দিনাজপুরের চরকাই বন গবেষণা কেন্দ্রে প্রযুক্তির ছোঁয়া লাগেনি
এম রুহুল আমিন প্রধান, নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) : গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ ও বন মন্ত্রনালয়ের বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) বন ব্যবস্থাপনা শাখার ১১টি বিভাগের কার্যক্রমের মত পরিচালিত হয়ে আসছে বিরামপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের প্রান্নাতপুরে অবস্থিত উত্তর বঙ্গের সর্ববৃহত চরকাই বন গবেষণা কেন্দ্রটি। অত্র বন গবেষণা কেন্দ্রটিতে দেশের ১১টি বন বিভাগের মধ্যে সিলভিকালচারাল রির্সাস বিভাগের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এর প্রধান কার্যালয় চট্রগ্রাম জেলার ষোল শহরে। ১৯৬৮ ইং সালে দিনাজপুর জেলার তৎকালিন ফুলবাড়ী থানার অর্ন্তগত বর্তমানে জেলার বিরামপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের প্রান্নাতপুর এলাকায় চরকাই বন গবেষণা কেন্দ্রটির অবস্থান। ১৯১ একর জমির উপরে গবেষণার কাজে নির্মিত অত্র কেন্দ্রের বিশাল এলাকা থাকলেও কোন গবেষণার কাজ হয়না। অর্থাভাবে দিন দিন চরকাই বন গবেষণা কেন্দ্রটি যেন মূখথুবড়ে পড়ে গিয়ে বন গবেষণার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। প্রাপ্ত তথ্য সূত্রে জানা যায়,এটি একটি উত্তর বঙ্গের সর্ববৃহত বন গবেষণা কেন্দ্র হলেও এখানে গবেষনার কাজ তেমনটি হয়না। বন গবেষণান কাজে ব্যবহারিক আধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রয়োজনীয় কলাকৌশলী যতেষ্ঠ অভাব রয়েছে। এত বড় একটি গবেষণা কেন্দ্রে কর্মকর্তাদের জন্য বরাদ্ব কৃত মাত্র ৩টি কক্ষ বিশিষ্ঠ অফিস রুম। সেই কক্ষ ৩টিতে দীর্ঘদিন ধরে জব্দকৃত কাঠ ভর্তি ছিল। কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য বরাদ্ব ৩টি কোয়াটার থাকলেও সংস্কারের অভাবে সেগুলোও বসবাসের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। বনগবেষণা কেন্দ্রটির নেই কোন সীমানা প্রাচির। ৫০ বছর ধরে সীমানা প্রাচির নির্মানের জন্য তৈরীকরা আরসিসি পিলারগুলো মাটিতে পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে গেছে। অর্থাভাবে সীমানা প্রাচিরের নির্মান কাজ হয়ে উঠছেনা। ইতিমধ্যেই গবেষণা কেন্দ্রের ২২ একর জমিতে নতুন করে গাছ লাগানো হয়েছে। অর্থাভাবে গবেষণা কেন্দ্রের এখোনো অনেক জমি ফাঁকা পড়ে রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অত্র কেন্দ্রের স্টেশন কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম (এফআই) এ প্রতিনিধিকে জানান,আমি ১৪ আগষ্ট ২০১৪ ইং সালে যোগদানের পর অত্র চরকাই বন গবেষণা কেন্দ্রের অফিস রুমের জদ্বকৃত কাঠ পরিস্কার করে অফিসের পরিবেশ রক্ষা করেছি। সিলভিকালচারাল রির্সাস বিভাগের ১৯১.১৫ একই জমির সীমানা রক্ষাসহ বনের গাছ চুরি কঠোর ভাবে দমন করেছি। বনের ৪ হেক্টর জমিতে নতুন চারা লাগানোর প্রস্তুতি গ্রহন করেছি। বিলুপ্তি প্রায় ফলজ ও দেশীয় বনজ জাতীয় বৃক্ষ অত্র বনে রয়েছে। জনবল বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার স্টাফ সর্ব মোট ৮ জন রয়েছে। এখানে (ফিল্ড ইনভেষ্টিগেটর ) স্টেশন কর্মকর্তা, ডিপুটি রেঞ্জার, ফরেষ্টার, ফরেষ্ট গার্ড, বোর্টম্যান, সীড কালেক্টর ২ জন ও নার্সারী পরিচর্যাকারী রয়েছে। এখানকার স্টাফ কোয়াটার বলতে স্টেশন কোয়াটার একটি, রেঞ্জ কোয়াটান একটি ও তিন রুম বিশিষ্ঠ একটি গার্ড ব্যারাক রয়েছে। সীমানা প্রাচিরের জন্য অর্থ বরাদ্ব চেয়ে উর্দ্ধনত কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিবেদন দাখিল করেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন। বন গবেষণা কেন্দ্রের অফিসের উত্তর পার্শ্বে মাত্র কয়েকগজ দুরে রাস্তার পূর্ব ধারে কয়েক ঘন্টা আগে গাছ কাটা হয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বনগবেষণা কেন্দ্রের ফরেষ্টার তৌহিদুর রহমান তৌহিদ ও ডিপুটি রেঞ্জার অমরেন্দ্র নারায়ন সরকার জানান,অত্র বনগবেষণা কেন্দ্রের অধীন বনের বৃক্ষ চুরি রোধে সার্বক্ষনিক পাহারার ব্যবস্থা রয়েছে। এখন আর আগেরমত বনের গাছ চুরি হয়না বলেও তাঁরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। খানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলি জানান, চরকাই বন গবেষণা কেন্দ্রে পাহারার জন্য প্রয়োজনীয় জনবলের অভাব রয়েছে। গবেষণা কেন্দ্রের নিজেস্ব বনভূমির বৃক্ষ পাহারাদার না থাকাই বনে মুল্যবান কাঠ চুরি হয়ে যাওয়ায় দিন দিন বন উজাড় হয়ে যাচ্ছে।
বিরামপুরের চরকাই বন গবেষণা সিলভিকালচারাল রির্সাস কেন্দ্রের এতিহ্য বজায় রাখতে এলাকার সচেতন মহল প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ করে বন গবেষণার সকল সমস্যা সমাধান পূর্বক অনিয়ম, দূর্নীতি বন্দ করে বনভূমি সৃজন ও গবেষণার কাজ দ্রুত চালু করতে সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন।