শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতেই বিচার কাজ চলবে

* আসামী অসুস্থ থাকাবস্থায় তার বিচারকার্য চলার নজির নেই
স্টাফ রিপোর্টার : জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়া আদালতে না আসায় তাঁর অনুপস্থিতিতে বিচারকাজ চলবে বলে বিশেষ জজ আদালত যে আদেশ দিয়েছিলেন, তার বিরুদ্ধে করা রিভিশন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এই আদেশের ফলে খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিচার চলতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
গতকাল রোববার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি মো. কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান।
এ বিষয়ে দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিচারকাজ চলতে বিচারিক আদালতের আদেশ বহাল, এতে করে বিচার চলতে বাধা নেই।
এর আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়া আদালতে না আসায় তাঁর অনুপস্থিতিতে বিচার চলবে বলে বিশেষ জজ আদালত যে আদেশ দিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করা হয়।
গত ২০ সেপ্টেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়া আদালতে না আসায় তাঁর অনুপস্থিতিতে বিচার চলবে বলে আদেশ দেন আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক আখতারুজ্জামান এই আদেশ দেন।
আদালতের আদেশের প্রতিক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, কোনও আসামী অসুস্থ থাকাবস্থায় তার বিচারকার্য চলার নজির পৃথিবীতে নেই।
জয়নুল আবেদীন বলেন, পৃথিবীতে এমন কোনও নজির নাই। আমাদের ৭০টি ডিএলআর (ঢাকা ল’ রিপোর্টস- এর প্রতিবেদন) আছে, সেখানেও এমন কিছু পাওয়া যাবে না যে, কারও অসুস্থ থাকা অবস্থায় তার বিচার কাজ হয়েছে।
তিনি বলেন, বিচারিক আদালত খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিচার পরিচালনার আদেশ দেন। ওই আদেশের বিরুদ্ধে আমরা হাইকোর্ট বিভাগে এসেছিলাম। হাইকোর্টে বলেছি, একজন ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে কাতরাচ্ছেন। এ অবস্থায় তার অনুপস্থিতিতে তড়িঘড়ি করে বিচার কাজ সম্পন্নের চেষ্টা চলছে।
খালেদা জিয়ার এই আইনজীবী আরও বলেন, আমরা ভেবেছিলাম আদালত বিষয়টি সহানুভূতিশীলভাবে দেখবেন। তারপরও আদালত আমাদের আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছেন। এটা খুবই দুঃখজনক। এ ধরনের আদেশ আমরা আশা করিনি। আমাদের আশা ছিল, দেশের সর্বোচ্চ আদালত স্বাধীনভাবে বিচার কাজ পরিচালনা করবেন। বিশেষ করে খালেদা জিয়ার মামলাটি নিয়ে তারা গভীরভাবে চিন্তা করবেন। আমরা সেটাও পেলাম না।
জয়নুল আবেদীন বলেন, এখন আমাদের সামনে একটা পথ আছে। সেটা হলো আপিল বিভাগ। যেহেতু বিধান রয়েছে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার, আমরা সেটি করবো। আশা করবো, সেখানে অন্তত ন্যায়বিচার পাবো।
আইন মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারের একটি কক্ষকে আদালত হিসেবে ঘোষণা করেন। ৫ সেপ্টেম্বর সেখানে আদালত বসেন। কারাগারে থাকা খালেদা জিয়া সেদিন আদালতে হাজির হয়ে আদালতকে বলেছিলেন, এ আদালতে ন্যায়বিচার নেই। তিনি অসুস্থ। তিনি আর আদালতে আসবেন না। যত দিন ইচ্ছা আদালত তাকে সাজা দিতে পারেন।
এর আগে এ মামলার বিচার চলছিল পুরান ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতে। এ মামলায় দুদক তার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেছে। খালেদা জিয়াসহ তিন আসামির যুক্তিতর্ক শুনানি বাকি রয়েছে।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় এ মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলার অপর আসামীরা হলেন হারিছ চৌধুরী, জিয়াউল ইসলাম ও মনিরুল ইসলাম খান।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ