফ রিপোর্টার : খালি অফিসাররা চোর না, ‘সহনশীল হয়ে ঘুষ খাবেন’ এবং ‘সহনশীল মাত্রায় ঘুষ খাওয়ার পরামর্শ’ শিরোনামে শিক্ষামন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ গণমাধ্যমগুলোতে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ আজ বুধবার দুপুর ১টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকেছেন।
এদিকে গত সোমবার বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় মন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়ে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, তাঁকে ভুলভাবে উদ্ধৃত করে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। এতে ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ রয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা আফরাজুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘দৈনিক মানবজমিন, বাংলাদেশ প্রতিদিন ও আমাদের সময়ে যথাক্রমে ‘খালি অফিসাররা চোর না’, ‘সহনশীল হয়ে ঘুষ খাবেন’ এবং ‘সহনশীল মাত্রায় ঘুষ খাওয়ার পরামর্শ’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। কয়েকটি অনলাইন গণমাধ্যমেও এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় মনে করে প্রকাশিত সংবাদে ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ রয়েছে।
ঘটনার উল্লেখ করে ব্যাখ্যায় বলা হয়ে, ‘২৪ ডিসেম্বর শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে ল্যাপটপ ও প্রশিক্ষণ সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বক্তৃতায় শিক্ষামন্ত্রী এ অধিদপ্তরের অতীতের আট বছর আগের উদাহরণ দিতে গিয়ে ডিআইএর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বর্তমানে ফিয়ার ইনস্পেকশন ও ডিজিটাল মনিটরিং ব্যবস্থা চালুর ফলে এ অবস্থার অনেক পরিবর্তন ও উন্নতি হয়েছে। ডিআইএর কর্মকর্তাদের কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি সহ্য করা হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, সম্প্রতি ডিআইএর একজন কর্মকর্তাকে দুর্নীতির প্রমাণসহ দুদকের সহায়তায় গ্রেফতার করা হয়েছে। মন্ত্রী ঘুষ-দুর্নীতি বিষয়ে ডিআইএসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সংস্থার প্রতি জিরো টলারেন্স নীতি স্মরণ করিয়ে দেন।
কিন্তু প্রকাশিত সংবাদগুলোতে ডিআইএর অতীতবিষয়ক বক্তব্য বা তুলনাকে বর্তমানের কথা ধরে নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। যা দুঃখজনক, বিভ্রান্তিকর ও শিক্ষামন্ত্রীর মূল বক্তব্যের বিপরীত এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বর্তমান নীতির পরিপন্থী।
যা বলেছিলেন মন্ত্রী: গত রোববার শিক্ষামন্ত্রী পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে ল্যাপটপ ও প্রশিক্ষণ সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় মন্ত্রী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে বিভিন্ন বিষয়ে যারা প্রতিবেদন দেন, সেই কর্মকর্তাদের ‘সহনশীল মাত্রা’য় ঘুষ খেতে পরামর্শ দেন। শিক্ষা ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় মন্ত্রী বলেন, “সব জায়গায় যে বলেছি অপচয়-দুর্নীতি আমরা কঠোর অবস্থান নেব এবং দুর্নীতির ক্ষেত্রে আমাদের জিরো টলারেন্স। এটা আমাদের বলতে হবে কিন্তু আমি ইডির (ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট) সভায় বলছি, আপনারা দয়া করে ভালো কাজ করবেন। আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ, আপনারা ঘুষ খাবেন, তবে সহনশীল হইয়্যা খাবেন। অসহনীয় হয়ে বলা যায় আপনারা ঘুষ খাইয়েন না, এটা অবাস্তবিক কথা হবে।”
তিনি বলেন, “নানা জায়গায় এ রকম হইছে, সব জায়গাতেই এ রকম হইছে। খালি যে অফিসার চোর, তা না, মন্ত্রীরাও চোর, আমিও চোর। এই জগতে এ রকমই চলে আসতেছে। সবাইকে আমাদের পরিবর্তন করতে হবে।”
এক পর্যায়ে তিনি বলেন, আমরা এর আগের মেয়াদে দায়িত্ব নিয়ে শিক্ষা প্রকৌশল ও ডিআইএ কর্মকর্তাদের ঘুষ নেবেন না সে কথাটি বলতে পারতাম না, আমরা বলতাম ঘুষ খান কিন্তু সহনশীল মাত্রায়। এখন সেই অবস্থা পাল্টেছে, শিক্ষা প্রকৌশলের বদনাম অনেকটাই কমে গেছে। তবে ডিআইএ কর্মকর্তাদের নিয়ে বদনাম আছে।”

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ