শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সাংবিধানিক অধিকারের সাথে সাংঘর্ষিক -টিআইবি

স্টাফ রিপোর্টার : প্রস্তাবিত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৭কে জনগণের বাক ও মতপ্রকাশের অধিকারের সাংবিধানিক অধিকার ও সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক কনভেনশনের সাথে সাংঘর্ষিক আখ্যায়িত করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) অনতিবিলম্বে ওই আইনের সকল বিতর্কিত ধারা সংশোধন এবং সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্টদের অভিমতের ভিত্তিতে পরিমার্জনের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার দেয়া বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, মানহানি, প্রতারণা, গুপ্তচরবৃত্তিসহ বিবিধ বিষয়ের অপব্যাখ্যা ও অপব্যবহারের ব্যাপক সুযোগের কারণে প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটির দ্বারা জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত না হয়ে বরং জনগণের সংবিধান প্রদত্ত বাকস্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা মারাত্মকভাবে রুদ্ধ হওয়া এবং বাস্তবে নাগরিকের নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

ড. জামান বলেন, ১৯২৩ সালের সরকারি গোপনীয়তা আইনের ৩ ধারায় গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধের শাস্তির বিভিন্ন বিধানকে ভিন্ন মোড়কে খসড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারা-৩২ তে সন্নিবেশিত করা হয়েছে। গুপ্তচরবৃত্তির অজুহাতে গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ব্যক্তির মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে তদন্তকারী কর্মকর্তার ‘অভিপ্রায়-নির্ভর’ করায় প্রস্তাবিত আইনটি ক্ষেত্রবিশেষে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ব্যবহৃত হওয়ার যৌক্তিক আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এছাড়াও প্রস্তাবিত আইনের ৩২ ধারার অপপ্রয়োগের ফলে তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ অনুযায়ী দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘন সংক্রান্ত তথ্য জানার আইনি অধিকার ব্যাপকভাবে রুদ্ধ হবে এবং ফলে দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘন সুরক্ষিত হয়ে এ রূপ অপরাধের অধিকতর বিস্তার ঘটবে বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।

ড. জামান বলেন, ইন্টারনেট তথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সম্প্রসারণের প্রেক্ষাপটে মত ও তথ্য প্রকাশ এবং সত্যানুসন্ধানের যে অবাধ সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে, প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংসদে অনুমোদিত হলে সেই সম্ভাবনা ধূলিসাৎ হবে; গণতান্ত্রিক ও মৌলিক অধিকার চর্চা ব্যাহত হবে যা দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার জন্য আত্মঘাতী হবে। প্রস্তাবিত আইনে তদন্ত কর্মকর্তাকে বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি এবং গ্রেফতারের ক্ষমতা প্রদানের ফলে আইনটি ব্যাপকভাবে অপব্যবহৃত হতে পারে বলে ড. জামান আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

প্রস্তাবিত ডিজিটাল আইনের ৩২ ধারাসহ বিতর্কিত ও মানবাধিকারের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ সকল ধারা সংশোধনের জন্য সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ, গণমাধ্যমকর্মী ও নেতৃবৃন্দ এবং অন্য সকল অংশীজনের অভিমতের ভিত্তিতে একটি পরিমার্জিত সংস্করণ প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ