রাজধানীতে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ সশস্ত্র যুবকদের যুগপৎ হামলা
* বসুন্ধরা আবাসিকে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, দিনভর উত্তেজনা, সংঘর্ষ
* ‘আমার ছাত্রদের হাতে লাঠি ছিল না’-ইস্ট-ওয়েস্টের চেয়ারম্যান
স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর শাহবাগ, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, রামপুরায় ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের সাথে দফায় দফায় পুলিশের ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশের সাথে বহিরাগত সশস্ত্র যুবকরা লাঠিসোটা, দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়ে বেধড়ক পেটায়। তারা এ সময় রামপুরায় ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে ভাংচুর চালায়। ওই প্রতিষ্ঠানটির প্রধান ফটক ভেঙ্গে ফেলে। এতে শিক্ষার্থীরা প্রতিরোধে এগিয়ে এলে পুলিশ ও যুবকরা যুগপৎভাবে ধাওয়া করে তাদেরকে ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়। তারা ভেতরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে থাকে ঘন্টার পর ঘন্টা। রাজধানীর তিনটি স্থানেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছে পুলিশসহ বেশ কয়েকজন। এছাড়া কয়েকজনকে বিভিন্ন স্থান থেকে আটক করেছে পুলিশ।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ,ছাত্রলীগ,যুবলীগসহ সরকারদলীয়রা রোববার প্রকাশ্যে হামলার ঘোষণা দিয়ে গতকাল সোমবার পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালায়। এই হামলার শিকার হয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তাদের ওপর হামলার বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের জানানো হলেও তারা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখেন। তাদের অভিযোগ,পুলিশের সামনে এবং সাথেই ছিল হামলাকারী যুবকেরা। পুলিশ তাদের প্রতিরোধ না করে উল্টো শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যায়।
বাসচাপায় দুই ছাত্র-ছাত্রী নিহতের প্রতিবাদে রাজধানী অচল করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে গত শনি ও রোববার ঢাকার ঝিগাতলায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ হয়। হেলমেট পড়ে ধারালো অস্ত্র হাতে একদল যুবককে সে সময় হামলায় অংশ নিতে দেখা যায়। এর প্রতিবাদে গতকাল সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনভর বিক্ষোভ মিছিল করে ছয় শতাধিক শিক্ষার্থী। এ ছাড়া রাজধানীর একাধিক স্থানে অবস্থান নেয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে দুর্বৃত্তের হামলা : রামপুরায় ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে গতকাল সোমবার সকালে দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। দুপুর পর্যন্ত এখনও সেখানে থেমে থেমে সংঘর্ষ চলেছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির জনসংযোগ কর্মকর্তা মহিউদ্দিন বলেন, ‘সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার দিকে বাইরের কিছু ছেলে হঠাৎ ক্যাম্পাসের গেটের বাইরে থেকে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের ধাওয়া করলে পালিয়ে যায়। এরপর ছাত্ররা বাইরে মিছিল করলে পুলিশ টিয়ারশেল ছোড়ে। পরে ছাত্ররা ভেতরে চলে অসে। পরে ক্যাম্পাসের ভেতরেই ছাত্ররা মিছিল করে। আইডি কার্ড ছাড়া কউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পুলিশ বাইরে অবস্থান করে।’
প্রত্যক্ষদর্শী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী আইনুন নাহার জ্যোতি বলেন, ‘সকাল থেকে ক্যাম্পাস শান্ত ছিল। রুটিন অনুযায়ী সব বিভাগে ক্লাস হচ্ছিল। সোয়া ১০টার দিকে ক্যাম্পাসে হঠাৎ ইটপাটকেল ছোড়া শুরু হয় এবং লাঠি দিয়ে গেটে আঘাত করে হামলাকারীরা।
সঙ্গে সঙ্গে নিরাপত্তা কর্মীরা গেট বন্ধ করে দেয়। এ ঘটনায় কয়েকজন ছাত্র আহত হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি তখন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থীর দাবি, হামলাকারীরা স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মী।
ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ভেতরে থাকা এক শিক্ষার্থী জানিয়েছে, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরেই অবস্থান করে মিছিল করছেন কিন্তু পুলিশ কিছুক্ষণ পরপর বাইরে থেকে টিয়াশেল মেরেছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট বন্ধ ছিল সে সময়। এ ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া দরকার কিন্তু সম্ভব হচ্ছিল না তখন।
বাড্ডা জোনের সহকারী কমিশনার আশরাফুল করির বলেন, এই ঘটনায় তিনজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে গুলশান পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শাহানুল, ভাটারা থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান, ও কনস্টেবল আব্দুর রউফ আহত হয়েছেন।
এই ঘটনায় অনেককে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে। গুলশান বিভাগের এডিসি আব্দুল আহাদ জানান, পুলিশের ওপর হামলা করার কারণে অনেককে আটক করা হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সংখ্যা বলা যাচ্ছে না। তাদের সবাইকে থানায় পাঠানো হয়েছে।
বিকাল ৫ টার দিকে পুলিশ সদস্যরা মাইকে শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা পুলিশের ওপর চড়াও হয়। তারা পুলিশ সদস্যদের ওপর তেড়ে আসতে থাকে। পরে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে তিন ছাত্রকে আটক করে পুলিশ।
এদিকে আহসান উল্লাহ ইউনিভার্সিটির ছাত্ররাও ক্যাম্পাসের ভেতরে অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে বলে জানা গেছে। ঘটনার পর থেকে ক্যাম্পাসের বাইরে পুলিশ অবস্থান করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় ইস্ট ওয়েস্টের সামনের সংঘর্ষ : নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের মধ্যে রামপুরা ও আফতাবনগরে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। বেলা পৌনে ১১টা থেকে এই সংঘর্ষের মধ্যে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন, হামলার শিকার হয়েছেন একজন সংবাদকর্মী। ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থান নিয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের সরাতে টিয়ার শেল ছুড়েছে পুলিশ।
ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান নিলে মেরুল বাড্ডার দিক থেকে একদল যুবক লাঠি নিয়ে তাদের ধাওয়া দেয়। লাঠি হাতে যুববকদের মধ্যে বেরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীদেরও দেখা যায় বলে স্থানীয় একজন বাসিন্দা জানান। এক পর্যায়ে ওই যুবকরা রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেয় এবং সাধারণ পথচারীদের ওপর চড়াও হয়। স্কুলের পোশাক পরিহিত দুজনকে এ সময় পেটাতে দেখেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এক পর্যায়ে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও এপিবিএন সদস্যরাও সেখানে অবস্থান নেন। তারা শিক্ষার্থীদের চলে যেতে বললে তারা না গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে টায়ার জ্বালিয়ে দেয়। পরে পুলিশ টিয়ার শেল ছুড়লে শিক্ষার্থীরা ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ভেতরে চলে যায়। লাঠি হাতে রাস্তায় অবস্থান নেওয়া যুবকরা তখনও ইউনিভার্সিটির দিকে ঢিল ছুড়ছিল। এ সময় সেখানে দায়িত্বরত প্রথম আলোর প্রতিবেদক নাসরিন আক্তার সুমির ওপর চড়াও হয় একদল যুবক। তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় তারা। পরে তাকে বাড্ডা পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে গিয়ে ফোনের সব তথ্য পুলিশ মুছে ফেলে বলে অভিযোগ করেন সুমি।
দুপুরে নিরাপদ সড়কের দাবিতে মিছিল নিয়ে ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা রামপুরা টিভি গেট এলাকা অবরোধ করলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে পুলিশের শিক্ষার্থীদের শান্ত করতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় তারা। পরে ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অবস্থান নেয়। সেখান থেকে ছাত্ররা মিছিল করলে বহিরাগতরা ইট নিক্ষেপ করে। পরে ছাত্ররাও ইট নিক্ষেপ করলে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে অবস্থান নেওয়াদের শান্ত করে। বহিরাগতদের হামলায় এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল গেটসহ ভেতরের গ্লাস ভেঙে যায়।
সৈকত নামে আহত এক ছাত্র বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছিলাম। হঠাৎ কয়েকশ ব্যক্তি এসে আমাদের ওপর হামলা করে। এ হামলায় ৫০ জন আহত হয়েছেন। আমরা ক্যাম্পাসের ভেতরে অবস্থান নিলে সেখানে পুলিশ আমাদের ওপর টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
বাড্ডা জোনের এডিসি আহম্মেদ হুমায়ন বলেন, ইস্ট-ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সঙ্গে বহিরাগতদের সঙ্গে সংর্ঘষ হয়েছে। এতে দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এখন পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক। ছাত্ররা বের হয়ে গেছে। বহিরাগতরাও চলে গেছে।
বসুন্ধরা আবাসিকে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, দিনভর উত্তেজনা, সংঘর্ষ : দুপুর আড়াইটার দিকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এরপর থেকে বসুন্ধরা এলাকার ভেতরে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যেই বসুন্ধরা গেটের ভেতরে আটকে পড়া লোকজন সতর্কতার সঙ্গে বের হয়ে আসছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ‘বসুন্ধরা গেটের বাইরে বিভিন্ন জায়গায় তারা অবস্থান নিয়েছিল যেন কোনও বিশৃঙ্খলা না হয়। পরে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা করা হয়। পরে হামলাকারীরা বসুন্ধরার গেটের ভেতরে ঢুকে পড়লে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়। তবে কারা হামলা করেছে তা তারা এখনও জানেন না।’ নথ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে গ্রামীনফোন অফিসের সামনের দিকে অগ্রসর হতে দেখা যায় পুলিশ সদস্যদের। টিযারসের নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে পুলিশ। তবে স্থানীয়দের ভাষ্য, নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির ছাত্ররা ছোট ছোট মিছিল নিয়ে প্রথমে একত্রিত হয়। পরে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার গ্রামীণফোন অফিসের সামনে থেকে তারা পুলিশের ওপর প্রথমে হামলা চালায়। পরে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির জনসংযোগ বিভাগের প্রধান বেলাল আহমেদ বলেন, 'পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা ছাড়াও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও রয়েছে। আমাদের শিক্ষার্থীদের আমরা বোঝানোর চেষ্টা করছি। তারা কারও কথা মানছে না। এই ঘটনার কারণে আমরা নিজেরাও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছি।'
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ও ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের (আইইউবি) কাছে গতকাল সকাল থেকে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ চলেছে। এই দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ঘিরে ও আবাসিক এলাকার ভেতরে দিনভর অন্তত ১২ বার পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া হয়। পুলিশ কয়েকশ টিয়ারশেল ছুড়েছে, রাবার বুলেটও ছুড়েছে অনেক। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, দিনভর সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। রাত ৮টার দিকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ও সাজোঁয়া যান এনে রাখা হয়।
বিকেলে আন্দোলনকারীরা যমুনা ফিউচার পার্কের পেছনের ফটকের কাছে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ঢোকার মুখ থেকে অ্যাপোলো হাসপাতালে যাওয়ার রাস্তায় ও বিভিন্ন গলিতে অবস্থান নিয়েছে। এদের সংখ্যা ৩০০ থেকে ৪০০এর মতো। শিক্ষার্থীদের মধ্যে আছেন ৪০ বা এর এর বেশি বয়সের কিছু ব্যক্তি। পুলিশ মাঝে মধ্যে গিয়ে সেখানে তাদের ধাওয়া দিলে এসব আন্দোলনকারীরা দৌড়ে বিভিন্ন গলিতে পালিয়ে যায়। আবার পুলিশ চলে এলে তারা ফিরে আসছে। হাতে লাঠি, রড এবং ধারালো অস্ত্র নিয়ে টহল দিচ্ছে আন্দোলনকারীরা। বিকেলে দুটি ক্যাম্পাসের ঢোকার গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বেলা চারটার দিকে পুলিশের দিকে আন্দোলনকারীরা ইট ও পাথর ছুড়ে মারে। পরে পুলিশ তাদের ওপর শতাধিক রাবার বুলেট ছোড়ে। এ সময় রাবার বুলেটের আঘাতে ১০ থেকে ১২ বছর বয়সী এক শিশু ও ১৫ বছর বয়সী একটি কিশোর আহত হয়। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এরা কেউ এখানকার কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র নয়। বসুন্ধরার পাশের বস্তিতে থাকে।
গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিলে আন্দোলন জোরদার করতে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সটি ও আইইউবির কিছু শিক্ষার্থীরা রামপুরায় ইস্টওয়েস্টের ক্যাম্পাসে যায়। সেখানে পুলিশের ধাওয়ার মুখে এসব শিক্ষার্থী আবার বসুন্ধরার ক্যাম্পাসে ফিরে আসে। তারপর থেকে বসুন্ধরা এলাকাতে অবস্থান নিয়েছে তারা। আড়াইটার দিকে পুলিশ এসব শিক্ষার্থীদের এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলে। তবে তারা এলাকা ছেড়ে যেতে রাজি হয়নি। এরপর পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সটি ও আইইউবির নিরাপত্তা বিভাগের কয়েকজন কর্মী জানান, নিরাপদ সড়কের প্রথম তিন দিন এখানে কেউ অবস্থান নেয়নি। গত বৃহস্পতিবারেই স্কুলের শিক্ষার্থীরা এখান থেকে চলে যায়। গত তিন দিন ধরে এই এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। গতকাল দুপুরের দিকে শিক্ষার্থীদের কয়েকজন অভিযোগ করেন, বসুন্ধরার ফটকে আজ পুলিশ যে শিক্ষার্থীর কাছে আইডি কার্ড পেয়েছে তাকেই পিটিয়েছে বা ধরে নিয়ে গেছে।
পুলিশের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গত তিন দিন ধরে একনাগাড়ে এই এলাকায় এসব লোক রয়েছে। আমাদের কাছে তথ্য আছে এখানে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা আশ্রয় নিয়েছে। পুরো এলাকা মানুষের বাসযোগ্য করে তোলার জন্যই আমরা কাজ করছি।
পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, দেশের একটি বৃহৎ হাসপাতাল এখানে। এ ছাড়া এই এলাকায় কূটনীতিকদেরও বসবাস। এখানে আসা রোগীদের অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত ধরে ধরে এরা চেক করছে। এই প্রতিবেদকও দেখেন, অ্যাপোলো হাসপাতালমুখী অনেক গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স আটকে সেসব চেক করে এসব আন্দোলনকারীরা। এ জন্য গাড়ির দীর্ঘ সারির সৃষ্টি হয়। এ ঘটনার সংবাদ সংগ্রহের জন্য সেখানে আসা গণমাধ্যম কর্মীরা পুলিশ এবং আন্দোলন কর্মী দুপক্ষের কাছেই হেনস্তার শিকার হন। আন্দোলনকারীরা রাস্তার বিভাজকগুলো উপড়ে রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেখেছে। এর ফলে এই এলাকায় যানবাহন চলতে পারছে না ঠিকমতো। এখন কার্যত চারদিক দিয়ে আন্দোলনকারীদের ঘিরে রেখেছে পুলিশ। সন্ধ্যায় আহতদের সন্ধানে অ্যাপোলো হাসপাতালে গেলে সেখানে কর্তব্যরত এক কর্মকর্তা বলেন, আহতদের সংখ্যা বলা যাচ্ছে না। কাল সকালে নিশ্চিত করে বলা যাবে।
শাহবাগে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ : এদিকে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শাহবাগে অবস্থান করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে ৷ বিকেল তিনটার দিকে শাহবাগে এ ঘটনা ঘটে ৷ পরে পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে ৷ একপর্যায়ে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর জলকামান ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে ৷ ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া দশজন আহত হয়েছেন বলে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী জানিয়েছেন৷ আটককৃতদের একজনের নাম হোসাইন ইশাদী মাহমুদ। অপরজনের নাম আশরাফুল হক ইশতিয়াক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র। এদিকে আন্দোলনকারীদের হাতে পুলিশের একজন কর্মী আহত হয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন,' আমরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শাহবাগে অবস্থান করতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। পরে তাদের সঙ্গে বাগবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে পুলিশ জলকামান ছোড়ে আমাদের দিকে। এর কিছুক্ষণ পর টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে ৷ তাদের ধাওয়া খেয়ে আমরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যাই৷’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, একদল শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যানার নিয়ে দুপুর থেকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় মিছিল করতে থাকে। এ সময় তারা মিছিল নিয়ে আজিমপুর পলাশীর মোড়ে যায়। সেখান থেকে ঘুরে আবার ক্যাম্পাসের ভেতর দিয়ে শাহবাগের দিকে যায়।
এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা জোনের ডিসি মারুফ হোসেন সরদার সাংবাদিকদের জানান, ‘শাহবাগ এলাকায় দুটি বড় বড় হাসপাতাল রয়েছে। আমরা সবসময় চেষ্টা করি এই জায়গায় যাতে কোনও প্রতিবন্ধকতা তৈরি না হয়। এই কয়েক দিন আপনারা দেখছেন আমরা নিশ্চুপ ছিলাম। আজকে সকাল থেকে আমরা এখানে আছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর থেকে একদল শিক্ষার্থী শাহবাগের দিকে আসে। আমরা তাদের বোঝানোর চেষ্টা করি। এরপর আমরা জলকামান ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেই। তারা ক্যাম্পাসে চলে গেছে। এ সময় আমাদের কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। কয় জনকে আটক করা হয়েছে এই মুহূর্তে তা সঠিকভাবে বলতে পারবো না।’
জানা গেছে, আহত পুলিশ সদস্যের নাম আব্দুর রব। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সড়কে আবারও অবস্থান করার সময় বৃষ্টি শুরু হয়৷ এরপর পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে সেখানে ধাওয়া দেয়। এ সময় কিছু শিক্ষার্থী একটি নির্মাণাধীন ভবনে ঢুকে পড়ে। তখন পুলিশ ওই ভবনটি ঘেরাও করে এবং তাদের আটকে ফেলে। ধরপাকড়ের সময় একটি ইট এসে ওই পুলিশ সদস্যের মুখে লাগে। ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা এখনও চলছে। শাহবাগ থানার ওসি আবুল হোসেন বলেন,' কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে ৷ কয়জনকে আটক করা হয়েছে তা আরও পরে বলা যাবে৷' শিক্ষার্থীদের দাবী,তারা বেলা ১২টায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদশ থেকে মিছিল শুরুর পর মধুর ক্যান্টিন, কলাভবন, কার্জন হল, বুয়েট ঘুরে টিএসসি হয়ে বিকাল ৩টার দিকে তারা শাহবাগের দিকে অগ্রসর হন। কিন্তু সেখানে অবস্থান নিয়ে থাকা পুলিশ সদস্যরা শিক্ষার্থীদের আটকে দিলে বাকবিতন্ডা এবং পরে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়৷পুলিশ তখন টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে শিক্ষার্থীরা ঢিল ছুড়তে শুরু করে। ইটের আঘাতে এক পুলিশ আহত হলে পুলিশ জলকামান থেকে পানি ছোড়া শুরু করে। এরপর শুরু হয় পুলিশের লাঠিপেটা। প্রায় ২০ মিনিটের এই ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে দুই আন্দোলনকারীকে আটক করে নিয়ে যেতে দেখা যায় পুলিশকে। এরপর পুলিশ চারুকলা অনুষদের সামনে অবস্থান নিলে শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে টিএসসিতে চলে যায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু রায়হান খান বলেন, "আমরা পুলিশকে বলেছিলাম, মিছিল নিয়ে শাহবাগ ঘুরে চলে আসব। কিন্তু তারা আমাদের বাধা দেয়। একপর্যায়ে তারা টিয়ার গ্যাস মারা শুরু করে।।"
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শতাধিক যুবক শাহবাগ মোড়ে এসে রাস্তা বন্ধ চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে তারা ইট ছোড়ে। পরে পুলিশ তাদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেয়।”বিক্ষোভকারীদের ইটের আঘাতে ইমানুল নাম নামে এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানান মারুফ।
‘আমার ছাত্রদের হাতে লাঠি ছিল না’ : আমার ছাত্রদের (ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি) হাতে কোনো লাঠি ছিল না। যারা হামলার সঙ্গে জড়িত তারা বহিরাগত। তবে হামলায় আমার কিছু ছাত্র আহত হয়েছে। গতকাল বিকেল সোয়া ৪টার দিকে কথাগুলো বলছিলেন ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাস উদ্দিন। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় একটা হট্টগোল সৃষ্টি হয়েছিল। এখন স্বাভাবিক আছে। ছাত্রদের নিরাপত্তার স্বার্থে আমি পুলিশের সহযেগিতায় সবাইকে বাইরে বের করে দিচ্ছি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লাসসহ কিছু ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা করবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
তেজগাঁও : তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে পুলিশের সঙ্গে আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের পর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আটকা পড়লে আতঙ্ক তৈরি হয়।
একজন শিক্ষার্থী বলেন, বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ছাত্রছাত্রীরা ক্যাম্পাসের বাইরে মিছিল বের করলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় পুলিশ ধাওয়া দিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। “ধাওয়ার মধ্যে শতাধিক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে আটকা পড়ে। অন্যরা যে যার মতো চলে যায়।”
আহসাউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব বিজনেস ফ্যাকাল্টির শিক্ষক কাজী আহমেদ ফারহান বলেন, তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে দিকে যাওয়ার সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীরা আমাদের বলছে, পুলিশের পিটুনিতে কয়েকজন আহত রয়েছে। পুলিশ তাদের কয়েকজনকে তুলেও নিয়ে গেছে।” তিনি জানান, সংঘর্ষের সময় ক্যাম্পাসে আটকা পড়া শিক্ষার্থীদের বের হওয়ার সময় পুলিশ কিছু শর্ত দেয়। শিক্ষার্থীরদের পরিচয় পত্রের ফটোকপি পুলিশের কাছে জমা দিয়ে তারপর তাদের বের হতে বলা হয়।
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, “তারা (শিক্ষার্থীরা) মিছিল করার নামে গাড়ি ভাংচুর করে এবং রাস্তায় চলাচলে বাধা দেয়। এতে পুলিশ বাধা দিলে তারা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। পরে তদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়।” তিনি বলেন, ক্যাম্পাসের ভেতরে যারা আছে তাদের বের হওয়ার সুযোগ দিলে হাঙ্গামা করবে। জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। তাদের একসাথে বের হতে দেয়া হবে না। তারা এক এক করে বের হবে এবং সংশ্লিষ্ট অভিভাবক দায়িত্ব নেবে।”
পরে পুলিশের নির্দেশনা অনুযায়ী আটকা পড়া শিক্ষার্থীরা জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের সহায়তায় পরিচয়পত্রের কপি জমা দিয়ে বিকালে একে একে ক্যাম্পাস ত্যাগ করে বলে মেকানিক্যাল অ্যান্ড প্রডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক সাদমান হাসান লাবির জানান।
মহাখালী : বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষের মধ্যে মহাখালীর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকেও শিক্ষার্থীদের বের হওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশ কড়াকড়ি আরোপ করে বলে আন্দোলনকারীরা জানান।
চতুর্থ বর্ষের একজন শিক্ষার্থী বলেন, সকাল ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থান নেয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মীরা এসে তাদের হুমকি দেয়। পরে পুলিশ এসে শিক্ষার্থীরা বাধা দেয়। বেলা ১২টার দিকে ক্যাম্পাসের সামনে দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তখন ছাত্রদেরকে একবারে তিন-চারজন করে ভাগ হয়ে বাসায় চলে যেতে বলা হয়।
ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে সংঘর্ষের খবর জানার পর ব্র্যাকের ছাত্রদের একটি অংশ বেরিয়ে গিয়ে হাতিরঝিলে জড়ো হয়। সেখান থেকে আফতাবনগর গেইটে গিয়ে তারা সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে বিকালে আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।