শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

‘বিজেপি ইসরাইলের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে’

অধ্যাপক ড. আয়াতুল্লাহ ফারুক মোল্লা  ও অধ্যাপক ড. ইমানুল হক 

ফারুক মোল্লা, ১৫ জানুয়ারি, পার্সটুডে : ইহুদিবাদী ইসরাইল গোটা মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি বলে মন্তব্য করেছেন কোলকাতা আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আয়াতুল্লাহ ফারুক মোল্লা। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু'র ভারত সফরকে কেন্দ্র করে তিনি ওই মন্তব্য করেছেন। নেতানিয়াহু ৬ দিনের ভারত সফরে গত রোববার ভারত সফরে এসেছেন। গতকাল সোমবার সকালে তাকে প্রেসিডেন্ট ভবনে তাকে আনুষ্ঠানিক ভাবে ‘গার্ড অব অনার’ দেয়া হয়। এসময় প্রধানমন্ত্রী, সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।    

ইহুদিবাদী ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সমালোচনা করে অধ্যাপক ড. আয়াতুল্লাহ ফারুক মোল্লা গতকাল সোমবার রেডিও তেহরানকে দেয়া এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘ভারত একটি শান্তিপ্রিয়, সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ইসরাইলের মতো দেশের সঙ্গে ভারতের নিঃশর্ত সখ্যতা কোনোভাবেই কাম্য নয়। বর্তমানে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী ভারতে অবস্থান করছেন। আমরা চাই ভারত সরকার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীকে এই বার্তা দিক যাতে ইসরাইল তার প্রতিবেশি রাষ্ট্র ফিলিস্তিনের সঙ্গে শত্রুতা পূর্ণ নয় বরং বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করুক এবং ফিলিস্তিনিদের ওপরে ক্রমবর্ধমান আক্রমণ বন্ধ করুক।’

তিনি বলেন, ‘ইসরাইল ফিলিস্তিন ভূখ- দখল করে তাদের ওপর চরম জুলুম চালিয়ে যাচ্ছে, অবৈধভাবে বারবার জেরুজালেম দখলের চেষ্টা করেছে। সাম্প্রতিককালে অনৈতিকভাবে ঐতিহাসিক আল-আকসা মসজিদ যেটাকে মুসলিমদের হৃৎপি- বলে মনে করা হয়, কাবা’র পরেই যে মসজিদের মর্যাদা সবচেয়ে বেশি, সেই আল-আকসা মসজিদ অবরোধ করেছ এবং সেই মসজিদ চত্বরে ইসরাইল রক্তাক্ত হানাহানি চালিয়েছে।’

জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী বানানোর অপচেষ্টা জাতিসংঘের সদর্থক ভূমিকায় ব্যর্থ হয়েছে বলেও ড. আয়াতুল্লাহ ফারুক মোল্লা মন্তব্য করেন।   

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ভারত সফর ও দু’দেশের মধ্যে সখ্যতা প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের ভাষা ও চেতনা সমিতির সম্পাদক ও কোলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজের সাবেক অধ্যাপক ড. ইমানুল হক রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘ভারত ছিল জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের অগ্রণী সৈনিক। গোটা পৃথিবীতে ভারতের একটা আলাদা সম্মান ছিল কংগ্রেসের জওহরলাল নেহরু, লাল বাহাদুর শাস্ত্রী ও ইন্দিরা গান্ধীর আমলে। ভারত কখনো ডেভিস কাপে অংশ নেয়নি ইসরাইল ছিল বলে।’  তিনি বলেন, ‘ভারত হচ্ছে সেই দেশ, যারা সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। বিজেপি (ভারতীয় জনতা পার্টি) সরকার, যাদের নাম আসলে ‘বিদেশি জনতা পার্টি’ সরকার বিদেশের কাছে আমাদের দেশের মান-সম্মান, ইজ্জত সব লুটিয়ে দিচ্ছে এবং বর্ণবিদ্বেষী ইসরাইলের কাছে তারা আত্মসমর্পণ করেছে। কারণ ওই দলটি ইসরাইলের অর্থে পুষ্ট। এটা ভারতীয়ত্ব, ভারতের স্বাধীনতার যে স্বপ্ন, সেই স্বপ্নের অপমান। কারণ, ভারত সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। ফিলিস্তিনের মানুষ ইসরাইলের বিরুদ্ধে লড়াই করে তাদের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখার চেষ্টা করছে। সেই স্বাধীনতাকামী মানুষদের পাশে না দাঁড়িয়ে যারা সম্প্রসারণবাদী, যারা সাম্রাজ্যবাদী, যারা ফিলিস্তিনকে দখল করতে চায় তাদের পক্ষে মোদি সরকার দাঁড়িয়েছে।’ এজন্য কেন্দ্রীয় নরেন্দ্র মোদি সরকারকে মানুষ একদিন ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে মানুষ নিক্ষেপ করবে বলেও মন্তব্য করেন পশ্চিমবঙ্গের ভাষা ও চেতনা সমিতির সম্পাদক অধ্যাপক ড. ইমানুল হক।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ