শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

রাজাপুরে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ!

মোঃ সাইদুল ইসলাম, রাজাপুর (ঝালকাঠি) সংবাদদাতা : ঝালকাঠির রাজাপুরে ২ কোটি ১২ লক্ষ ৮১ হাজার ১২৮ টাকা ব্যয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রের পাইলিংয়ের কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ পাইলিং নির্মাণে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের অজ্ঞাতেই কাজ করে যাওয়া হলেও প্রতিকারে কেউ এগিয়ে না আসায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ডি ডি এম/এম সি এস-২/০৬৩ নং প্যাকেজে, ই-টেন্ডার আই ডি নং-২০৫২৩০ এর আওতায় বড়ইয়া ডিগ্রী কলেজ কাম- বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র হিসাবে ৩ তলা বিশিষ্ট (নীচতলা উন্মুক্ত) ভবন নির্মাণ করা হবে। এ দিকে মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স স্যাডো কনস্ট্রাকশন এর কাছ থেকে প্রকল্পটি ক্রয় করে ভবন নির্মাণের কাজ করছেন রাজাপুর সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ঠিকাদার আনোয়ার হোসেন মৃধা মজিবর। সরেজমিনে গিয়ে যানা গেছে, মূল ভবন নির্মাণের জন্য ৮০ ফিট গভীরতায় ৪২টি পাইলিং নির্মাণ করার কথা থাকলেও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ৭৫/৭৬ ফিটে ঠিকাদারের ইচ্ছা মতোই নির্মাণ কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। আর পাইলিং নির্মাণে রডের খাচায় ব্যবহার করা হচ্ছে ১৬ এমএম এর পরিবর্তে ১২ এমএম ১০ এমএম এর পরিবর্তে ৮ এমএম রড। রডের খাচায় চেয়ারের ব্যবহারের কথা থাকলেও তা দেয়ার কোন বালাই নেই। নিয়ম মোতাবেক পাইলিং নির্মাণে বোল্ডার পাথরের চিপস ব্যবহারের পরিবর্তে সিঙ্গেল পাথর ও ডালাই মিশ্রন দ্রুত জমাট বাদতে ক্যামিকেল ব্যবহারের নিয়ম থাকলেও ক্যামিকেল রাখা হয়েছে শুধু ডিসপ্লে করে। অভিযোগ রয়েছে ডালাই মিশ্রনে সি-১ সিমেন্ট ব্যবহার না করে সি-২ সিমেন্ট দিয়ে মিশ্রন তৈরি করা হলেও পরিমাণেও সিমেন্টে কম দেয়া হয়। নির্মাণ কাজ চলাকালে দেখা মেলেনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি বা দায়িত্বপ্রাপ্ত পিআইও অফিসের কোন প্রতিনিধির। ঠিকাদারের লোকজন নিজেদের ইচ্ছেমত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মীত ভবনের অনিয়ম দেখে স্থানীয়রা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গত ৬ অক্টোবর স্থানীয়রা বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তিনি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোসাঃ নাসরিন সুলতানাকে ঘটনা স্থলে পাঠান কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গেলেও কোন সুফল মিলছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার নিষেধ করার পরেরও ঠিকাদার তার ইচ্ছে মত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে ঠিকাদারের পক্ষ থেকে তদারকির দায়িত্বে থাকা মোঃ জসিম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, “পাইলিংয়ের রড ব্যবহারের ক্ষেত্রে ২/১ টা রড এদিকসেদিক হতে পারে। আর পাইলিংয়ের গভীরতায় ২ ফিট কম দিয়েছি মাত্র।” এ ব্যাপারে বর্তমান ঠিকাদার মোঃ আনোয়ার হোসেন মৃধা মজিবর এর কাছে জানতে চাইলে তিনি সম্পূর্ণ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “এখানে এদিক সেদিক করার কোন সুযোগ নেই কারন এটা কম্পিউটারের মাধ্যমে টেষ্ট করা হবে, তবে কাজ করতে গেলে ১৯/২০ হতে পারে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোসাঃ নাসরিন সুলতানার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, “পাইলিং নির্মাণে গভীরতায় ২/৩ ফিট কম হলে তার বিল কর্তন করা হবে। সরেজমিনে গিয়ে নির্মাণ কাজে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করতে আমি নিষেধ করে আসছি।” এলাকাবাসী এ অনিয়মের প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ