শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

অনুরাগ-বিরাগের শাসন নয়

‘হামলাকারী সনাক্তে তৎপরতা নেই’ শিরোনামে মুদ্রিত প্রতিবেদনটি ভেবে দেখার মতো। ১১ আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিকে মুদ্রিত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়- নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নামা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছিল লাঠিসোঁটা, রামদা হাতে হেলমেট পরিহিত লোকজন। আন্দোলনের তথ্য ও ছবি সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার সাংবাদিকরা এখনও সুস্থ হননি। কিন্তু সুস্পষ্ট ছবি-ভিডিও থাকার পরও জানা যায়নি এই ‘হেলমেট বাহিনী’ আসলে কারা। এদের গ্রেফতারে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোন তৎপরতা নেই। অথচ মার খেয়ে উল্টো গ্রেফতার হয়েছেন ২২ শিক্ষার্থী। থানা হেফাজতে তাদের সাথে ভালো আচরণ করা হয়নি। রিমান্ড শেষে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার আদালত চত্বর থেকে কেঁদেকেটে কারাগারে গেছেন তারা, কারাবাসের কথা যারা স্বপ্নেও কোন দিন ভাবেননি।
এমন চিত্র থেকে জনমনে প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছেÑ প্রশাসন কি তাহলে অনুরাগ বিরাগের বশবর্তী হয়ে কাজ করছে? যদি তাই হয় তাহলে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে কেমন করে? মানবাধিকার কর্মী ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের যে ঘটনা ঘটলো তারপর তাদের গ্রেফতার করা হলো, তাহলে যারা হামলা করলো তাদের কেন গ্রেফতার করা হবে না? আইনের চোখে যে সবাই সমান সেটা যেন সবার ক্ষেত্রে সমানভাবে প্রযোজ্য হয়। তিনি বলেন, ‘এখানে রাষ্ট্র একচোখা আচরণ করছে। এক পক্ষকে গ্রেফতার করছে, আরেক পক্ষকে কিছু বলছে না। আর হেফাজতে নিয়ে গিয়ে যদি কাউকে নির্যাতন করা হয় তাহলে ধরে নিতে হবে রাষ্ট্রই সেই নির্যাতন করছে। আমাদের দাবি, আইনের প্রয়োগ যেন সততা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে হয়।’
সুলতানা কামালের বক্তব্য বিবেচনার দাবি রাখে। আমরা মনে করি অনুরাগ-বিরাগের বদলে আইনের শাসন তথা সুশাসনের চেতনা এখন জাতির জন্য সবচেয়ে জরুরি বিষয়। আর এ ক্ষেত্রে সঙ্গত ভূমিকা পালন করতে পারে সরকার তথা প্রশাসন। সময়ের দাবি বাস্তবায়নে তারা সমর্থ হন কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ