শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

চীন যুক্তরাষ্ট্র পাল্টাপাল্টি কর আরোপ চলছেই

৬ এপ্রিল, নিউ ইয়র্ক টাইমস : বাণিজ্যযুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চাপানউতোর জারি রয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বৃহস্পতিবার চীন থেকে আমদানি করা ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়ার প্রতিক্রিয়ায় চীন জানিয়েছে তারা ‘যে কোনো মূল্যে’ এই লড়াই চালিয়ে যাবে।

চীন বুধবার সয়াবিন ও রাসায়নিক সামগ্রীসহ যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ বিলিয়ন ডলারের পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের একটি পরিকল্পনা তালিকা প্রকাশ করে। জবাবে ট্রাম্প বৃহস্পতিবার চীনা আমদানির ওপর নতুন খড়্গ বসিয়ে আগুনে আবার ঘি ঢালেন। তিনি চীন থেকে আমদানি করা ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। এর পাল্টা হিসেবে বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘চীন কোনো বাণিজ্য যুদ্ধ চায় না, তবে লড়াই করতে ভয়ও পায় না।’

চীনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যদি যুক্তরাষ্ট্র সুরক্ষানীতির জন্য এটি করে থাকে তবে চীন যে কোনো মূল্য এর জবাব দেবে।’ট্রাম্প বলেন, তিনি ‘চীনের ‘অন্যায় প্রতিশোধের’ জবাব দিচ্ছেন। ‘চীন তাঁর অসদাচরণের প্রতিকার না করে বরং আমাদের কৃষক ও নির্মাতাদের ক্ষতি করার পথ বেছে নিয়েছে।’ গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা যেসব পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করা হবে চীন তার তালিকা প্রকাশ করে। এতে দেখা যায় সয়াবিন, শূকরের মাংসসহ বিভিন্ন পণ্যের ওপর কর আরোপ করা হচ্ছে। হিসাব করে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের আনুমানিক ৫০ বিলিয়ন ডলারের পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক বসছে। এর আগে তারা ৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্যে শুল্ক আরোপ করে।

তবে ট্রাম্পের নতুন ঘোষণায় খুশি হতে পারছে না যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিনির্ভর অঙ্গরাজ্যগুলো। এসব এলাকার উৎপাদক, খুচরা ব্যবসায়ী ও রাজনীতিকরা ট্রাম্পের ঘোষণার তীব্র সমালোচনা করেছেন। 

নেব্রাস্কার সিনেটর বেন সাসে বলেছেন, ‘ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি খাতকে আগুনের মুখে পড়ার হুমকিতে ফেলেছেন। আশা করছি প্রেসিডেন্ট আবারও মনের ঝাল মেটানোর জন্য এসব বলছেন। তবে তাঁর কথা যদি অর্ধেকও সিরিয়াস হয় তাহলে তা হবে ভয়ংকর।’

তবে প্রেসিডেন্টের হুমকি একদম সঠিক ছিল বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইটহাইজার। তিনি বলেন, ‘প্রথম শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায় চীনের উচিত ছিল তাঁর আচরণ পরিবর্তন করা।’

চলতি মাসের শুরুতে বাণিজ্যযুদ্ধের শুরুটা করেন ট্রাম্প। তাঁর মতে, বাণিজ্যযুদ্ধ ‘ভালো’ এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রের ‘সহজ’ জয় হবে। প্রথমে ইস্পাতের ওপর ২৫ ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ১০ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট। লক্ষ্য দেশীয় শিল্পকে রক্ষা। ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশে এবং দেশের বাইরে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। যুক্তরাষ্ট্রে প্রধান ইস্পাত রপ্তানিকারক দেশ কানাডা এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থাও (ডব্লিউটি) সিদ্ধান্তটির সমালোচনা করে। এমনকি নিজ দল রিপাবলিকান সদস্যদেরও সমালোচনার মুখে পড়েন ট্রাম্প। পরে শক্ত অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এসে তিনি কানাডা ও মেক্সিকোকে বাদ দিয়ে ওই বাণিজ্যনীতি পাস করেন। ওই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় বেইজিং জানায়, ওয়ার্ল্ড ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে আইনি পদক্ষেপে যাবে তারা। এরপর আবার চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৬০ বিলিয়ন ডলার কর আরোপের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এরপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয় চীন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ