শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের চার জেলায় ৫৭০ কোটি টাকার কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু

খুলনা অফিস : কৃষকদের ভাগ্য উন্নয়নে খুলনাসহ চার জেলার ৫৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) চারটি দপ্তরের মাধ্যমে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এজন্য এক লাখ ১৫ হাজার হেক্টর জমি চিহ্নিত করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কৃষকদের দারিদ্র্যতা হ্রাস, জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে খুলনাসহ উপকূলীয় চার জেলার দেড় লাখ কৃষক পরিবার এর সুফল ভোগ করবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ২০১৩ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উদ্যোগে কৃষকদের দারিদ্র্যতা হ্রাস, জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে উপকূলীয় খুলনা, সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলায় ৫৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এ প্রকল্পের মধ্যে খুলনা জেলায় ১১টি, সাতক্ষীরায় একটি, পটুয়াখালীতে আটটি ও বরগুনা জেলায় দু’টি পোল্ডারসহ মোট ২২টি পোল্ডারে কাজ শুরু হয়। এ কাজ চলবে আগামী ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।
এদিকে, খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলায় সাতটি, পাইকগাছায় একটি, ডুমুরিয়া ১০টি, ফুলতলায় তিনটি ও দিঘলিয়ায় দু’টি ইউনিয়ন এবং সাতক্ষীরা সদর উপজেলার চারটি ইউনিয়ন ও আশাশুনি উপজেলার একটি ইউনিয়নে কাজ চলছে।
এছাড়া বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী সদর উপজেলার সাতটি, গলাচিপার চারটি, দশমিনার একটি, বাউফলে একটি ও কলাপাড়া উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন এবং বরগুনা জেলার আমতলা উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে উন্নয়ন কাজ অব্যাহত রয়েছে।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ সরকার ২৪ ভাগ ও নেদারল্যান্ডস সরকার কর্তৃক প্রদত্ত ৭৬ ভাগ অর্থ অনুদানের মাধ্যমে পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভিন্ন পোল্ডারে কমিউনিটি মোবিলাইজেশন, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, কৃষি উৎপাদন এবং খাদ্য নিরাপত্তা, ব্যবসা উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, জেন্ডার ও প্রশিক্ষণ বিষয়ে কাজ করছে। প্রধান অংশীদার হিসেবে প্রকল্প প্রদান করেছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। ব্লুগোল্ড প্রোগ্রাম পরিদর্শনের মাধ্যমে এ প্রকল্পের মান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করে আসছে। এ ক্ষেত্রে কাজের সুবিধার জন্য তারা ২২টি পোল্ডারকে মোট ৫১৩টি ইউনিটে ভাগ করে নিয়েছে।
খুলনা জেলায় ২৬১, পটুয়াখালী ও বরগুনায় ১৮৮ এবং সাতক্ষীরায় ৬৪টি ইউনিট রয়েছে। এছাড়া কৃষকদের ভাগ্যের পবির্তন ঘটাতে এবং তাদের প্রশিক্ষণ দেয়ার সুবিধার্থে খুলনা জেলায় ২৬০টি, পটুয়াখালী ও বরগুনায় ৩১৬ এবং সাতক্ষীরায় ৫৮টি কৃষক মাঠ স্কুল খোলা হয়েছে। ব্লুগোল্ড প্রোগ্রামের কৃষিবিষয়ক কর্মকর্তারা এ সব স্কুলে কৃষকদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে থকেন। বিভিন্ন পোল্ডারে খাল খননের মাধ্যমে জলাধার সৃষ্টির ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্লুইসগেট পুনঃসংস্কার, বেড়িবাঁধ নির্মাণসহ কৃষকদের সুবিধার জন্য প্রতিটি ইউনিটে পানি ব্যবস্থাপনা দল গঠন করা হয়েছে।
ব্লুগোল্ড প্রোগ্রামের সিনিয়র মান নিয়ন্ত্রক ইঞ্জিনিয়ার মো. আজিজুর রহমান জানান, গত পাঁচ বছরে প্রায় ৫০ ভাগ কৃষকের মান উন্নয়ন হয়েছে।
অনেক পোল্ডারেই কৃষক প্রতি বছর একই জমিতে তিনটি ফসল ফলাতে সক্ষম হচ্ছে। ব্লুগোল্ড কৃষকদের শস্যের বহুমুখিকরণ এবং অধিক ফসল ফলানোর মাধ্যমে দারিদ্র্যতা হ্রাস তথা জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কাজ করে চলেছে। তিনি বলেন, এ প্রকল্পের মাধ্যমে ২০২০ সালের মধ্যেই কৃষক তাদের ভাগ্য শতভাগ পরিবর্তনে সক্ষম হবে।
খুলনা পাউবো’র (ডিভিশন-২) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী দেবব্রত দত্ত বলেন, পানি ব্যবস্থাপনা দলের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে ২২টি পোল্ডারেই কৃষির উন্নয়নে কাজ চলছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২০ সালের মধ্যে কৃষক শতভাগ সুফল ভোগ করবে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ