বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যার্পণ এখনও সম্ভব নয়- ইউএনএইচসিআর

৬ অক্টোবর, ইরাবতী : রাখাইনে সহিংসতার মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে প্রস্তুত বলে দাবি করে আসছে মিয়ানমার। নিউইয়র্কে সর্বশেষ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনেও এই দাবি করা হয়েছে। কিন্তু শুক্রবার জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সহিংসতা কবলিত রাখাইনের মংডু জেলা এখনও রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, সম্মানজনক ও টেকসই প্রত্যর্পণের উপযুক্ত নয়। মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম এখবর জানিয়েছে।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ি’র উদ্যোগে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের পার্শ্ববৈঠকে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের প্রতিনিধিদের বৈঠকের পর জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক কমিশনের (ইউএনএইচসিআর) মুখপাত্র আন্দ্রেজ মাহেসিক এই বিবৃতি দিলেন।

বিবৃতিতে ইউএনসিএইচআর কর্মকর্তারা কয়েক সপ্তাহ আগে রাখাইন পরিদর্শনের পর্যালোচনা তুলে ধরেছেন। তারা উল্লেখ করেছেন, তারা যেসব স্থান পরিদর্শন করেছেন সেগুলো ছিল সীমিত। তারা জানতে পেরেছেন স্থানীয় অর্থনীতি ও জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভয়াবহভাবে। এতে করে রোহিঙ্গাদের ঝুঁকি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

মুখপাত্র বলেছেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে বিনিময় সীমিত হয়ে পড়েছে। ফলে আন্তঃসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি গড়ে ওঠার সুযোগ কম।

শুক্রবারেই পৃথক আরেকটি বিবৃতিতে ভারতে আশ্রয়ের জন্য পালিয়ে আসা সাত রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারের নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে ইউএনএইচসিআর। বৃহস্পতিবার ওই রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দেয় ভারতীয় কর্মকর্তারা। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তাদের আইনি সহায়তা উপেক্ষার পাশাপাশি রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন মূল্যায়নের সুযোগ দেওয়া হয়নি। ফেরত পাঠানো এসব রোহিঙ্গা মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের হাতে নির্যাতনের শিকার হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।

২৫আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় সাত লাখের মতোমানুষ। বিভিন্নমানবাধিকার সংগঠন এ ঘটনায়খুঁজে পেয়েছে মানবতাবিরোধী অপরাধের আলামত। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ আখ্যাদিয়েছে। রাখাইনের সহিংসতাকে জাতিগত নিধন আখ্যা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ। তবে এইসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।

বাংলাদেশেপালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের রাখাইনে প্রত্যর্পণে মিয়ানমার চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। একই সঙ্গে মিয়ানমার জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার সঙ্গেও একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। তবে রোহিঙ্গাদের এখনও ফিরিয়ে নেওয়া শুরু করেনি মিয়ামার।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ