খুলনায় পুলিশ ইসি এবং আ’লীগ এক টিমে খেলছে -রিজভী
স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেছেন, খূলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে ভোটার ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকলেও সরকারের অনাচারে এক ভয়ানক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তিনি বলেন, সেখানে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার, বাড়ীতে বাড়ীতে সাঁড়াশী অভিযান সব মিলিয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক তান্ডবের পাশাপাশি এখন আরও একটি মাত্রা যোগ হয়েছে, সেটি হলো সাদা পোশাকধারী পুলিশ প্রিজাইডিং অফিসারদেরকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। এ নিয়ে প্রিজাইডিং অফিসারদের মনে এক ধরনের সংশয় ও ভীতি বিরাজ করছে। গতকাল শনিবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে এমন অভিযোগ করেন রিজভী। এসময় তিনি নির্বাচনী এলাকায় ভীতিমুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে সেনা মোতায়েনের দাবি জানান।
রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর একজন আত্মীয় ও সরকার দলীয় এমপি দলবলসহ সপ্তাহের বেশী সময় ধরে খুলনায় অবস্থান নিয়ে বিএনপির প্রভাবশালী নেতাদেরও হুমকি ধামকি দিচ্ছে। প্রতিদিনই নাকি তিনি প্রশাসন, পুলিশসহ নানা শ্রেনীর মানুষদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করছেন।
ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের হাতে হাতে বিপুল পরিমাণ বৈধ ও অবৈধ অস্ত্র রয়েছে দাবি করে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, এখনও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়নি। অপরদিকে খুলনায় পুলিশ জনগণের প্রতিপক্ষ হিসেবে কাজ করছে। কেসিসি নির্বাচন নিয়ে কমিশনের ভূমিকা সন্দেহজনক। কারণ নির্বাচন নিয়ে সরকারী তান্ডবে ইসি উদাসীন। বরং সরকারী দল থেকে রিটার্নিং অফিসারের বিরুদ্ধে আপত্তি ওঠাতে কমিশন সেখানে একজন যুগ্ম সচিবকে পাঠিয়েছে অথচ ইসি সচিব বলছেন রিটার্নিং অফিসারের বিরুদ্ধে আ’লীগের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি, তাহলে যুগ্ম সচিবকে খুলনায় পাঠানো রিটার্নিং অফিসারের বিরুদ্ধে চাপ প্রয়োগ করা নয় কী ? ক্ষমতাসীনরদের অনুকুলে নির্বাচন রাখতেই এই ব্যবস্থা। মনে হচ্ছে-খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে পুলিশ, আওয়ামী সশস্ত্র ক্যাডার ও নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে একই টিমে খেলছে।
রিজভী অভিযোগ করেন খুলনার নির্বাচনী এলাকায় সাদা পোশাকধারীরা বিএনপি নেতা-কর্মীদের গণগ্রেফতারের পাশাপাশি দলীয় কর্মকান্ডে যারা বেশী সক্রিয়, যাদেরকে সম্ভাব্য নির্বাচনী এজেন্ট করা হতে পারে তাদেরকেও বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে ও গ্রেফতার করছে, যা সাদা পোশাকে গ্রেফতার না করা সংক্রান্ত সর্বোচ্চ আদালতের দেয়া পনেরটি নির্দেশনার সুষ্পষ্ট লংঘন।
খুলনায় সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ তৈরিসহ কেএমপি কমিশনারকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে
রিজভী আরও বলেন, নির্বাচনী এলাকায় ভোটারদের ভীতিমুক্ত পরিবেশ তৈরির জন্য নির্বাচনের আবারও সেনা মোতায়েনের জোর দাবি জানাচ্ছি।
রিজভী নাটোর জেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি ও নাটোর সরকারী বিশ^বিদ্যালয় কলেজের ভিপি সানোয়ার হোসেন তুষার, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক রাশেদ আহমেদ রনি এবং সদর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক জুয়েল রানাকে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জুয়েল রানাকে গ্রেফতারের পর পুলিশ তার ওপর ব্যাপক নির্যাতন চালিয়েছে। এছড়া সাতক্ষীরা জেলাধীন তালা সদর থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি, থানা ছাত্রদল সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান, বিএনপি সদস্য আশরাফুল আলম লিটনকে খুলনার একটি হোটেলের সামনে থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি গ্রেফতারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে তাদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির জানান।