বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

বাগমারায় বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে এলাকাবাসীর চরম দুর্ভোগ

বাগমারা (রাজশাহী) সংবাদদাতা: রাজশাহীর বাগমারায় পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গাফলতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির কারণে এলাকায় ভয়াবহ বিদ্যুতের লোডশেডিং চলছে। মওসুমের প্রধান ফসল বোর ধান রোপণের সময় এমন লোডশেডিং চলতি মওসুমে বোর ধান চাষ নিয়ে কৃষকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়া চলতি এসএসসি, দাখিল পরীক্ষার্থীরা বিদ্যুতের কারণে লেখাপড়ায় চরম দুর্ভোগে রয়েছে। পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গাফলতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখতে এলাকার কৃষকর উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জানা গেছে, গত প্রায় এক মাস যাবৎ নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি -১ এর বাগমারা জোনাল অফিসের আওতায় দিনে রাতে ২৪ ঘণ্টার অর্ধেক সময়ই বিদ্যুৎ থাকে না। সকাল ৬টা থেকে রাত সাড়ে ৭টা/৮টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ মিলছে না। দিনের বেলায় বিদ্যুৎ না পেয়ে কলকারখানা ও মওসুমের বোর ধান চাষে কৃষকদের চরম দুর্ভোগ বেড়েছে। এছাড়া সরকারের গুরুত্বপূর্ণ অফিস- আদালত, কল-কারখানা, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, বিভিন্ন স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, ও সর্বসাধারণকে বিদ্যুৎ সংকট পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি। নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বাগামারা জোনাল অফিসের বিগত দিনের ডেপুটি জেলারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) ফসিউল আলম এলাকার চাহিদা অনুযায়ী দক্ষতার পরিচয়ে যথেষ্ট বরাদ্দ নিয়েছেন। কিন্তু তিনি গত ৭/৮ মাস আগে তিনি এখান থেকে যাওয়ার পরপরই এলকাবাসী চরম লোডশেডিংয়ের কবলে পড়েছেন বলে এলাকাবাসী দাবি করেন। বালানগর গ্রামের কৃষক আব্দুর মান্নান, রহমত আলী নজরুল ইসলাম, দুলাল উদ্দিন সহ অনেকে জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে নাটোর পল্লী বিদ্যুতের অধীনে বি ফিডার অনরবর্ত দিনে বিদ্যুৎ থাকছে না। বিদ্যুত না থাকার কারণে জমিতে চাষ ব্যাহত হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ সমস্যার দূরকরণে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকিউল ইসলাম বলেন, বিষয়টি পল্লী বিদ্যুতের। তবে এলাকার মওসুমের বড় ফসল বোর ধান চাষে বিগ্ন ঘটছে। বিষয়টি নিয়ে তিনি খুব তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা গ্রহণে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ নিবেন বলে জানান।
এদিকে অফিসে ঘাপটি মেরে থাকা কিছু অসৎ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক দুর্নীতি, ঘুষ বাণিজ্যের একাধিক অভিযোগ পল্লী বিদ্যুতের সংশ্লিষ্ট বিভাগসহ বিভিন্ন দফতরে থাকলেও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না এলাকাবাসী। এতে কতিপয় অসৎ ব্যক্তিদের দ্বারা লাঞ্ছিত হচ্ছেন ও অফিসের প্রগতিশীল সৎ অফিসারা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে বলে ভুক্তভোগী মহল দাবি করেছেন। তাদের মতে, বাগমারা জোনাল কার্যালয়ের স্বেচ্ছাচারিতার মধ্যে রয়েছে, বিদ্যুৎ ইউনিটের বিপরীতে বিদ্যুতের বিল বেশি করে দেয়া, মিটার সংযোগ ছাড়াই লাইন সংযোগ দিয়ে অবৈধ বিল আদায়, মিটার ভাড়ার নামে প্রতি মাসে মাসে টাকা আদায়, অবৈধ পার্শ¦সংযোগ দেয়া, সেচ বিলে ব্যাপক কারসাজি করে বিল আদায়, নতুন সংযোগ ও মিটার প্রদানে দালালের মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা আদায়সহ প্রভৃতি দুর্নীতিতে বিদ্যুতে অফিসের কথিপয় কর্মকর্তা কর্মচারীরা রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়ে গেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বালানগর গ্রামের আব্দুস ছামাদ, গোপালপুর গ্রামের মাওলানা রেজাউর করিমসহ অনেকে জানান, মিটারে অগ্রিম দিন ধরে ফাও বিল করে টাকা নেয়ার প্রবণতা অফিস কর্তৃপক্ষের এখন মূল উদ্দেশ্য হয়ে পড়েছে। কোন কোন মিটার না দেখে মিটার রির্ডারা বিল করে গ্রাহকদের বিড়াম্বনা ফেলছেন বলে ভুক্তভোগীরা দাবি করেছেন।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বাগমারা জোনাল কার্যালয়ের ডেপুটি জেলারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) রেজাউল করিম জানান, সঞ্চালন লাইনে কিছু কিছু ত্রুটি থাকায় কাজ চলছে। ২/৩ দিন পর লাইনের ত্রুটি কেটে গেলে বিদ্যুৎ সমস্য দূর হবে বলে তিনি দাবি করেন। এছাড়া তিনি অফিসের অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা অস্বীকার করেছেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ