বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরায় নিষেধাজ্ঞায় বেকার হয়ে পড়া কয়েক হাজার জেলের মানবেতর জীবন-যাপন

খুলনা অফিস : সুন্দরবনে দুই মাস কাঁকড়া ধরায় নিষেধাজ্ঞার কারণে বেকার হয়ে পড়েছে জেলেসহ এর সঙ্গে জড়িত কয়েক হাজার মানুষ। এদের জন্য সরকারি কোনও ভাতার ব্যবস্থাও নেই।  অভিযোগ উঠেছে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন তারা। তবে কোনও কোনও জেলে এখনও কাঁকড়া ধরা অব্যাহত রাখার অভিযোগও পাওয়া গেছে। আর নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরা ঠেকাতে কোনও ব্যবস্থাও নেই বলে স্বীকার করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মাহামুদুল হাসান বলেন, ‘সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরায় নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেদের সরকারিভাবে কোনও ধরনের সহায়তা করা হয় না। আর এই সময় সুন্দরবনে আলাদাভাবে কোনও টহলেরও ব্যবস্থা নেই। তবে কোনও জেলে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সুন্দরবনে প্রবেশ করলে তার বিরুদ্ধে বন আইনে ব্যবস্থা নেয়া হয়।’
মংলা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. ফেরদাউস আনসারী বলেন, ‘মংলা উপজেলায় সাত হাজারের মতো তালিকাভুক্ত জেলে রয়েছে। এর মধ্যে দুই হাজারের কিছু বেশি জেলে সুন্দরবনে কঁকড়া শিকারের সঙ্গে জড়িত। তবে জেলেদের দাবি অনুযায়ী এই সংখ্যা আরও বেশি বলে তিনি জানান।
মংলা উপজেলার বাঁশতলা গ্রামের জেলে নুর ইসলাম, সাইফুল শেখ ও ফরহাদ শেখ জানান, ডাঙ্গায় বাঘ আর জলে কুমির এটা হচ্ছে সুন্দরবনের অবস্থা। আর্থিকভাবে সচ্ছল কোনও লোক সুন্দরবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাঁকড়া ধরতে যায় না। তারা প্রায় সবাই গরিব। আর দুই মাস কাঁকড়া ধরায় নিষেধাজ্ঞা চলাকালে পরিবার চালাতে খুবই কষ্ট হয়। কেউ মহাজনদের কাছ থেকে দাদন (বিশেষ শর্তে ঋণ) নিয়ে কোনও রকমে সংসার চালায়। আবার কেউ জীবন বাঁচাতে দিন মজুরির পথ বেছে নেয়। তারা নিষেধজ্ঞার এই সময় জেলেদের সরকারি সহায়তার দাবি জানান। মংলা কাঁকড়া ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মেসার্স ঐশি এন্টারপ্রাইজের মালিক মেহেদী হাসান মুনছুরও নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেদের সরকারিভাবে সহায়তার দাবি জানান। তবে তার অভিযোগ নিষেধাজ্ঞার এই সময়ও কিছু জেলে বনবিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরছে। এই কাঁকড়া ব্যবসায়ী জানান, আগে যেখানে সুন্দরবন থেকে কাঁকড়া আহরণ করে ফিরে আসতে একটি নৌকার খরচ হতো ২-৩ হাজার টাকা।  এখন সেখানে খরচ হয় ১০-১৫ হাজার টাকা। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি দুই মাস কাঁকড়ার প্রজনন মওসুম। এ সময়ের মধ্যে মা কাঁকড়া প্রচুর ডিম দেয়। সেই ডিম থেকে কাঁকড়ার বাচ্চা ফুটে বের হয়। তাই প্রতি বছরের এ সময়ে সুন্দরবন থেকে কাঁকড়া ধরা নিষিদ্ধ করা হয়।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ