দৃষ্টিনন্দন খুলনা বিভাগের বৃহত্তম বায়তুন নূর মসজিদ
আব্দুর রাজ্জাক রানা : ইসলামের সৌন্দর্যবোধ ও সৌকর্যকে অনুসরণ করে নির্মিত খুলনার বায়তুন নূর মসজিদ কমপ্লেক্স। বর্তমানে এটি খুলনা বিভাগের সবচেয়ে বড় মসজিদ।
নব্বইয়ের দশকে সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে খুলনায় একটি দৃষ্টিনন্দন মসজিদ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। সে অনুযায়ী মহানগরীর নিউ মার্কেটের পাশে এ মসজিদটি নির্মাণ করেন সাবেক মেয়র এডভোকেট শেখ তৈয়্যেবুর রহমান। সেই থেকে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) মসজিদটির পরিচালনা করে আসছে।
১৯৯১ সালের ২৩ আগস্ট তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান মসজিদটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদটি খুলনার মুসলমানদের হৃদয়ে আলাদা জায়গা করে রয়েছে। দ্বিতল এ মসজিদে একসঙ্গে ১০ হাজার মানুষ নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদের ভেতরে রয়েছে নান্দনিক ঝাড়বাতি। মসজিদটির উত্তর-পশ্চিম কোণে রয়েছে সুউচ্চ একটি মিনার। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের আদলে হুবহু নির্মিত না হলেও অনেকে এ মসজিদকে খুলনার বায়তুল মোকাররম বলে আখ্যায়িত করেন।
মসজিদের পেশ ইমাম আব্দুল গফুর শেখ বলেন, বায়তুন নূর মসজিদটিকে খুলনার মানুষ বায়তুল মোকাররম মনে করেন। অসংখ্য মানুষ এ মসজিদ দেখতে আসেন ও নামাজ আদায় করেন।
বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বড় মসজিদ: অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদটিতে একসঙ্গে ১০ হাজার মানুষ নামাজ আদায় করতে পারেন। যার কারণে এটি খুলনা বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বড় ও আধুনিক মসজিদ। এ মসজিদে খুলনার দ্বিতীয় বৃহৎ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। মসজিদের নিচতলায় রয়েছে ১১৪ টি দোকান সম্বলিত মার্কেট। যা খুলনার অন্যতম অভিজাত মার্কেট। মসজিদের ব্যয় পরিচালনার জন্য ১১৪ টি দোকান ১৯৯৬ সালে ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া দেয়া হয়। এছাড়া বর্তমানে উত্তর দিকে আরও ৬ টি নতুন দোকান তৈরি করা হচ্ছে।
মসজিদ পরিচালনায় তিনটি কমিটি: কেসিসি কর্তৃক পরিচালিত এ মসজিদ পরিচালনার জন্য ১৯ সদস্যের নির্বাহী পরিষদ রয়েছে। এর সভাপতি মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান। এছাড়া দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা ও আয়বর্ধনের জন্য পৃথক দু’টি কমিটি রয়েছে। দুই কমিটির আহ্বায়ক কেসিসির ১৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ হাফিজুর রহমান হাফিজ।
ইসলামী দলগুলোর সভা-সমাবেশের কেন্দ্র: ইসলামী দলগুলো এখানে নিয়মিত সভা-সমাবেশ মাহফিলের আয়োজন করে থাকে। এ প্রসঙ্গে মসজিদের উত্তর গেটের সামনের আতর-টুপি-জায়নামাজ বিক্রেতা জিয়াউল ইসলাম বলেন, এ মসজিদকে কেন্দ্র করে ইসলামী দলগুলো এখানে সভা-সমাবেশ মাহফিলের আয়োজন করে থাকে।
মসজিদের খতিব ও ইমাম: মসজিদের বর্তমান খতিব মুফতি মাওলানা ইমরান উল্লাহ। এছাড়া মসজিদের পেশ ইমাম ও নায়েবে খতিব মওলানা আব্দুল গফুর শেখ।
পেশ ইমাম আব্দুল গফুর শেখ বলেন, মসজিদে বর্তমানে খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন নিয়ে মোট ১৭ জন মানুষ নিযুক্ত রয়েছেন।
মসজিদের নারীদের নামাজের স্থান: মসজিদের দ্বিতীয় তলার দক্ষিণ পাশে নারীদের জন্য নামাজ পড়ার পৃথক জায়গা রয়েছে। যেখানে জুমা, তারাবিসহ ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন নারীরা।
এ ব্যাপারে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি কেসিসি’র মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, এ মসজিদে একসঙ্গে ১০ হাজার মানুষ নামাজ আদায় করতে পারেন।
তিনি জানান, পদ্মার এপারে সবচেয়ে বড় মসজিদ বায়তুন নূর জামে মসজিদ। এ মসজিদের বিশেষত্ব হচ্ছে, এটি নগরীর নিউ মার্কেট এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় যেসব নারীরা মার্কেটে আসেন তাদের জন্য নামাজের স্থান রয়েছে। এছাড়া মসজিদে রয়েছে নিজস্ব লাইব্রেরী। যেখানে ধর্মীয় অনেক দুর্লভ বই রয়েছে।