বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

ক্লাসে ফিরে যাও ॥ তোমাদের সব দাবী মানা হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার : সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের পদক্ষেপ  নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে চার দিন ধরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে রাজধানী অচল হয়ে যাওয়ার  প্রেক্ষাপটে গতকাল বুধবার সচিবালয়ে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই আহ্বান আসে।
তিনি বলেন, “আমরা ছাত্রছাত্রীদের আহ্বান জানাব, তোমাদের যে সমবেদনা যে দুর্ভোগ- সারা দেশে এই মেসেজ পৌঁছে গেছে। আমরা অনুরোধ করব, তোমাদের দাবি সবই মানা হয়েছে। যারা অন্যায় করেছে, যারা ঘাতক, আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি যাতে তারা পায়, সেই ব্যবস্থা আমরা করছি।” “অভিভাবক, শিক্ষক যারা আছেন, তাদের বলছি, আপনারা আপনাদের ছেলে মেয়েদের, ছাত্রছাত্রীদের অনুরোধ করুন, তারা যেন ক্লাসরুমে ফিরে আসে।”
মন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে জনদুর্ভোগ তৈরি হচ্ছে, সারা শহর অচল হয়ে যাচ্ছে; এটা কারও কাম্য নয়। “আমাদের প্রিয় ছাত্রছাত্রী ভাইয়েরা অবরোধ তুলে নেবেন, এই অনুরোধ আমরা জানাচ্ছি।”
পরিবহন মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরকারের এই বৈঠকে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নৌমন্ত্রী শাজাহান খান এবং পরøী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা শাজাহান খান বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি। আর জাতীয় পার্টির নেতা রাঙ্গা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি। তাদের ‘মদদ’ পেয়েই পরিবহন শ্রমিকরা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে এবং দেশের মোট চালকের অর্ধেক লাইসেন্স ছাড়াই গাড়ি চালাচ্ছে বলে জনসাধারণের মধ্যে অভিযোগ রয়েছে। তবে তারা বরাবরই তা অস্বীকার করে এসেছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যে ‘কোমলমতি’ শিক্ষার্থীরা রাজপথে বিক্ষোভ করছে, তারাও ভাঙচুরের পক্ষে নয়। কিন্তু গত চার দিনে মোট ৩০৯টি গাড়ি ভাঙচুরের শিকার হয়েছে, আটটি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এজন্য ‘একটি স্বার্থান্বেষী মহলকে’ দায়ী করেন আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, “আমরা দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করব, সরকার ব্যবস্থা নেবে। পর্যায়ক্রমে আমরা সবগুলো ব্যবস্থা নেব। আমরা কোনোক্রমেই লাইসেন্সবিহীন, ফিটনেসবিহীন রুট পারমিটবিহীন যানবাহন চলতে দেব না।”
 রোববার জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাসের চাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর গত চার দিন ধরেই রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নয় দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ চালিয়ে আসছে। তাদের দাবিগুলো হল- ১. বেপোরোয়া চালককে ফাঁসি দিতে হবে এবং এই শাস্তি সংবিধানে সংযোজন করতে হবে। ২. নৌপরিবহনমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীদের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। ৩. শিক্ষার্থীদের চলাচলে এমইএস ফুটওভার ব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা নিতে হবে। ৪. প্রত্যেক সড়কের দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় স্পিড ব্রেকার দিতে হবে। ৫. সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্র-ছাত্রীদের দায়ভার সরকারকে নিতে হবে। ৬. শিক্ষার্থীরা বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে থামিয়ে তাদের বাসে তুলতে হবে। ৭. শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ৮. রাস্তায় ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল এবং লাইসেন্স ছাড়া চালকদের গাড়ি চালনা বন্ধ করতে হবে। ৯. বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া যাবে না।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ