শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

ধামইরহাটে বাল্যবিবাহের কারণে দশম শ্রেণীর ছাত্রী অকালে ঝরে গেল

মো. মনিরুজ্জামান চৌধুরী: নওগাঁর ধামইরহাটে মেধাবী ছাত্রী রিপা সানজিতার রহস্যজনক মৃত্যু হল স্বামীর বাড়িতে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরন করলেও এখন থানায় ময়না তদন্তের রিপোর্ট পৌছেনি বলে রিপার পরিবার জানায়। স্বরজমিনে পরির্দশন করে জানা গেছে আগ্রাদ্বিগুন ইউনিয়নের হযরতপুর গ্রামের চার্জার চালক আব্দুর রাজ্জাকের ২য় কন্যা মেধাবী ছাত্রী রিপা সানজিতা অনেক বড় স্বপ্ন ও বুক ভরা আসা নিয়ে এলাকার সুনামধন্য মাহমুদপুর আজিজিয়া সিনিয়র ফালিজ মাদ্রাসায় লেখাপড়া শুরু করেন পিতার অভাবি সংসারে থেকেও রিপা একের পর এক ভালো ফলাফল করে চলছিল। হঠাৎ করে পার্শ্ববর্তী গ্রাম কাশিপুর এলাকার ধোন মোহাম্মদ এর পুত্র রেজাউল (৩৫) এর সাথে বিয়ের কথা ঠিক হয়। রিপার বাবা মা অবশেষে তাদের ২য় কন্যার সরকারি আইন অমান্য করে বাল্য বিয়ে দিয়ে দেয়। বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর রিপা হতাশায় ভেঙ্গে পরলেও ৬/৭ মাস কেটে দেয় স্বামীর বাড়িতে। তার পরেও স্বামীর থেকে মেধাবি ছাত্রী রিপা ২০১৮সালের দাখিল পরীক্ষায় তার নিজ এলাকার মাদ্রাসা থেকে অংশগ্রহন করে প্রতিটি পরীক্ষা ভালো দিয়ে আসছিল। তবুও রিপার বড় আশা ছিল স্বামীর বাড়ী থেকে লেখাপড়া শেষ করে ভালো একটা চাকুরী করা। ঘটনার দিন ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ সালে দাখিল পরীক্ষা শেষ হতে না হতে মেধাবী ছাত্রী রিপার জীবন প্রদীপ নিভে যায় তার স্বামীর বাড়িতে। এলাকাবাসী অভিযোগে জানায় কয়েকটি পরীক্ষা তার বাবার বাড়িথে দেয়, পরে তার বাবা মা তার মেয়েকে স্বামীর বাড়ীতে পাঠিয়ে দিলে রিপা তার স্বামীর বাড়ীতে পৌছিলে ২৬ ফেব্রুয়ারী রাত আনুমানিক ১০.৩০ মিনিটে গৃহবধু রিপার রহস্যজনক মৃত্যু ঘটে। তারা আরো জানায় এই নাবিলা মেয়ের রহস্যজনক মৃত্যুটি আত্মহত্যা না হত্যা এই বিষয়টি রহস্য জনক, যদি আত্মহত্যা হয়ে থাকে তাহলে এই আত্মহত্যা প্ররোচনার জন্য তার পরিবার দায়ী,  আর যদি হত্যা হয়ে থাকে তাহলে স্বামীর পরিবার দায়ী। বিষয়টি সঠিক তদন্তপূর্বক সঠিক বিচারের জন্য এলাকার শতশত নারী পুরুষ দাবী করেছেন। নিহত গৃহবধূর পিতা আবদুর রাজ্জাক অভিযোগে জানায় গত ২৬শে ফেব্রুয়ারী রাত ১১ টায় রিপার স্বামী রেজাউল ফোন করে আমার মেয়ের আত্মহত্যার কথা জানালে আমরা পরিবারের লোকজন ঐরাতে আমার জামাইয়ের বাড়ীতে গিয়ে রিপার লাশ তার রুমে শোয়া অবস্থায় দেখতে পাই। অনুসন্ধানে জানা গেছে নিহত গৃহবধুর রিপার মৃত্যু রহস্য খুজতে ধামইরহাট থানা পুলিশ গত ২৭ শে ফেব্রুয়ারী সকালে লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরন করে। নাবালিকার এই মৃত্যুকে স্বাভাবিক ভাবে মেনে নিতে পারেনি তার মাদ্রাসার শিক্ষক ছাত্র/ছাত্রী ও এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে ধামইরহাট থানার ওসি রকিবুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান বিষয়টি অতিগুরুত্বপূর্ণ ভাবে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে ধামইরহাট থানার পুলিশ পরির্দশক মোঃ সানোয়ার হোসেন জানায় নিহত গৃহবধু রিপা সানজিতা নিজ রুমে সেলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে, তার লাশটি তার স্বামী রেজাউল ওড়ান কেটে নিচে নামায়। তিনি আরো জানান গৃহবধূর তুতিতে কালো দাগ রয়েছে। এব্যাপারে ধামইরহাট থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে যার মামলা নং ০৩ তারিখ ২৭-০২-২০১৮ইং।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ