শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

সরকার অসহনশীল ॥ কোন সমালোচনা বরদাস্ত করতে পারেনা -মওদুদ

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে সরকারি খরচে বিশাল গণসংবর্ধনার আয়োজন সম্পন্ন করা হয়, তাতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু আমাদেরকেও একইভাবে সমাবেশ করতে দিতে হবে। এবং আমরাও প্রমাণ করে দিব আওয়ামী লীগ থেকে বেশি লোক সমাগম করে। আমরা আশা করবো শনিবারের গণসংবর্ধনা থেকে তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ঘোষণা দেবেন।’ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বর্ণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদত্যাগ দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, ‘এর আগে ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হয়েছে। তখন গভর্নর ড. আতিউর রহমান পদত্যাগ করেছিলেন, তেমনি বর্তমান গভর্নরেরও পদত্যাগ করা উচিত। তাহলে তার সম্মান বাঁচবে।’
গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ পদত্যাগ দাবি করেন। জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক জোটের ৮ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা সালাম ওমর রুবেলের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহম্মদ রহমতউল্লাহ প্রমুখ।
 কোটা সংস্কার আন্দোলনে কোনও রাজনৈতিক দলের সম্পৃক্ততা নেই এমন দাবি করে মওদুদ আহমদ বলেন, ‘এই সরকার একটি অসহনশীল সরকার। এই সরকার কোনও ধরনের সমালোচনা বরদাস্ত করতে পারে না। এই কোটা আন্দোলনের সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক দল জড়িত না। কোনও রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠনও জড়িত না। এটা সম্পূর্ণভাবে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত একটি আন্দোলন। সরকার যতই চেষ্টা করুক, এটাকে ঠেকাতে পারবেনা। কারণ এই লাখ লাখ শিক্ষার্থীর আশা আকাঙ্খা হলো মেধার ভিত্তিতে চাকরিতে নিয়োগ পাওয়া।’
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে কোথাও বলা নেই কোটা সংস্কার করা যাবে না এমন দাবি করে মওদুদ আহমদ আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী গত ১১ এপ্রিল সংসদে দাঁড়িয়ে নিজেই বললেন কোটা বাতিল করে দিলাম। এখন আবার তিনি বলছেন কোটা পদ্ধতি থাকতে হবে। উনি সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়কে উদাহরণ হিসেবে দেখিয়ে বলছেন রায়ের বিরুদ্ধে যাওয়া যাবে না। কিন্তু আমি আপনাদের বলতে চাই প্রধানমন্ত্রীকে ঠিকভাবে জানানো হয়নি, যে সুপ্রিম কোর্টের এমন কোনও রায় নেই; যেখানে বলা আছে কোটা পদ্ধতি সংস্কার করা যাবে না। এই ধরনের কোনও রায় যদি দেখাতে বলা হয় পারবেন না তারা। এই রায়ের অজুহাত দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী যেই ওয়াদা দিয়েছিলেন তার থেকে সরে আসছেন। প্রধানমন্ত্রীকে ভুল বোঝানো হয়েছে, এমন কোনও রায় নেই।’ তিনি বলেন, ‘আমি আহ্বান জানাই আওয়ামী লীগের যে কোনো নেতাকে, তারা এটা দেখাক আদালতের রায়ে বলা হয়েছে কোটা পদ্ধতি সংস্কার করা যাবে না।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টের সোনা চুরি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভল্টের সোনা চুরি এই সরকারের অত্যন্ত একটি প্রকট দৃষ্টান্ত। এর আগে টাকা চুরি হয়েছে। আগের গভর্নর আতিউর রহমান নিজে দায়িত্ব নিয়ে পদত্যাগ করেছেন। বর্তমানেও দায় সরকারের এবং অবিলম্বে উচিত এই গভর্নরের পদত্যাগ করা। ‘তিনি যদি সেখানে থাকেন, তাহলে সুষ্ঠু তদন্ত সম্ভব হবে না। সরকারের তদন্ত সংস্থাগুলো বলছে, ভোল্টের সোনা তামা হয়ে গেছে। সরকার বলছে, এটা অংকের হেরফের। এটা হতে পারে? ৮০ থেকে থেকে ৭৯ হতে পারে, ৮০ থেকে ৪০! সুতরাং দেশের মানুষ কখনই এটা গ্রহণ করবে না’ বলেন মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, ‘এখন বাংলাদেশ ব্যাংক হয়ে গেছে সোনা চোর এবং টাকা চোরের। সব চেয়ে বড় ব্যাংকে এ অবস্থা হলে বাকি ব্যাংকগুলোতো আর টিকে থাকার কথা না।’

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ