আফগানিস্তানের ‘৭০ ভাগ এলাকায় তালেবানের সরব উপস্থিতি’
৩১ জানুয়ারি, বিবিসি/রয়টার্স : আফগানিস্তানের ৭০ শতাংশ এলাকায় তালেবানের সরব উপস্থিতি আছে; যার মধ্যে চার শতাংশ এলাকা পুরোপুরি তাদেরই নিয়ন্ত্রণে, বাকি ৬৬ শতাংশেও তালেবান বেশ সক্রিয় বলে এক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। দক্ষিণ এশিয়ার সহিংসতা কবলিত দেশটির সবকটি জেলার ১,২০০ বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি মঙ্গলবার ওই গবেষণার তথ্য প্রকাশ করে।
অনুসন্ধানে আফগানিস্তানে তালেবানের সক্রিয়তার যে হার দেখানো হয়েছে তা গত বছর নেটো নেতৃত্বাধীন জোটের ধারণাপত্রে দেওয়া হারের চেয়েও বেশি।
গত বছরের অক্টোবরে প্রকাশিত ওই ধারণাপত্রের বরাতে মঙ্গলবারও নেটো নেতৃত্বাধীন জোট আফগানিস্তানের ৪৪ শতাংশ অংশে তালেবানের নিয়ন্ত্রণে বা তাদের উপস্থিতি আছে বলে জানিয়েছে।
তালেবানের বিরুদ্ধে ১৬ বছর ধরে যুদ্ধ চালিয়েও তাদের দুর্বল করতে পারেনি মার্কিন বাহিনী। গত ২১ জানুয়ারি কাবুলের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে হামলা চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকসহ ২০ জনের বেশি মানুষকে হত্যার সপ্তাহখানেকের মধ্যেই শহরটির কেন্দ্রস্থলে অ্যাম্বুলেন্সে লুকিয়ে রাখা বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে শতাধিক লোককে হত্যা করে বিদ্রোহী জঙ্গিগোষ্ঠীটি।
এসব হামলার পর তালেবান ও অন্যান্য জঙ্গিগোষ্ঠীর মোকাবেলায় আফগান বাহিনীকে শক্তিশালী করতে ট্রাম্প প্রশাসনের গৃহীত নতুন আগ্রাসী কৌশলপত্র নিয়েও সমালোচনা চলছে।
বিবিসির গবেষণায় আফগানিস্তানে ৩৯৯টি জেলা থাকার কথা বলা হলেও নেটো নেতৃত্বাধীন জোটের ভাষ্যমতে দেশটিতে জেলার সংখ্যা ৪০৭। দুই পক্ষের তথ্যে কেন এত গরমিল তাৎক্ষণিকভাবে তা নিশ্চিত করতে পারেনি রয়টার্স। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটির ভাষ্যমতে আফগানিস্তানের আশরাফ গনি সরকার দেশটির ৩০ শতাংশ এলাকা অর্থাৎ ১২২টি জেলার নিয়ন্ত্রণ রাখলেও সেগুলো তালেবান হামলা থেকে মুক্ত নয় বলে সতর্ক করেছে।
“গবেষণার সময়, এর আগে ও পরে কাবুল এবং অন্যান্য শহরে বড় ধরনের হামলা হয়েছে, ওই হামলাগুলো কাছাকাছি এলাকা থেকে কিংবা স্লিপার সেলের মাধ্যমে চালানো হয়েছে,” বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
বিবিসির গবেষণা বিষয়ে পেন্টাগন সরাসরি কোনো মন্তব্য না করলেও তাদের ইঙ্গিত গত বছরের নেটো নেতৃত্বাধীন জোটের ধারণাপত্রের দিকে, যেখানে ৫৬ শতাংশ এলাকা আফগান বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে কিংবা তাদের প্রভাবে আছে বলে জানানো হয়েছিল। তালেবানের নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকায় জঙ্গি গোষ্ঠীটির প্রভাব কমিয়ে আনতে দেশটির প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি কাজ করছেন বলে তার এক মুখপাত্র বিবিসিকে জানিয়েছেন। অনুসন্ধানে আফগানিস্তানের ৩০টি জেলায় মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) উপস্থিতির কথাও বলা হয়েছে, যদিও এর কোনো এলাকায় তাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেই।