শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

তাইওয়ান বিলে যুক্তরাষ্ট্র সই করলে যুদ্ধ : চীন

২ মার্চ, রয়টার্স : স্বশাসিত দ্বীপরাষ্ট্র তাইওয়ানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সুসম্পর্ক তৈরি করলে চীন যুদ্ধে যেতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে চীনা রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র একটি বিল করেছে যার মাধ্যমে মার্কিন কর্মকর্তারা তাইওয়ান সফরে যেতে পারবেন। একইসঙ্গে তাইওয়ানের রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তারাও যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারবেন। 

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বাক্ষরের অপেক্ষায় থাকা বিলটি যেকোনও সময় আইনে পরিণত হতে পারে। এই আইন পাশ হলে দুই দেশের সম্পর্ক নতুন মোড় নেবে। এটাই ভালোভাবে নিচ্ছে না চীন।  তাইওয়ানকে ‘অখ- চীনের’ অংশ মনে করে বেইজিং। তবে কখনোই সামরিক শক্তি দিয়ে দ্বীপটি দখল করতে চায়নি। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম চায়না ডেইলিতে এক সম্পাদকীয়তে বলা হয়, বিলটি পাশ হলে তাইওয়ানের সার্বভৌমত্বে আঘাত আনবে চীন। ২০০৫ সালে তৈরি এক আইন উদ্ধৃত করে করে চায়না ডেইলি জানায়, যুক্তরাষ্ট্র বিলটি পাশ করলে বেইজিং সামরিক শক্তি ব্যবহার করবে।

আনুষ্ঠানিকভাবে তাইওয়ান ও চীন উভয়েই চীনকে নিজেদের দেশ বলে মনে করে। ফলে উভয় দেশেই একে অপরের ভূখ-ের মালিকানা দাবি করে। এতেই সমস্যার শুরু। যা কয়েক দশক ধরে যুদ্ধের হুমকি সৃষ্টি করেছে। এ বিরোধের সূত্রপাত শুরু হয় ১৯২৭ সালে। যখন চীনজুড়ে গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে। মাও জে দংয়ের নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট বিপ্লবীরা ১৯৪৯ সালে জাতীয়তাবাদী সরকারকে উৎখাতের মধ্য দিয়ে এ গৃহযুদ্ধের অবসান হয়। ওই সময় জাতীয়তাবাদী নেতারা পালিয়ে তাইওয়ান যান। এখনও ওই শক্তিই তাইওয়ান নিয়ন্ত্রণ করে। প্রাথমিকভাবে ওই সময় যুদ্ধ বন্ধ হয়ে পড়লেও উভয় দেশই নিজেদের চীনের দাবিদার হিসেবে উত্থাপন শুরু করে। তাইওয়ানভিত্তিক সরকার দাবি করে, চীন কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের দ্বারা অবৈধভাবে দখল হয়েছে। আর বেইজিংভিত্তিক চীনের সরকার তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্নতাকামী প্রদেশ হিসেবে বিবেচনা করে।

তবে তাইওয়ানের প্রতি মার্কিন সমর্থনে বরাবরই ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছে চীন। গত বছর চীনের আপত্তি উপেক্ষা করে তাইওয়ানের কাছে ১৪২ কোটি ডলারের সমরাস্ত্র বিক্রির প্রস্তুতি নেয় যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে বেইজিং।

২০১৬ সালের শুরুতে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন চীনের শত্রুতার মুখোমুখি হয়েছেন। তাইওয়ানকে ঘিরে এ সময় একাধিক সামরিক মহড়া আয়োজন করে চীন। বেইজিংয়ের আশংকা নিজেদেরকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দিতে পারে তাইওয়ান।

তাইওয়ানের সঙ্গে কোনও আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক নেই যুক্তরাষ্ট্রের। তবে অস্ত্রবিক্রিসহ কিছু চুক্তি রয়েছে যা চীনকে ক্ষুব্ধ করেছে। চীন সবসময়ই বলে আসছে তাইওয়ান ইস্যুই চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি সংবেদনশীল।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ