শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

ভূমধ্যসাগরীয় খাবারে বিষণ্নতা প্রতিরোধ

২৭ সেপ্টেম্বর, বিবিসি : ভূমধ্যসাগরীয় খাবার বিষণ্নতা প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে বলে নতুন এক গবেষণায় ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।

ফলমূল, শাকসব্জি, শস্যদানা, মাছ, বাদাম ও জলপাইয়ের তেল; খুব বেশি মাংস ও দুগ্ধজাত পণ্য থাকবে না- এমন উদ্ভিজ্জ আহার প্রণালী মেজাজ ভালো রাখতে সাহায্য করে বলে গবেষকরা দাবি করেছেন। তারা মলিকুলার সাইকিয়াট্রি জার্নালে ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্যভ্যাসের উপকারিতার বিষয়টি তুলে ধরেছেন।

আট বছরে প্রকাশিত ৪১টি আলাদা গবেষণা পর্যালোচনা করে বিষণ্নতা কমাতে সুনির্দিষ্ট আহার প্রণালীর দিকে চোখ ফেরাতে বলেছেন গবেষকরা। অবশ্য এখনি এ বিষয়ে চূড়ান্ত রায় দেওয়া যাচ্ছে না। ভূমধ্যসাগরীয় খাবারই যে বিষন্নতা কমাতে পারবে, তা নিশ্চিত হতে আরও পরীক্ষা নিরীক্ষা করা লাগবে, বলছেন মেটাবলিক মেডিসিনের বিশেষজ্ঞরা।  

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের সহকর্মীদের নিয়ে বিষণ্নতা কমাতে খাবারের ভূমিকা নিয়ে গবেষণাটি করেছেন ড. ক্যামিলে লাসালে। তিনি বলছেন, পুরোপুরি প্রমাণিত না হলেও খাবারের সঙ্গে বিষণ্নতার ঝুঁকি কমার সম্পর্ক থাকতে পারে। মেজাজের সঙ্গে খাবারের সম্পর্কটা বেশ ‘জটিল’, এর সঙ্গে আবহাওয়া, পরিবেশসহ অন্যান্য কারণও জড়িত থাকতে পারে, ধারণা তার।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, সাধারণত বিষণ্নতা বা হতাশার সময় খাবার রুচি চলে যায়। মানুষজন এসময় নিজেদের দিকে খেয়ালও রাখতে পারে না। হাসিখুশি মানুষেরা তুলনামূলকভাবে স্বাস্থ্যকর খাবার খায়, বিষণ্নতার জন্য দায়ী হিসেবে পরিচিত মদ থেকেও যতটা সম্ভব দূরেই থাকে তারা।

প্রচুর পরিমাণে মিষ্টি ও প্রক্রিয়াজাত খাবারের মতো অস্বাস্থ্যকর আহারেও বিষণ্নতার ঝুঁকি বেড়ে যাতে, বলছেন গবেষকরা। খাদ্যভ্যাস থেকে এগুলো ছেঁটে ফেলতে পারলে মেজাজও ভালো থাকবে, ইঙ্গিত তাদের।

 “স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ অনেক কারণেই ভালো। কিন্তু আহারে ফলমূল, শাকসব্জির মতো উদ্ভিজ্জ উপাদান বেশি থাকলে তা মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে ভূমিকা রাখে কিনা, তা নিশ্চিতে আমাদের আরও প্রমাণ লাগবে। এজন্য বিষণ্নতার ঝুঁকিতে আছে এমন অসংখ্য মানুষের মধ্যে দৈবচয়নের ভিত্তিতে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাতে হবে,” বলেন গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের মেটাবলিক মেডিসিনের অধ্যাপক নাভিদ সাত্তার।

মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা দাতব্য প্রতিষ্ঠান মাইন্ডের কর্মকর্তা স্টিফেন বাকলে অবশ্য ভূমধ্যসাগরীয় খাবার নিয়ে হওয়া গবেষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন। বলছেন, স্বাস্থ্যকার খাদ্যভ্যাস, নিয়মিত শারিরীক কর্মকাণ্ড ও মেজাজ বদলে দেয় এমন মিষ্টি, ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল জাতীয় থাবার কমানোর পরামর্শ আদতে মানুষের উপকারেই আসবে।

 “যা খাই, তার সঙ্গে আমাদের অনুভূতির যে নিবিড় যোগাযোগ আছে তা মোটামুটি সবারই ধারণা। রক্তে শর্করার মাত্রা আমাদের শক্তি ও মেজাজকে প্রভাবিত করে। আপনি যদি বিষণ্নতা বা দুশ্চিন্তায় আক্রান্ত হন, স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখাটা তখন কষ্টকরই হয়ে ওঠার কথা। এসময় অনেকেই মাদক বা অ্যালকোহলের মতো সাহায্য করে না এমন কৌশলের আশ্রয় নেয়। এমন ক্ষেক্র্রে অন্য ধরনের চিকিৎসা বা কথা বলা থেরাপিতে কাজ দিতে পারে,” বলেন স্টিফেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ