এদের দমন করুন
গ্যাংস্টারদের দৌরাত্ম্য কি থামার নয়? হঠাৎ করে আবার বেপরোয়া হয়ে উঠেছে রাজধানী ঢাকার গ্যাংস্টার। ঈদ সামনে রেখে পাড়ায়-মহল্লায় নিত্যনতুন গ্যাংয়ের জন্ম হচ্ছে। ওরা জড়াচ্ছে চাঁদাবাজিসহ নানা ধরনের অপরাধে। নামে-বেনামে অনেক গ্যাং বা চক্র গড়ে উঠেছে। এরা শুরুতে ফ্যাশন, ফ্যান্টাসিতে সীমাবদ্ধ থাকলেও একপর্যায়ে জড়িয়ে পড়ছে ভয়ংকর সব অপরাধে। বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তির ছত্রচ্ছায়ায় এসব কর্মকা-ে জড়াচ্ছে এরা। অনেকেই ব্যবহৃত হচ্ছে শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীদের হাতিয়ার হিসেবে। প্রতিনিয়ত ছিনতাই, চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে খুনখারাবি পর্যন্ত হচ্ছে এদের হাতে। রমযান শরু হতে না হতেই বাড়িওয়ালা, মার্কেটের ব্যবসায়ী, ফুটপাথের দোকানদার ও ইফতার বাজারের বিক্রেতাদের কাছে ঈদ বকসিসের নামে চিরকুট পাঠাতে শুরু করেছে গ্যাংস্টার গ্রুপের সদস্যরা।
২০ মে এ ব্যাপারে পত্রিকান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্যাংস্টারদের তৎপরতায় জনসাধারণ অতিষ্ঠ হলেও নির্বিকার আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। অভিযোগ রয়েছে ভ্যা-ভ্যা শব্দে মোটরসাইকেল রেস, সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্ব ছাড়াও এলাকায় নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে খুনখারাবি করতেও দ্বিধা করে না গ্যাংস্টার সদস্যরা। মাঝে কিছুদিন দমে গেলেও রমযানে বিভিন্ন এলাকায় বখে যাওয়া কিশোরদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে নগরবাসী। বিভিন্ন বাসাবাড়ির বাসিন্দাদের কাছে এরা ‘সাহরি পার্টি’ নামেও আবির্ভূত হচ্ছে। ভয়ংকর এসব কিশোরের ভয়ে অনেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অভিযোগ দেওয়ার সাহস পাচ্ছে না। ফলে নানা শ্রেণির পেশার মানুষের মধ্যে বেড়েছে উদ্বেগ। আর নেপথ্যে থেকে গ্যাংস্টারদের মদদ দিচ্ছেন মহল্লার কোন কোন রাজনৈতিক বড় ভাই। যে কোনো অপকর্ম করতে এদের কোনো কুণ্ঠা নেই। হত্যাকা-ের মত নৃশংস ঘটনাও অবলীলায় ঘটাচ্ছে তারা।
এরা পাড়ায়-মহল্লায় দল বেঁধে চলাফেরা করে। স্কুল-কলেজের মেয়েদের দেখলেই মেতে ওঠে ইভটিজিং-এ। রাজধানীর উত্তরা, তেজগাঁও, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, আদাবর, পুরাতন ঢাকা, মতিঝিল, কাকরাইল, মগবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে এদের বিচরণ। এদের মধ্যে রয়েছে ধনাঢ্য পরিবারের সন্তানও। এলাকাবাসীর অভিযোগ র্যাব-পুলিশের বিশেষ নজরদারি না থাকায় বখে যাওয়া কিশোররা বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। আমরা মনে করি, আলোচ্য ক্ষেত্রে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষের বিশেষ নজরদারি প্রয়োজন। কারণ দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন তো তাদের কতর্ব্যরে মধ্যে পড়ে।