শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

মালটা চাষে স্বপ্ন দেখাচ্ছে বগুড়ার আল-আমিন

বগুড়া অফিস: আল-আমিন। বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ থেকে মাস্টার্স পাস করে একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলার মানিকপোটল গ্রামের আব্দুল বারী মাস্টারের ছেলে। প্রখর মেধাবী এই তরুণের ছোট থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি কৃষি কাজের প্রতি প্রচন্ড ঝোঁক ছিল। পড়াশোনার ফাঁকে বৃদ্ধ বাবার সাথে ছুটে যেতেন ক্ষেত্রে। তার বাবাও একজন সফল চাষি। কৃষি কাজে সাফল্যের জন্য একাধিকবার পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। ধান, পাটসহ সাধারণ কৃষি পণ্য উ’পাদনের পাশাপাশি বাউকুল, স্ট্রবেরি, থাই পেয়ারে চাষে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন আল-আমিন। এসব ফসল উৎপাদনের স্বীকৃতি হিসেবে একাধিকবার কৃষি পদক পেয়েছেন।

প্রায় দুই বছর যাবত বগুড়ায় শুরু হয়েছে সুস্বাদু ফল মালটার চাষ। বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলার ১২টি উপজেলায় মোট ৬০টি মালটার বাগান গড়ে উঠেছে। আল-আমিনের বাগানটি অন্যতম। দুই বছর পূর্বে মোট ২৫ শতাংশ জমিতে ১৬০টি মালটা গাছের চারা রোপণ করেছেন। চলতি বছরের মার্চ-এপ্রিল মাসে গাছে ফুল আসে। সাধারণত ৩ বছর বয়সে মালটা গাছে ফুল এবং ফল ধরার কথা। কিন্তু আল-আমিনের বাগানের বেশ কিছু গাছে দুই বছরেই ফুল এবং ফল ধরেছে। ফলের আকার এবং রঙ বেশ সুন্দর। স্বাদও চমৎকার। আল-আমিনের এই সাফল্যে বগুড়ার মাটিতে মালটা চাষে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

আল-আমিন জানান, মালটা চাষের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ কৃষি অফিস থেকে পেয়েছেন। কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত তাকে পরামর্শ দিচ্ছেন। তিনি আরও জানান, মালটা চাষ অন্য যেকোন ফসলের চেয়ে সহজ। যেকোন ধরনের মাটিতেই মালটা চাষ করা সম্ভব। ৮-১০ ফুট দূরত্বে চারাগাছ রোপণ করতে হয়। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই মালটা চারা রোপণের উপযুক্ত সময়। চারার দামও কম। মাত্র ৫০-৬০ টাকায় চারা পাওয়া যাচ্ছে। তিনি নিজেও চারা বিক্রি করছেন। ইতোমধ্যেই তার বাগানের সবগুলো গাছের ডালে কলম করে চারা তৈরি করেছেন। অনেকেই তার কাছ থেকে চারা কিনে নিয়ে যাচ্ছে। ফরমালিনমুক্ত মালটা উৎপাদনে তিনিসহ বগুড়ার চাষিরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানালেন তিনি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বগুড়া’র সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ ফরিদুল আলম জানান, বগুড়ায় মালটা চাষের উজ্জল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই জেলায় ৬০টি বাগানে ২৪ হেক্টর জমিতে মালটার চাষ হচ্ছে। কৃষি বিভাগ চাষিদের প্রয়োজনীয় সবধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা দিচ্ছে। অল্পসময়ের ব্যবধানে বগুড়ায় মালটা চাষে বিপ্লব ঘটবে বলেও তিনি আশা করছেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ