শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

বিরোধী কণ্ঠকে স্তব্ধ করতেই আবারও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড -খন্দকার মোশাররফ

গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন -সংগ্রাম

স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, সরকার আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জনগণকে আতঙ্কের মধ্যে রাখতে চায়। বিরোধী কণ্ঠকে স্তব্ধ করতে আবারও অন্যায়ভাবে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে সরকার।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের ৩৭তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে ‘স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে শহীদ জিয়াউর রহমানের আদর্শই আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট শিরিন সুলতানা, মিজানুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা দলের সম্পাদক সাদেক হোসেন খান প্রমুখ।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার মাদক বিরোধী অভিযানের নামে বিচারবহির্ভূতভাবে মানুষ হত্যা করছে। দেশে কি কোনো আইন নেই? যদি কেউ মাদক ব্যবসায়ী হয়, যদি কেউ মাদক ব্যবহারকারী হয়, অন্যায়কারী হয় তাহলে এদেশে বিচারের ব্যবস্থা আছে। আইন আছে। আমাদের সংবিধান আছে। অপরাধীদের গ্রেফতার করে তাদের বিচার করা হোক। আমরা বিচার চাই। কোনো সভ্য দেশে বিচারবহির্ভূূত হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ নিরাপদে নেই। কথায় কথায় ক্রসফায়ার দেওয়া হচ্ছে। গুম, খুন চলছে। মাদকবিরোধী অভিযানের নামে হঠাৎ বিচার বহির্ভূত হত্যা শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে বিরোধীদের দমনের সুদূর প্রসারি লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে চায় সরকার। বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড দিয়ে মাদক নির্মূল হবে না। এ দেশে আইন আছে। আইনের অধীনে বিচার করা য়ায়। ইদানিং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। একদিনে ১১ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড। কেন করা হচ্ছে? সরকার এর আগে শুধু বিরোধী কণ্ঠকে স্তব্ধ করতে জঙ্গি বিরোধী অভিযানের নামে এ ধরনের কিছু কর্মকাণ্ড করেছিল।
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, বর্তমান সরকার এদেশে মাদক বিস্তার লাভে সাহায্য করেছে? আমাদের দেশে তো এই ইয়াবা, ফেনসিডিল কোথাও তৈরি হয় না। কোনো কারখানাও নেই। এটা কোথা থেকে আসে? বাইরে থেকে আসে। আজকে আপনাদের এমপি-মন্ত্রী থেকে শুরু করে যাকে সারা বাংলাদেশ জানে মাদকের সম্রাট। যেই রাস্তা দিয়ে, যেই বর্ডার দিয়ে এই মাদক বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি প্রবেশ করে প্রথমে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। আজকে পত্রিকায় দেখছি, মাদকের যারা মূল নায়ক তাদের নাম আপনারা জানেন। তাহলে আপনারা প্রকাশ করুণ জনগণের কাছে। যদি এটা প্রকাশ করেন তাহলে তারা সবাই আপনাদেরই নেতা বা কর্মী হবে। এজন্য তাদের নাম আপনারা প্রকাশ করবেন না। একটা প্রলেপ দেয়ার জন্য আজকে কিছু লোককে হত্যা করে তারা দেখাতে চায়। উদ্দেশ্য আগামী নির্বাচনে জনগণকে আতঙ্কিত করা। আপনারা জানেন খুলনায় কি করেছে? যেভাবে আমাদের কর্মীদের গ্রেফতার করে আতঙ্কিত করেছে। ভোটের আগের রাতে আওয়ামী লীগের গুন্ডাদের দিয়ে আমাদের এজেন্টদের হত্যার হুমকি দিয়েছে। যদি তারা সেন্টারে যায় তাহলে তাদের হত্যা করার হুমকি দিয়েছে।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘বিএনপি, খালেদা জিয়া ও জনগণকে বাইরে রেখে নির্বাচন করাই সরকারের টার্গেট। সব কিছু উপেক্ষা করে যদি সরকার আবারও ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মত নির্বাচন করতে চায় তাহলে জনগণ তাদের রাস্তার সামনে এসে দাঁড়াবে। জনগণ এমনভাবে দাঁড়াবে যে আমরা বিএনপি জনগণের রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা তাদের সঙ্গে থাকব।
তিনি বলেন, বিএনপি বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা। আর আওয়ামী লীগ একদলীয় সরকারের প্রতিষ্ঠাতা। এ জন্য সরকার বিএনপি ও জনগণকে ভয় পায়। কেননা আওয়ামী লীগ যেখানে ব্যর্থ হয়েছে সেখানে বিএনপি সেখানে সফল। জাতীয়তাবাদের কথা শুনলে আওয়ামী লীগের অন্তরাত্মা কেপে ওঠে। এখন আমাদের স্বৈরাচারের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে। তা করতে হলে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। তাকে মুক্ত করে তবেই আমরা একটি নির্বাচন করবো এবং সে নির্বাচনে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি বিজয়ী হয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবো। সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভ এখন অগ্নিস্ফুলিঙ্গের ন্যায়। এখন শুধু বিষ্ফোরণ হতে বাকি। নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করেই আগমী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ