শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

মানুষের আস্থা অর্জনে সচেষ্ট থাকতে হবে পুলিশ বাহিনীকে

রাজশাহী অফিস : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষ বিপদের সময় পুলিশের কাছে সাহায্যের জন্য আসে। তাই সেবা ও মানবিক আচরণের মাধ্যমে মানুষের আস্থা অর্জনে সচেষ্ট থাকতে হবে। গতকাল বুধবার রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির ৩৫তম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচের শিক্ষানবীস সহকারী পুলিশ সুপারদের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতে চলা নবীন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দায়িত্ব পালনের সময় জনগণের অধিকার, মানবাধিকার ও আইনের শাসনকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। সমাজের নারী, শিশু ও প্রবীণদের প্রতি সংবেদনশীল আচরণ করতে হবে। এক বছরব্যাপী প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করায় নবীন কর্মকর্তাদের শুভেচ্ছা, অভিনন্দন ও আন্তরিক ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ পুলিশ সদস্যদের শ্রদ্ধা জানান তিনি। তিনি পুলিশবাহিনীর প্রশংসা করে বলেন, অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা, জননিরাপত্তা বিধান, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, সন্ত্রাস ও অপরাধ দমন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখার পাশাপাশি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ বজায় রাখতে পুলিশ সদস্যরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের পুলিশ জাতিসংঘে শান্তিরক্ষা মিশনে দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের জন্য বহির্বিশ্বে প্রশংসা অর্জন করেছে। পুলিশবাহিনীকে নতুন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, প্রযুক্তির উন্নয়নের পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী অপরাধের ধরণ দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে। বিশেষ করে সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে দক্ষ হতে হবে। মাদক সেবনকারী, সরবরাহকারী, মাদক ব্যবসায়ী বা উৎপাদনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। জঙ্গি দমনে পুলিশ যেমন সফল হয়েছে, তেমনি মাদক নির্মূলেও পুলিশ সফল হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন জাতি হিসেবে বাঙালি জাতি গড়ে তুলতে চাই। সেই লক্ষ্য নিয়েই সবাইকে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে। প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীসহ পুলিশের বিভিন্ন পর্যয়ের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
আত্মহত্যা
রাজশাহীতে এক তরুণী ও এক ব্রাদার নার্স আত্মহত্যা করেছেন। সাথী খাতুন (১৬) নামে ওই তরুণীকে চিকিৎসার জন্য রাজশাহীতে এনেছিলেন তার মা ও ভাই, তার বাড়ি ঝিনাইদহে। আর শফিকুল ইসলাম নামের ওই ব্রাদার নার্স রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন।
গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতি শফিকুল রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার মৌগাছি গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে। আর সাথী তিনতলা ভবন থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেন। সাথীর বাড়ি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার চান্দুয়ালি গ্রামে। তার বাবার নাম আবুল বাশার। নগরীর রাজপাড়া থানার পুলিশ জানায়, শফিকুল ইসলাম নগরীর বহরমপুর এলাকায় স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। বুধবার দুপুরে তিনি শয়নকক্ষে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। খবর পেয়ে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। দাম্পত্য কলহের জের ধরে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। অন্যদিকে চর্মরোগে আক্রান্ত সাথীকে নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকার ‘মডেল হাসপাতাল’ নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এনেছিলেন তার মা ও ভাই। দুপুরে তারা হাসপাতালের তিনতলা ভবনের বারান্দায় দাঁড়িয়ে চিকিৎসকের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় সেখান থেকে লাফ দেন সাথী। এতে গুরুতর আহত হলে তাকে রামেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাথীকে মৃত ঘোষণা করেন।
শেখ হাসিনার স্বদেশ
প্রত্যাবর্তন দিবস আজ
স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৩৮তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ বৃহস্পতিবার। ১৯৮১ সালের ১৭ মে দীর্ঘ ছয় বছর নির্বাসন জীবন কাটিয়ে দেশের মাটিতে এসেছিলেন শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন দিবসটি পালন উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে নৃশংসতম হত্যাকান্ডে মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুর দু’কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকার কারণে সৌভাগ্যক্রমে ঘাতকের হাত থেকে রক্ষা পান। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর চরম  বৈরী পরিবেশের মুখে পড়ে আওয়ামী লীগ। কারাগারের অভ্যন্তরে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। অসংখ্য আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। ভাঙ্গনের মুখে পড়ে দলটি। আওয়ামী লীগের ঐক্য ধরে রাখার পাশাপাশি দলটির নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতে ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় কাউন্সিলে শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। সে সময় তিনি নির্বাসন জীবন কাটাচ্ছিলেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরেন শেখ হাসিনা। সেদিন রাজধানী ঢাকা মিছিলের শহরে পরিণত হয়। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ঢাকা শহর মিছিলে-স্লোগানে প্রকম্পিত হয়। প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টি লক্ষ লক্ষ মানুষের মিছিলকে গতিরোধ করতে পারেনি। কুর্মিটোলা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর ও শেরেবাংলা নগর পরিণত হয় জনসমুদ্রে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে এক নজর দেখতে সারা বাংলাদেশের মানুষের সেদিনের গন্তব্য ছিল রাজধানী ঢাকা। স্বাধীনতার অমর স্লোগান, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু ধ্বনিত প্রকম্পিত হয় বাংলার আকাশ-বাতাস। জনতার কণ্ঠে বজ্রনিনাদে ঘোষিত হয়েছিল ‘হাসিনা তোমায় কথা দিলাম-পিতা হত্যার বদলা নেব’। ‘শেখ হাসিনার আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নের দৃঢ় অঙ্গীকার, বঙ্গবন্ধু হত্যা ও জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার, স্বৈরতন্ত্রের চির অবসান ঘটিয়ে জনগণের হৃত গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, সার্বভৌম সংসদীয় পদ্ধতির শাসন ও সরকার প্রতিষ্ঠার শপথ নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধু হত্যার পর বাংলাদেশে ফিরে আসার দিন থেকে শেখ হাসিনার দীর্ঘ সংগ্রাম জীবন শুরু হয়। বাংলার মানুষের হারিয়ে যাওয়া অধিকার পুনরুদ্ধার করতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি বারবার স্বৈরাচারের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করেছেন তিনি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ