শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে সরকার সত্যের বিরুদ্ধে যেন যুদ্ধ ঘোষণা করেছে

খুলনা অফিস : সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নামের একটি ভয়াবহ কালো আইন পাস করেছে সরকার। এ আইনের প্রত্যেকটি লাইনে লাইনে রয়েছে বাকস্বাধীনতা হরণের মতো অন্যায় নির্দেশনা। যা দেশের সংবিধান পরিপন্থী। এ আইন বাস্তবায়ন হলে একদিকে যেমন মুক্ত সংবাদমাধ্যম তাদের স্বাধীনতা হারাবে অন্যদিকে দেশের মানুষের মত প্রকাশের কোনো স্বাধীনতা থাকবে না। দেশের সকল কালো আইনের জন্মদাতা আওয়ামী লীগ। ১৯৭৫ সালেও আওয়ামী লীগ সরকার সংবাদ মাধ্যমের কণ্ঠরোধ করতে চারটি সংবাদপত্র রেখে বাকি সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়েছিলো। বাকশালের মতো কালো আইন করেছিলো। কিন্তু দেশের জনগণ সে আইন প্রত্যাখ্যান করেছিল। আজও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে যে ভয়াবহ জঘন আইন পাস করেছে তা দেশের মানুষ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। এ অন্যায় কালো আইন না মানতে সাংবাদিক সমাজ দেশের সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে রাজপথে কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে সরকার সত্যের বিরুদ্ধে যেন যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। 

শনিবার খুলনা প্রেস ক্লাবের সামনে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন খুলনা-এমইউজে ‘গণমাধ্যম বিরোধী ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল পাসের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। এমইউজে’র সভাপতি মো. আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) আবুল হাসান হিমালয়ের পরিচালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন বিএফইউজের সাবেক নির্বাহী সদস্য শেখ দিদারুল আলম ও বিএফইউজের সাবেক নির্বাহী সদস্য এমইউজে খুলনার সক-সভাপতি এহতেশামুল হক শাওন, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ খুলনার সদস্য সচিব ডা. সেখ আখতার উজ জামান, মহানগর মহিলা দলের সভানেত্রী অধ্যক্ষ সৈয়দা রেহানা ঈসা, এমইউজে খুলনার সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল খালেক আজীজী ও মো. রাশিদুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এইচ এম আলাউদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক রানা, দৈনিক প্রবাহের সিনিয়র রিপোর্টার মুহাম্মদ নূরুজ্জামান, স্টাফ রিপোটার কামরুল হোসেন মনি, ফটো সাংবাদিক সেলিম গাজী, মানবাধিকারকর্মী জিএম রাসেল ইসলাম, খুলনা জেলা যুবদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাবু, সদর থানা যুবদলের নেতা শফিকুল ইসলাম শাহিদ প্রমুখ। সিটি মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, আওয়ামী লীগ আর গণতন্ত্র একসাথে চলতে পারে না। আওয়ামী লীগ নামের সাথে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা শব্দটি যায় না। কেন না ১৯৭৫ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকে থাকতে তাদের পক্ষের মাত্র চারটি পত্রিকা রেখে বাকি সবগুলো পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিলো। বাকশালের মতো কালো আইন তৈরি করেছিলো। এখনো সে ধারা অব্যাহত রেখেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নামে যে আইন সরকার পাস করতে যাচ্ছে এ আইনে সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা একেবারে কেড়ে নেয়া হয়েছে। এ আইন পাস হলে সরকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে লেখা তো দূরের কথা তাদের সার্কুলার ছাপানো ছাড়া সাংবাদিকদের আর কোনো কাজ থাকবে না। কেননা সরকার ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের বিরুদ্ধে লিখতে গেলেই মামলা খেতে হবে। জেল খাটতে হবে। ফলে কোনো সাংবাদিক সত্য কথা লেখার সাহস দেখাবে না। এজন্য অবিলম্বে এ কালো আইন পাস করা থেকে বিরত থাকুন। সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে এ কালো আইন দেশের সাংবাদিক সমাজ, সুশীল সমাজ, এমনকি দেশের কোনো বিবেকবান মানুষ মেনে নেয়নি। তারপরও তাদের মতামতের তোয়াক্কা না করে তাদের নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় এ আইন পাস করেছে সরকার। এ আইন পাস হওয়ায় দেশের মানুষ কথা বলার অধিকার হারাবে। সাংবাদিকরা সত্য কথা লিখতে পারবে না। এ জন্য সবাইকে এ আইন প্রতিহত করার শপথ নিতে হবে। না হলে আমরা কেউ এ অন্যায়ের হাত থেকে রেহাই পাবো না। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে দৈনিক আমার দেশ, ইসলামী টিভি, দিগন্ত টিভিসহ বন্ধকৃত গণমাধ্যম খুলের দাবি জানান।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ