শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন মেয়র নির্বাচন-২০১৮

রাজশাহী : সিটি মেয়র নির্বাচনে (বামে) বিএনপি ও (ডানে) আ’লীগের প্রচার সমাবেশ -সংগ্রাম

বিএনপি’র মেয়রপ্রার্থী
বুলবুলের নির্বাচনী
ইশতেহার প্রকাশ
রাজশাহী অফিস : আগামী ৩০ জুলাই রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেছে মহানগর বিএনপি। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে মেয়রপ্রার্থী ও নগর বিএনপি’র সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের উপস্থিতিতে ১৮ দফা সম্বলিত এই ইশতেহার প্রকাশ করা হয়।
এসময় বলা হয়, নির্বাচন কোন জুয়া, বাজি বা খেলা নয়। এলাকার মানুষের সমৃদ্ধি ও শান্তির সাথে সম্পর্কিত ব্যাপার। এক্ষেত্রে ভুল হলে সিদ্ধান্ত হবে আত্মঘাতি। খুলনা ও গাজীপুর মার্কা নির্বাচনে সঠিক গণরায় ও পছন্দের প্রতিনিধি পাওয়া সম্ভব নয়। দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে এ নির্বাচন অতীব গুরুত্বপূর্ণ। দেশ এখন একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এক দলীয় স্বৈরশাসনের জাতাকলে জনজীবন আজ নিষ্পেষিত। রাজশাহীবাসী এহেন অবস্থার বাইরে নয়। মুক্ত গণতান্ত্রিক পরিবেশে শ্বাস নেয়ার জন্য সকলে উদগ্রীব হয়ে আছে। এই প্রতিকূল অবস্থায় মহানগরবাসীর বিভিন্ন সমস্যার উন্নয়ন ও প্রত্যাশা পুরণের অঙ্গীকার এবং বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের গণতন্ত্র নস্যাতের নীল-নকশাকে প্রতিহত ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলনের অংশ হিসাবে আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে রাজশাহীর কৃতি সন্তান মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে মেয়র পদে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।
 এতে বলা হয়, আধুনিক রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের যাত্রা শুরু হয়েছিল দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সরকার ও সাবেক মেয়র রাজশাহীর গণমানুষের নেতা মিজানুর রহমান মিনুর হাত ধরে। পরবর্তীতে সেই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ব্যহত হয় ২০০৮ সালে দায়িত্বে আসা মেয়রের কার্যকালে। সেই সময়ে শান্তির শহর রাজশাহীর মানুষের সুখ-শান্তি তিরোহিত হয়ে সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত হয়। রাজশাহী মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পরবর্তী নির্বাচনে সদ্য সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করেন। অনেক প্রত্যাশা নিয়ে সৎ, নিষ্ঠাবান, ন্যায়পরায়ন, সদালাপী বুলবুলকে রাজশাহীবাসী মেয়র নির্বাচিত করেছিল। কিন্তু বর্তমান বিনাভোটের সরকার ও তার স্থানীয় দোসরদের ষড়যন্ত্রে তাঁকে প্রায় অর্ধেক সময়ই দায়িত্বের বাইরে অবস্থান করতে হয়। উপরন্তু সরকারের অসহযোগিতা কাক্সিক্ষত উন্নয়ন বাস্তবায়নে বাধার সৃষ্টি করে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মিথ্যা প্রচারণা দিয়ে জনগণের সামনে তাঁর ব্যর্থতাকে তুলে ধরার চেষ্টা করছে যা মোটেও সত্য নয়। বরং তা বর্তমান সরকার ও তার দোসরদের স্বৈরাচারী মনোভাবেরই পরিচায়ক। আমাদের প্রতিপক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচনসহ দেশের প্রতিটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান প্রায় ধ্বংস করে উন্নয়নের চাপাবাজি সামনে নিয়ে এসেছেন। ২০১৩ সনের জাতীয় নির্বাচনে বৈধ সরকারের উন্নয়ন ম্যাজিক কাজে লাগেনি। ৫ সিটিতেই লজ্জাজনকভাবে হেরেছে। বর্তমান ভোটবিহীন সরকারের মেয়াদ আর মাত্র ৫ মাস। সুষ্ঠু ভোট হলে অকল্পনীয় ব্যবধানে ধানের শীষ জিতবে। উন্নয়ন আমরা করবো। এহেন পরিস্থিতিতে গণতন্ত্র রক্ষা ও আধুনিক রাজশাহীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সৎ, নির্ভিক, আপোষহীন এবং জনগণের বন্ধু মেয়র পদপ্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে মেয়র পদে নির্বাচিত করা হলে রাজশাহী উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় ও জনকল্যাণে নি¤েœাক্ত পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ করা হবে বলে ইশতেহারে উল্লেখ করা হয়। এতে ১৮ দফার উল্লেখযোগ্য দিক হলো : রাজশাহী মহানগরবাসীর করের বোঝা লাঘব ও সহজসাধ্য করার জন্য উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে সরলীকরণ প্রক্রিয়ায় নূন্যতম কর নির্দ্ধারণ করা হবে। রাজশাহীতে চালু হওয়া গ্যাস সংযোগ কোন এক অদৃশ্য ষড়যন্ত্রে বন্ধ হয়ে যায়। এই সংযোগ পুনরায় চালু করার জন্য জনগণকে সাথে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে এবং তা আদায় করা হবে। নাগরিকদের মৌলিক অধিকার যেমন চিকিৎসা, বাসস্থান, শিক্ষা বিষয়ে ইতোপূর্বে গৃহীত প্রকল্পের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে যথাযথ উন্নয়ন করা হবে। শিক্ষার্থীগণ যাতে শুধু সনদধারী না হয়ে প্রকৃত অর্থে জ্ঞানী, দক্ষ ও মানবিক গুণের অধিকারী হয়ে দেশপ্রেমিক তথা সুনাগরিক হয়ে দেশের মুখ উজ্জ্বল করে সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় মোটিভেশন প্রোগ্রাম চালু করা হবে। একটি আধুনিক নগরীর উপযোগী রাস্তাঘাট তৈরী, ড্রেনেজ-ব্যবস্থা, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, সুপেয় পানির ব্যবস্থা করার কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে। শহরের যানজট নিরসনকল্পে ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়নে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব ট্রাফিক-কর্মী বাহিনী গড়ে তোলা হবে। যত্রতত্র গাড়ী পার্কিং এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বিভিন্ন মার্কেট এলাকায় বহুতল গাড়ী-পার্কিং তৈরী করা হবে।  বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য কারিগরী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, বিভিন্ন শিল্পকারখানা গড়ে তোলা এবং ক্ষুদ্র শিল্পে উৎসাহী করা হবে। বিশেষ করে রাজশাহী রেশম কারখানার পুনঃচালুসহ অন্যান্য প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। রাজশাহীকে মেগা সিটিতে রূপান্তরের লক্ষ্যে ভবিষ্যতে এর পরিধি আরও বৃদ্ধি করা হবে। সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন সকল মসজিদ, মাদ্রাসা, ইদ্্গাহ, গোরস্থান, মন্দির, মঠ, শশ্মান, গীর্জাসহ অন্যান্য উপাসনালয়ের সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্দ্ধন করা হবে।
 
রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের
লিটনের পক্ষে গাজীপুরের
মেয়রের গণসংযোগ
রাজশাহী অফিস : রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচনে আওয়ামী লীগের  মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের পক্ষে গণসংযোগ করেছেন গাজীপুরের সদ্য নির্বাচিত মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। সোমবার বিকেল ৬ টার দিকে নগরীর মনিচত্বর, জিরো পয়েন্ট ও গণকপাড়া এলাকায় এ গণসংযোগ করেন তিনি। এসময় উপস্থিত ছিলেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম লিটন, রাজশাহী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রোকনুজ্জামান রিন্টু প্রমুখ। এদিকে বিভিন্ন এলাকায় জনসংযোগকালে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, অপপ্রচার করা বিএনপির কেন্দ্রীয় অভ্যাস। কয়েকদিন আগে তারা নিজেরাই নিজেদের পথসভায় বোমা হামলা চালালো। এভাবে তারা ভোটারদের সহমর্মিতা অর্জনের চেষ্টা করেছিল। তাই মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে তারা ভোটারের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন। বিএনপি প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের নির্বাচন কমিশনে দেয়া অভিযোগ প্রসঙ্গে লিটন বলেন, নির্বাচনে পুলিশকে ব্যবহারের যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তার কেনো ভিত্তি নেই। কারণ, আওয়ামী লীগ জনগণের দল। বিএনপির জনপ্রিয়তা এখন তলানিতে। তাদের নিজেদের মধ্যেই প্রচুর বিভাজন, তাদের কাজের মধ্য দিয়েই তা প্রমাণিত হয়েছে। কোনো সমন্বয় নে, পোস্টার-লিফলেটও ঠিকমতো লাগাতে পারেনি কর্মী সংকটের কারণে। তারা নিজেদের মধ্যে গন্ডগোল করে, বোমাবাজি করে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ