আবারও ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাস্টারপ্লান করছে সরকার -রিজভী
প্রকাশিত: বুধবার ২৪ জানুয়ারি ২০১৮ | প্রিন্ট সংস্করণ
স্টাফ রিপোর্টার : আগামী নির্বাচন একতরফা ও ভোটারবিহীন করতে সরকার নীলনকশার মাস্টারপ্লান করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী। সরকার ফাঁকফোকড়ের মধ্যে দিয়ে ক্ষমতা আকড়ে রাখতে চায়।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক আলোচনা সভায় তিনি এই অভিযোগ করেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মরহুম রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এর আয়োজন করে ‘আরাফাত রহমান স্পোটিং ক্লাব।
আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা আবিবুল বারী আজহানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, সহপ্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম প্রমুখ।
রিজভী বলেন, সরকার আগামী নির্বাচন নিয়ে দুরভিসন্ধিমূলক মাস্টারপ্ল্যান করছে। উদ্দেশ্য আরেকটা ভোটারবিহীন নির্বাচন করবে। তারা আরো লুটপাটের জন্য আবার ক্ষমতায় আসতে চায়। অনাচার-অবিচার করছে একটাই উদ্দেশ্যে, তাদেরকে ফাঁকফোকড়ের মধ্যে দিয়ে ক্ষমতা আকড়ে রাখতে হবে।
এই সোনার হরিণ তারা কোনোভাবেই হাতছাড়া করতে রাজি নয়। এটা করতে গিয়ে যত ধরনের খুন-খারাপি, গুম-হত্যা, রক্ত গঙ্গা বইয়ে দিতে হয় তারা তা করবে। এজন্য তারা সব নীল নকশা করে যাচ্ছে। নীল নকশা অনুযায়ী অনেকদিন ধরেই কাজ করছে’, বলেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব।
প্রায় নিশ্চিত জেনে সরকার নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন (ডিএনসিসি) স্থগিত করেছে অভিযোগ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ডিএনসিসি নির্বাচন বন্ধ করে দেয়া হল। কেনো বন্ধ করে দেয়া হল? কারণ সরকার দেখেছে এখানে যদি যেকোনভাবে নির্বাচন হয় এবং জনগণ যদি ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে তাহলে তারা জিতবে না। সেই কারণেই তাদের আজ্ঞাবহ প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে দিয়ে নির্বাচন স্থগিত করেছে।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে বিএনপির এই নেতা বলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণা করা হয়েছে বা আজকে হবে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঠিকঠাক হয়ে যাবে। কারণ তারা তাদের পছন্দের লোককে সেখানে বসিয়ে দিবে। এখানে তো জনগণের ভোট দেয়ার জায়গা নাই।
তাদের যে পার্লামেন্ট, যে পার্লামেন্টে একই ধরনের আওয়াজ হয়। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দেখবেন কোনো রিটও হবে না-আমার যতটুকু মনে হয়। সবকিছুই সাজানো গোছানো আছে। সেটা তারা করতে পারবে, বলেন তিনি।
সরকারের সময়ে শেষ হয়ে এসেছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, আপনার (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) দিন শেষ। আপনার বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে। এই ঘণ্টা আপনার জন্য বাজছে। এটা বিদায় ঘণ্টা। আপনাকে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতেই হবে।
শিক্ষা ব্যবস্থার দূর অবস্থার কথা তুলে ধরে রুহুল কবির রিজভী বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থা শেষ। খাতায় না লিখলেও পাশ করে যাবে। প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে প্রচুর অর্থের বিনিময়ে। আজ সবই ফাঁস হচ্ছে। শিক্ষামন্ত্রীর পিএর শত শত কোটি টাকা, এটা কী প্রশ্ন ফাঁসের টাকা। পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেয়ার টাকা?
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য একটাই, ফাঁকে-ফোকড়ে ক্ষমতায় টিকে থাকা। আর টিকে থাকতে গুম, খুন যা কিছু করা লাগে করবে। খালেদা জিয়ার কনিষ্ঠ পুত্র আরাফাত রহমান কোকো রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। ছেলের কবরের পাশে মা যাবে, তাও আদালতে হাজিরা দেয়ার পর এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি করেছে শেখ হাসিনা।
নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, আগামী নির্বাচন নির্দলীয় এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হতে হবে। চোরের মায়ের বড় গলার এই সরকারকে জনগণ তালাক দিয়েছে। গরু ছাগলের ভোটে নির্বাচিত সব এমপি। সরকার আগামী নির্বাচন নিয়ে মাস্টারপ্ল্যান করেছে। আরেকটি ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাস্টারপ্ল্যান।