শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

কাশ্মীরে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সংঘাত সর্বোচ্চ পর্যায়ে

কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের দাবিতে র‌্যালি

১২ এপ্রিল, এএফপি : কাশ্মীরে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উভয় দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা বাড়ছে। গত ১৫ বছরের মধ্যে এখন তা সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছেছে। উভয় দেশের দেওয়া তথ্যে দেখা যায়, এরই মধ্যে শতাধিক মানুষ আহত বা নিহত হয়েছেন। এই সংকটের আশু কোনও সমাধান এখনও হাজির হয়নি।

২০০৩ সালে দক্ষিণ এশিয়ার এই পারমাণবিক শক্তির মধ্যে যুদ্ধবিরতির পর পাহাড়ী সীমান্ত অঞ্চলে শান্তি বিরাজ করছিল। উভয় দেশই কাশ্মীরের একাংশের নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। যদিও দুই দেশ কাশ্মীরের সম্পূর্ণ মালিকানা দাবি করে। সম্প্রতি সীমান্তে অনেকগুলো যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। এগুলো মর্টার শেল নিক্ষেপ, গোলাগুলি ও সংঘাত হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে। সীমান্ত রেখায় (এলওসি) সংঘাতের ঘটনা সবচেয়ে বেশি বেড়েছে।

উভয় দেশের কাছ থেকে সংঘাতের তথ্য সংগ্রহ করেছে এএফপি। দুই দেশের দেওয়া তথ্যে অনেক গরমিল রয়েছে। তবে উভয় দেশের দেওয়া তথ্যে এটা স্পষ্ট যে, গত দুই বছরের তুলনায় ২০১৮ সালের শুরুতে সংঘাতের সংখ্যা বেড়েছে অনেক বেশি।

ভারতের মতে, ২০১৫ সালে পাকিস্তানের চুক্তি লঙ্ঘনের ঘটনা ছিল ১৫২টি। যা ২০১৭ সালে বেড়ে হয় ৮৬০। আর ২০১৮ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসেই ঘটেছে ৩৫১টি চুক্তি লঙ্ঘনের ঘটনা।

পাকিস্তান আরও বেশি চুক্তি লঙ্ঘনের ঘটনা নথিবদ্ধ করেছে। দেশটির হিসেবে ভারত ২০১৭ সালে ১ হাজার ৯৭০ বার চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। আর ২০১৮ সালের মার্চ মাসের শুরু পর্যন্ত এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪১৫।

ইউনাইটেড স্টেটস ইনস্টিটিউট অব পিস-এর ২০১৭ সালের অস্ত্রবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন নিয়ে প্রতিবেদন তৈরিকারী হ্যাপিমন জ্যাকব জানান, এই সংখ্যা নিয়ে তার কোনও সন্দেহ নাই।

দিল্লিভিত্তিক এই পর্যবেক্ষক ভারত ও পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম অস্ত্রবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো পর্যালোচনা করে আসছেন। একই সঙ্গে তিনি উভয় পক্ষের সামরিক কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার ও সরেজমিন পরিদর্শন করছেন। তিনি বলেন, ইসলামাবাদের দেওয়া সংখ্যা বেশি কারণ ভারত পাকিস্তানের চেয়ে বেশি গুলি করছে। ভারত অংশে অনেক বেশি আগ্নেয়াস্ত্র, সেনা ও ফাঁড়ি রয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, ৫০ থেকে ১ লাখ পাকিস্তানি সেনার বিপরীতে ৫ লাখ ভারতীয় সেনা সীমান্তে অবস্থান করছে। অবশ্য উভয় দেশ সেনাদের নির্দিষ্ট সংখ্যা জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

সীমান্তে উভয় দেশের সংঘাত বৃদ্ধির ঘটনার সঙ্গে একাধিক বিষয় ও জটিল পরিস্থিতি জড়িত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। জ্যাকব উল্লেখ করেন, যখন ভারত-পাকিস্তান গঠনমূলক সংলাপে বসে তখন সংঘাতের সংখ্যা কমে আসে।

২০১৫ সালে বড়দিনে অকস্মাৎ সফরে পাকিস্তানে গিয়ে নওয়াজ শরিফের সঙ্গে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাক্ষাতে উভয় দেশের মধ্যে নতুন যুগের সূচনা হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে। যা থেকে চুক্তি লঙ্ঘনের ঘটনা বাড়তে থাকে। ‘ইটের বদলে পাটকেল’ নীতি উভয় দেশের মনোভাবের মধ্যে রয়েছে যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভারতীয় কর্মকর্তা বলেন, কেউ (চুক্তি লঙ্ঘনকারী) রক্ষা পাবে না।

কাশ্মীরে নিয়োজিত পাকিস্তানি সেনাদের কমান্ডার জেনারেল মুহাম্মদ আখতার খান বলেন, পুনরায় অপরপক্ষ যাতে চুক্তি লঙ্ঘন না করে সেজন্য আমরা জবাব দেই।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ