বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিতের বিষয়ে আদেশ রোববার

 

স্টাফ রিপোর্টার: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রলবোমা হামলায় নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া ছয় মাসের জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি শেষ হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার। এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী রোববার দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।

খালেদার আইনজীবী ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যার্টনি জেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যার্টনি জেনারেল মো. মমতাজ উদ্দিন ফকির, মুরাদ রেজা। তাদের সঙ্গে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যার্টনি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ ও ড. বশির উল্লাহ।

অন্যদিকে আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। এছাড়া আদালতে ছিলেন এডভেকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, এজে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং তাদের সঙ্গে ছিলেন কায়সার কামাল, এ কে এম এহসানুর রহান, অ্যাডভোকেট মাসুদ রানা, সালমা সুলতানা সোমা প্রমুখ।

শুনানিতে জামিনের বিরোধিতা করে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, এখন যে ধরনের অসুস্থতার কথা বলে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন চাওয়া হচ্ছে, এমন অসুস্থতা নিয়েই তিনি প্রধানমন্ত্রীর দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। 

অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতে বলেন, অসুস্থতা তাঁর নিত্যসঙ্গী। প্যারাসিটামল ছাড়া কোনো ওষুধ খাচ্ছেন না খালেদা জিয়া। কারা কর্তৃপক্ষ তাঁকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে চেয়েছে। কিন্তু তিনি ইউনাইটেড হাসপাতাল ছাড়া চিকিৎসা নিতে রাজি হননি।

মাহবুবে আলম বলেন, গাড়ি পুড়িয়ে কুমিল্লার নাশকতায় ৭ জন লোককে পুড়িয়ে মারা হলো। সাধারণ মানুষের জীবনের কি কোনো মূল্য নেই? একজন হত্যা মামলার আসামীকে কোনোভাবে জামিন দেয়া ঠিক হবে না।

এর আগে জবাবে খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন বলেন, মাই লর্ড, নাশকতার সঙ্গে খালেদা জিয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। ঘটনার সময় খালেদা জিয়া গুলশান অফিসে বন্দি ছিলেন। মামলার এফআইরে তাঁর নাম ছিল না। কিন্তু অভিযোগ গঠনের সময় তাঁর নাম যোগ করা হয়। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এসব মামলায় তাঁকে আসামী করা হয়। তিনি অসুস্থ, তাঁর চিকিৎসা পর্যন্ত করানো হচ্ছে না। নারী ও অসুস্থ বিবেচনায় তাঁকে হাইকোর্ট জামিন দেয়া হয়েছে। মাই লর্ড, এ বিবেচনায় আমরা আশা করি তাঁকে জামিন দেবেন। এ মামলায় খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীনও বক্তব্য দেন।

গত মঙ্গলবার চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী আবেদনটি বুধবার পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। এর আগে সোমবার বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামানও বিচারপতি এস.এম মজিবুররহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়াকে ছয় মাসের জামিন দেন। গত ১ জুলাই খালেদাকে গ্রেফতার দেখিয়ে জামিন আবেদনের শুনানির জন্য ৮ আগস্ট বহাল রাখেন কুমিল্লার আদালত। এরপর খালেদা জিয়া হাইকোর্টে এ মামলায় আবেদন করে জামিন চান।

ওই আবেদনের পর কুমিল্লার আদালতে খালেদার জামিন নিয়ে করা আবেদন ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এ আদেশ অনুসারে কুমিল্লার আদালত তা নিষ্পত্তি করে খালেদার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করেন। তার বিরুদ্ধে সম্প্রতি খালেদা হাইকোর্টে আবেদন করলে সোমবার আদালত তার ছয় মাসের জামিন মঞ্জুর করেন।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় পাঁচ বছরের দ- হওয়ার পর থেকে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পুরাতন কারাগারে বন্দী রয়েছেন খালেদা জিয়া।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ