কথিত বন্দুক যুদ্ধে নিহত আরো ৭ জন
সংগ্রাম অনলাইন ডেস্ক:
মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে আজ বুধবার সকালের মধ্যে ৬ জেলায় মাদক বিরোধী কথিত বন্দুকযুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে আরও অন্তত ৭ জন নিহত হয়েছে।জেলা গুলো হলো কুমিল্লা, জামালপুর, রংপুর, ফেনী, কুষ্টিয়া এবং গাইবান্ধা।এদের মধ্য কুষ্টিয়ায় ২ জন এবং বাকি জেলা গুলোতে ১জন করে নিহত হয়।
পুলিশ ও র্যাবের দাবি, নিহতরা সবাই মাদক চোরাকারবারে জড়িত ছিল। কারও কারও বিরুদ্ধে থানায় মাদক আইনে একাধিক মামলাও রয়েছে।
গণমাধ্যমের হিসাব অনুসারে গত ১২ মে থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত কথিত বন্দুক যুদ্ধে ৪৭ জন নিহত হলো।
কুমিল্লা সদর উপজেলার গুমতি বাঁধ এলাকায় পুলিশের সাথে কথিত বন্দুক যুদ্ধে নূরুল আবসার ইশা নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে।কতোয়ালি মডেল থানার ওসি আবু সালাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নূরুল আবসারকে মঙ্গলবার গ্রেফতার করার পর ভোর রাতে তাকে নিয়ে অভিযানে বের হলে নূরুলের সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ করে গুলি ছড়লে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এসময় সে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়।
তার বিরুদ্ধে মাদকের সাতটি মামলা রয়েছে।
রংপুরের হাজিরহাট ব্রীজের নিকটে পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে শাহীন (৪৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে।মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার সময় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শাহীন অভিরামপুরের সুকনচাকি গ্রামের সিরাজুল ইসলামের (ডাক নাম শহিদুর) ছেলে।
রংপুর পুলিশের এসি সাইফুর রহমান জানান, ঐ এলাকায় মাদক উদ্ধার করতে গেলে মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে পুলিশের বন্দুক যুদ্ধের ঘটনা ঘটে।এ সময় শাহীন নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়।এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল এবং ১২৯ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করা হয়।
জামালপুরে মাদকবিরোধী অভিযানে পুলিশের গুলিতে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে।
জামালপুর সদর থানার ওসি নাছিমুল ইসলাম বলছেন, মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে পৌর শহরের ছনকান্দা মাদ্রাসা ঘাটে পুলিশের সঙ্গে মাদক চোরাকারবারিদের গোলাগুলির মধ্যে ওই ব্যক্তি নিহত হয়।
ওসি বলছেন, এ অভিযানে তিনি নিজে এবং পরিদর্শক (তদন্ত) রাশেদুল হাসান, এসঅঅই সিরাজুল ইসলাম ও কনস্টবল ফারুক আহাত হয়ে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আজ ভোরের দিকে গাইবান্ধা জেলায় রাজু মিয়া নামে একজন তালিকাভুক্ত মাদক চোরাকারবারি পুলিশের সাথে কথিত বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়েছে।সে পলাশবাড়ী উপজেলার রাইগ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে।উপজেলার বিশ্রামগাছি গ্রামে এই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
কুষ্টিয়ায় ফটিক ইলিয়াস গাফ্ফার (৩৭) এবং লিটন শেখ নামে দুই ব্যক্তি বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়েছে।
পুলিশের দাবী ইলিয়াস একজন মাদক চোরা কারবারি।সে কুষ্টিয়া জেলা শহরের লাহিনী পাড়ায় বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়।
কুষ্টিয়া কুমারখালি থানার ওসি আব্দুল খালেক জানান, লাহিনী পাড়ায় মাদক ব্যবসায়ীরা একত্রিত হচ্ছে গোপন সূত্রে এমন খবর পাওয়ার পর পুলিশ তাদের গ্রেফতার করতে গেলে বন্দুক যুদ্ধ শুরু হয়।এ সময় ইলিয়াস নিহত হয়।এ সময় ৫ পুলিশ আহত হয় বলেও তিনি দাবী করেন।
ঘটনাস্থল থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি, ৭শ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট এবং আধা কেজি গাজা উদ্ধার করা হয় বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
এদিকে কুষ্টিয়ার ভেরামারা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, আজ ভোরের দিকে ভেরামারা উপজেলার হাওয়াখালি ইটখোলার নিকটে পুলিশের সাথে বন্দুক যু্দ্ধে লিটন শেখ নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। সে নৌডা পাড়ার গোলবার শেখের ছেলে।
এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র, তিনটি গুলি, ৫শ ইয়াবা ট্যাবলেট ও কিছু হেরোইন উদ্ধার করা হয়।
ফেনীতে মঙ্গলবার রাতে র্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে আরও একজন নিহত হয়েছে।
র্যাব-৭ ফেনী ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লিডার শাফায়াত জামিল ফাহিম বলছেন, মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে ফেনী শহরের দাউদপুর এলাকায় গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে।
নিহত মোহাম্মদ ফারুক (৩৫) চট্টগ্রামের চন্দনাইশ এলাকার অলি আহম্মেদের ছেলে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদক আইনের একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
শাফায়াত জামিল বলেন, চট্টগ্রাম থেকে মাদকের চালান ঢাকা যাওয়ার খবরে ফেনীর দাউদপুর কাঁচা বাজার এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম পুরাতন মহাসড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে রাতে তল্লাশি করছিলেন র্যাব সদস্যরা।
“এ সময় একটি প্রাইভেটকারকে থামার ইংগিত দেওয়া হলে সেখান থেকে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি করে। র্যাবও আত্মরক্ষার জন্য পাল্টা গুলি চালায়। তাতে মাদক ব্যবসায়ী ফারুক গুলিবিদ্ধ হয়।”
পরে ফেনী সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফারুককে মৃত ঘোষণা করেন।
র্যাব বলছে, ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ান শুটার গান, পাঁচ রাউন্ড কার্তুজ ও ২২ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করেছে তারা। পাশাপাশি মাদক চোরাকারবারিদের ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটি জব্দ করা হয়েছে।