বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

খুলনার সরকারি স্কুলগুলোতে ভর্তি শেষ হলেও সমস্যার সমাধান হয়নি

খুলনা অফিস : খুলনা মহানগরীর সাত সরকারি স্কুলের ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ১৪ জানুয়ারির মধ্যে এসব অভিভাবকদের করা রিটের জবাব দেবার সময়সীমা রয়েছে।
ভর্তি কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসনে গঠিত তদন্ত কমিটিও নির্ধারিত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেননি। ফলে উদ্ভূত সংকট-সমস্যার সমাধান না হওয়ায় পুনঃপ্রকাশিত ফলাফলে বাদপড়া শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা হতাশ হচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, গত ১৯ ও ২০ ডিসেম্বর শহরের সাতটি সরকারি স্কুলে তৃতীয় ও ষষ্ঠ শ্রেণীর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ২১ ডিসেম্বর সকালে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা দিয়ে রাতে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থগিত করেন ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. আমিন উল আহসান। এর দু’দিন পর ২৩ ডিসেম্বর নতুন ফলাফল ঘোষণা করা হয়। কিন্তু সেই ফলাফলে তৃতীয় শ্রেণীর পূর্বের তালিকা থেকে খুলনা জিলা স্কুলে ৫৭ জন, সরকারি ইকবালনগর বালিকা বিদ্যালয়ে ৭৬ জন, দৌলতপুরের মুহসিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৮ ও সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে একজন সর্বমোট ১৪২ জন কোমলমতি শিশু বাদ পড়ে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিশু ও তাদের বিক্ষুব্ধ অভিভাবকরা সাংবাদিক সম্মেলন করে। শুধু তাই নয়, গত ২৮ ডিসেম্বর ওবায়দুল ইসলামসহ ১৭ জন অভিভাবক বাদি হয়ে সরকারি স্কুলের ভর্তি কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক আমিন উল আহসান ও সদস্য সচিব জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আরিফুল ইসলামকে বিবাদী করে হাইকোর্টে রিট করেন। ওইদিন আদালত রুল জারি করে পরবর্তী দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। যা আগামী ১৪ জানুয়ারি শেষ হবে।
অপরদিকে, তৃতীয় শ্রেণীর ভর্তি পরীক্ষার প্রথম ঘোষিত ফলাফলে প্রযুক্তিগত ত্রুটি ছিল বলে দাবি করে এ ঘটনা তদন্তে গত ২৩ ডিসেম্বর খুলনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. নূর-ই-আলমকে সভাপতি এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি বিভাগের লেকচারার ইঞ্জিনিয়ার এমএ মঈন ও নগর গোয়েন্দা পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ভাস্কর সাহাকে সদস্য করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। গঠিত এ কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়, যা ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।
খুলনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. নূর ই আলম বলেন, ‘তদন্তের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচিতে তদন্ত কমিটির একজন দায়িত্ব পালনে যাওয়ায় তার স্বাক্ষর নেয়া হয়নি।
দু/একদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন, সাথে কিছু সুপারিশসহ জেলা প্রশাসক বরাবর পেশ করা হবে। তদন্তে আমরা বেশ কিছু ত্রুটি খুঁজে পেয়েছি; সেগুলোই সমাধানের সুপারিশ করা হবে।’
খুলনা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ভর্তি কমিটির নির্দেশনা মোতাবেক সুষ্ঠুভাবেই ভর্তি কার্যক্রম শেষ হয়েছে।’
এদিকে, রীটকারী অভিভাবকদের প্রতিনিধি মো. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ‘অন্য স্কুলগুলোতে ভর্তির সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ায় আমাদের শিশুরা এখনো কোন বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেনি। আদালতের রীট এবং তদন্ত কমিটির ফলাফলও এখনো জানতে পারিনি। সমাস্যার সমাধান না করেই ভর্তি কার্যক্রম শেষ হলো কি করে? আমাদের পরিবারের তো প্রায় দুই সপ্তাহ যাবত খাওয়াÑঘুমের রুটিন হ-য-ব-র-ল অবস্থা। শিশুদের কান্নাই থামাতে পারিনি এখনো।’

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ