বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

ভূমিমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ‘ভূমি কুতুব’ গ্রেফতার ॥ জামিন নামঞ্জুর

স্টাফ রিপোর্টার : ভূমিমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা কুতুব উদ্দিন আহমেদকে দুর্নীতির এক মামলায় গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।

কমিশনের  উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য জানান, গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি বলেন, গুলশান এলাকায় ১০ কাঠা জমি অবৈধভাবে আত্মসাতের অভিযোগে ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কুতুব উদ্দিনের বিরুদ্ধে গতকালই একটি মামলা করা হয়। দুদকের উপ-পরিচালক মির্জা জাহিদুল আলম বাদী হয়ে গুলাশন থানায় ওই মামলা করেন জানিয়ে প্রণব বলেন, “ওই মামলায় কতুব উদ্দিনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।”

দুদক সূত্র বলছে, সরকারি জমি দখল ও অবৈধভাবে  অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গুলশান থানায় করা এক মামলায় কুতুব উদ্দীনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাজধানীর গুলশানে ১০ কাঠা জমি ভুয়া আম মোক্তার দেখিয়ে নিজের শ্বশুরের নামে হস্তান্তর করেন তিনি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মীর্জা জাহিদুল ইসলাম কুতুব উদ্দীনকে গ্রেফতার করেছেন।

জানা যায়, শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়া ইউনিয়নের ছয়গাঁও গ্রামের এক সাধারণ পরিবারের সন্তান কুতুব উদ্দীনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে হাজার কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ২০০১ সালে চার দলীয় জোট ক্ষমতায় আসার পর ভাগ্য পাল্টাতে থাকে কুতুব উদ্দীনের। ওই সময় ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রটোকল কর্মকর্তা কুতুব উদ্দীন জোট সরকারের ভূমি প্রতিমন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর সঙ্গে যোগসাজশে চেইনম্যানের ৩৩৬টি পদে নিয়োগের সময় প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ঘুষ আদায় করেন। এ সময় প্রত্যেক প্রার্থীর কাছ থেকে নেওয়া হয় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা করে। এরপর থেকে কুতুব উদ্দীন অন্যদের কাছে ‘ভূমি কুতুব’ হিসেবেই পরিচিত হতে থাকেন। অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকার সরকারি খাস জমি তিনি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দিয়েছেন। এ সব অভিযোগে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলেও তাকে গ্রেফতার করে দুদক। কিন্তু মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক নেতাদের ধরে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন এবং চাকরিতে যোগ দেন। তার বিরুদ্ধে ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি জমিকে খাস দেখিয়ে তা বন্দোবস্ত নেওয়া বাবদ সচিবালয়, ভূমি মন্ত্রণালয় ও ঢাকার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে কমপক্ষে এক কোটি পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেন হওয়ার সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। এর বাইরেও ঘুষ লেনদেন হওয়ার অভিযোগ আছে।

দুদক সূত্র বলছে, কুতুবের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। দুদকে তার মামলা রয়েছে একাধিক। যার প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পেয়েছে দুদক।

জামিন নামঞ্জুর

শ্বশুর ও আত্মীয়-স্বজনদের নামে সরকারি প্লট বরাদ্দ দেয়ার অভিযোগের মামলায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কুতুব উদ্দিন আহমেদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

গতকাল রোববার তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। অন্যদিকে তার আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম একেএম মঈনউদ্দিন সিদ্দিকী জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ