কবিতা
স্বাধীনতার গল্প
তাসলিমা কবির
মায়ের মুখেই প্রথম শুনি
স্বাধীনতার গল্প
শিউরে ওঠা অনেক কথার
মনে আছে অল্প।
শাখে শাখে ফুল ছিল না
ছিল লাশের গন্ধ
তন্দ্রাভোলা দু’চোখ যেন
সব হারিয়ে অন্ধ।
রক্ত স্রোতে অসাড় হলো
সবুজ কোমল দূর্বা
ঝলক দিয়ে ডাকলো হঠাৎ
উদয় আকাশ পূর্বা।
তিতুমীরের সিপাহীরা
করলো আবার যুদ্ধ
ধ্বংসকারী জন্তুরা সব
দুর্গে হলো রুদ্ধ।
স্বাধীনতা স্বাধীনতা
ছুটলো বাতাস গর্জে
প্রকম্পিত বুকে আবার
আসলো সাহস ধৈর্য্য।ে
শত ত্যাগের বিনিময়ে
মুক্ত হলো যে আকাশ
ভীনদেশীদের দৃষ্টি কেন
করছে ভারি সে বাতাস।
পরাধীন এক ছায়া যেন
ছাড়তে নাহি চায় পিছু
স্বাধীনতা তবে কি হায়
স্বপ্নে দেখা ভুল কিছু!
আনলো যারা নতুন বিজয়
জীবন করে তুচ্ছ
যুগে যুগে থাকবে হয়ে
দোলনচাঁপার গুচ্ছ।
সময় হলেই জাগবে ওরা
ওড়াতে বিজয় নিশান
লাল সুরুজের আবীর মেখে
রঙিন হবে কোন ঈশান।
স্বাধীনতার গল্প
মোহছেনা পারভীন
একাত্তরে নীলাকাশে
উড়তো জঙ্গী বিমান
বাবা বলতেন প্রত্যয় নিয়ে
রাখো মনে ঈমান।
দেশটা এবার স্বাধীন হবেই
নিশ্চিত জেনে নিও
সবুজের বুকে লাল পতাকা
উড়িয়ে তুমি দিও।
বুলেটে বুলেটে ঝাঁঝরা হলো
আমার বাবার বুক
কেঁদে কেঁদে অন্ধ হলো
মায়ের দু’টি চোখ।
যুদ্ধে গেল ভাইটি আমার
ফিরলো না আর ঘরে
হাসি মুখে রক্ত দিলো
জীবনটা ত্যাগ করে।
ঝলকানো এক স্বাধীন আলোয়
আঁধার হলো দূর
ঘরের কোণে উঁকি দিলো
একটি মিষ্টি ভোর।
নোলক পরে বোনটি আমার
বানায় নকশি কাঁথা
কাঁথার ভাঁজে লেখা আছে
রঙিন স্বপ্নগাথা।
হারিয়ে পিতা ভায়ের স্নেহ
এবং মায়ের আদর
বেঁচে আছি জড়িয়ে ধরে
স্বাধীনতার চাদর।
সব হারিয়ে শূন্য ভিটায়
একলা বসে আমি
আমার কাছে মুক্ত স্বদেশ
হীরার চেয়েও দামি।
কষ্টে পাওয়া স্বাধীনতা
রক্ষা করবো আজ
হটাও যত দুর্নীতি আর
সমস্ত চালবাজ।