ওয়ালশকেই স্থায়ী প্রধান কোচ করার পক্ষে সুজন
স্পোর্টস রিপোর্টার : আমাদের সবই ঠিক ছিলো, ছিলো না শুধু একজন নেতা। যে কি না একটা সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে। ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারের পর এমনটাই বলেছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। আর এরপরই প্রধান কোচের দায়িত্ব দেওয়া হয় দলের পেস বোলিং কোচ ক্যারিবিয়ান কোর্টনি ওয়ালশকে। আর টনিকের মতোই কাজ করেছে এই সিদ্ধান্ত। নিদাহাস ট্রফিতে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ।
আর সেখানে ওয়ালশের কর্মকান্ড সামনে থেকেই দেখেই প্রশংসায় পঞ্চমুখ দলের ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন। সে অভিজ্ঞতা থেকেই এবার টাইগারদের নিয়মিত প্রধান কোচ হিসেবে তাকেই চাইছেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের পর ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারে কোণঠাসাই ছিল টাইগাররা।
টেস্ট টোয়েন্টিতো বটেই, নিজেদের শক্তির জায়গায় ওয়ানডেতেও হয়নি। আত্মবিশ্বাসের তলানিতে থাকা দলটি নিদাহাস ট্রফিতে কেমন করবে এটাই ছিলো আলোচনার বিষয়। তার উপর টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট। যে সংস্করণে তখনো প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারেনি টাইগাররা। অন্তবর্তীকালিন মূল কোচ হিসেবে ওয়ালশ, যে কি না বাংলাদেশকে দিয়েই কোচিং ক্যারিয়ার শুরু করেছেন। দেখার বিষয় ছিলো তিনিও কেমন করেন। তবে হতাশ করেননি। হতাশায় ডুবাননি তার শিষ্যরাও। স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাকে দুইবার হারিয়ে ফাইনাল খেলেছে টাইগার দল। এমনকি শিরোপার খুব কাছেও গিয়েছিলেন সাকিব আল হাসানরা। শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশের এই ঘুরে দাঁড়ানোতে দারুণ ভূমিকা ছিল কোচ ওয়ালশের, এমনটাই মনে করেন সুজন। তাই বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ হিসেবে খুব ভালো কাউকে না পেলে ওয়ালশকেই প্রধান কোচ হিসেবে চাইছেন তিনি, ‘আমি প্রেসক্রাইব করি তাকে (প্রধান কোচ) করা যায়।
তিনি দারুণ একজন মানুষ। তিনি খুব সৎ একজন মানুষও। দলকে শ্রীলঙ্কায় তিনি দারুণভাবে সমর্থন দিয়েছেন। উজ্জীবিত করেছেন। তার অভিজ্ঞতার তো কোন কথাই নাই, ৪০ বছর ক্রিকেটের সঙ্গে আছেন। তিনি দারুণ অভিজ্ঞ। বাবার মতো ফিগার। সবচেয়ে বড় কথা দলের সবাই তাকে খুব পছন্দ করে। সব মিলিয়ে আমার মনে শেষ সিরিজে তিনি দুর্দান্ত ছিলেন।’ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে টাইগারদের দায়িত্ব ছাড়ার পর থেকেই একজন উঁচু মানের প্রধান কোচ খুঁজছে বিসিবি। কিন্তু ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও মানসম্মত কাউকেই নিশ্চিত করতে পারেনি তারা। তবে বেশ কয়েকজনই টাইগারদের কোচ হতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলেই ক'দিন আগে জানিয়েছিলেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন। শ্রীলঙ্কা থেকে দেশে ফিরে তাদের সাক্ষাৎকার নিয়ে বোর্ড সভাপতি পাপন প্রধান কোচ নির্ধারণ করবেন বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। তবে দেখেশুনে ভালো একজন নেওয়ার কথাই বললেন সুজন। পছন্দে রাখলেন ওয়ালশকেও। কোচিং ক্যারিয়ার ছোট হলেও ওয়ালশের ক্রিকেট ক্যারিয়ার দারুণ ঈর্ষনীয়। ১৩২টি টেস্ট ম্যাচ খেলে ৫১৯টি উইকেট নিয়েছেন এ কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার। এক সময় তিনিই ছিলেন টেস্টে সর্বাধিক উইকেট শিকারি। ২০০০ সালে সেই রেকর্ড গড়ার পর চার বছর স্থায়ী ছিলো তা। পরে অস্ট্রেলিয়ান শেন ওয়ার্ন সে রেকর্ড ভাঙেন। তবে ক্রিকেট জীবনে ওয়ালশ যা করেছেন তা অবিস্মরণীয় হয়েই আছে। ক্রিকেট বিশ্বে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে ৫০০ উইকেট নিয়েছেন। ওয়ানডেতেও ২২৭টি উইকেট পেয়েছেন ২০৫ ম্যাচে। আর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার সাফল্য আরও বর্ণাঢ্য। ৪২৯ ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন ১৮০৭টি।