শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

কাল্পনিক মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার বিরোধী দল মাঠে নামতে পারছে না

চৌগাছা (যশোর) সংবাদদাতা: যশোরে বিএনপির ১৭ নেতাকর্মীর নামে আবারো গায়েবি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ । কোতয়ালী থানার এসআই হাসানুর রহমান বাদী হয়ে শুক্রবার এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চুসহ চারজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তাদের কাছ থেকে পাঁচটি হাতবোমা উদ্ধারের দাবি করেছে পুলিশ।
আটক অপর তিন আসামি হলেন, ষষ্ঠিতলা বুনোপাড়া এলাকার মৃত জহিরুল হকের ছেলে আজিজুর রহমান শিশির, বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকার মৃত আদু সরদারের ছেলে শুকুর আলী এবং একই এলাকার শওকত আলী খানের ছেলে আজগর আলী খান।
এছাড়া খালধার রোড পন্ডিতপুকুর এলাকার বাসিন্দা এবং যশোর কলেজের শিক্ষক মোস্তফা মাহমুদুল হককে আটক করা হয়েছিল। কিন্তু পরে যাচাই-বাছাই করে ওই কলেজের শিক্ষক এবং যশোরের সুশীল সমাজের অনুরোধে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তার ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওসি অপূর্ব হাসান।
মামলায় তালিকাভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন, চাঁচড়া গোলদারপাড়া এলাকার শামসু গোলদারের ছেলে টিটো, ফন্টু গোলদারের ছেলে সজীব, চাঁচড়া মধ্যপাড়ার মৃত ভোগোর ছেলে স্বাধীন, ভাতুড়িয়া দাড়িপাড়ার চেরাগ আলীর ছেলে হাবিব, মৃত লতিফ মোড়লের ছেলে মোজাহার আলী নান্না, চাঁচড়া কলোনিপাড়ার মৃত মোনাজাত মোড়লের ছেলে সোহরাব হোসেন, চাঁচড়া মোড় এলাকার জালাল উদ্দিনের ছেলে জাহিদ হোসেন টিটো, চাঁচড়া পশ্চিমপাড়ার শফি উদ্দিন খলিফার ছেলে ছমির উদ্দিন, একই এলাকার শাওন কবির, চাঁচড়া বাজার এলাকার মৃৃত শফি মিয়ার ছেলে আলমগীর হোসেন, শাহীন খান মাস্টারের ছেলে ফোক্কা, চাঁচড়া রায়পাড়ার মোহাম্মদ আলীর ছেলে রানা এবং কাজীপুর এলাকার চুন্নু।
কোতয়ালী থানার এসআই হাসানুর রহমান দায়ের করা এজাহারে উল্লেখ করেছেন, গত শুক্রবার রাত পৌনে ১১টার দিকে গোপন সূত্রে সংবাদ আসে, শহরের ষষ্ঠিতলা বুনোপাড়া এলাকায় আসামি আজিজুর রহমান শিশিরের বাড়িতে ২০ দলীয় ঐক্যজোটের নেতাকর্মীরা গোপন বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। তারা বিভিন্ন স্থানে নাশকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে গোপন বৈঠক করছেন। তারা গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাতের চেষ্টা করছে। সেখানে গিয়ে চারজনকে আটক করা হয়। এরপর ওই বাড়ির মধ্যে একটি ঘরের খাটের নিচ থেকে পাঁচটি হাতবোমা উদ্ধার করা হয়। আটক আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পলাতক আসামিদের নাম পরিচয় জানায়।
এদিকে গ্রেফতার নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুনির আহম্মেদ সিদ্দিকী বাচ্চু সাংবাদিকদের বলেছেন, শুক্রবার তার বাবা মরহুম আফসার আহমেদ সিদ্দিকীর মৃত্যুবার্ষিকী ছিল। বিকেলে বাড়িতে দোয়া অনুষ্ঠান শেষ করে সন্ধ্যার দিকে তিনি বের হয়ে ষষ্ঠিতলাপাড়ায় বন্ধু শিশিরের বাড়িতে বসে ছিলেন। সে সময় পুলিশ গিয়ে তাদের কোনো কারণ ছাড়াই আটক করে নিয়ে আসে। তার সঙ্গে চারজন ছিলেন।
তিনি বলেন, ‘কী কারণে আমাদের আটক করা হলো তা জানি না। বিএনপি করার কারণে আটক করতে হবে? বিএনপি কি নিষিদ্ধ দল?’। কল্পিত মামলা দায়েরের নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আজীজুর রহমান, যশোর জেলা জামায়াতের মাস্টার নুরুন্নবী, মাওলানা রেজাউল করিম, শহর জামায়াতের আমীর অধ্যাপক  গোলাম রসুল, সেক্রেটারী অধ্যাপক গোলাম কুদ্দুস প্রমুখ।
মিরসরাই (চট্টগ্রাম)
মিরসরাই উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সালাহ উদ্দিন সেলিম ও বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন মোঃ হুমায়ুনকে কারাগারে প্রেরনের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। রবিবার ( ১৪ অক্টোবর) ছাত্র আন্দোলনের সময় দায়েরকৃত একটি মামলায় চট্টগ্রাম জেলা দায়রা জজ আদালতে জামিন চেয়ে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক জামিন নামঞ্জর করে তাদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। হাইকোর্ট থেকে জামিন নেয়ার পর গত ২০ সেপ্টেম্বর নিম্ন আদালত থেকে জামিন নিয়েছিলেন তারা। রবিবার ওই মামলার জামিনের শেষ দিন ছিলো। এছাড়া বারইয়ারহাট পৌরসভা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক শরীফুল ইসলাম বাদশাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেছে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ। তার বিরুদ্ধে জোরারগঞ্জ থানায় ভাংচুরের একটি মামলা রয়েছে।
বিএনপি নেতাদের কারাগারে প্রেরণের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন মিরসরাই উপজেলা বিএনপির আহবায়ক নুরুল আমিন, সাবেক আহবায়ক আব্দুল আউয়াল চৌধুরী, উপজেলা চেয়ারম্যান (সাময়িক বরখাস্তকৃত) নুরুল আমিন, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী, নুরুল আফছার চেয়ারম্যান প্রমুখ। মিরসরাই থানার ওসি (তদন্ত) বিপুল চন্দ্র দেবনাথ বলেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলা থানায় মামলা রয়েছে। ওই মামলায় আদালতে জামিন চাইলে বিচারক জামিন না দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করেন।
কুমিল্লা
বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের কালাকচুয়া এলাকা থেকে গত বৃহস্পতিবার জামায়াতে ইসলামী কুমিল্লা উত্তর জেলা আমীর আলী আশ্রাফ খানসহ ৮ জনকে অন্যায়ভাবে আটক করে বুড়িচং থানা পুলিশ। আটকের নিন্দা ও প্রতিবাদ  জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কুমিল্লা মহানগরী ও জেলা নেতৃবৃন্দ।
এক যৌথ প্রতিবাদ বার্তায়  বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও কুমিল্লা মহানগরী আমীর কাজী দ্বীন মোহাম্মদ,সেক্রেটারী মোহাম্মদ মোছলেহ উদ্দিন,  দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমীর আবদুস সাত্তার ,সেক্রেটারী খন্দকার দেলোয়ার হোসাইন,উত্তর জেলা সেক্রেটারী  মো আবুদল মতিন। নেতৃবৃন্দ  বলেন, ক্ষমতাসীন ফ্যাসিবাদী সরকারের ভোটার বিহীন একতরফা প্রহসনের নির্বাচনের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে পুলিশ প্রশাসন। তারই অংশ হিসেবে জামায়াত নেতৃবৃন্দকে অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করেছে। জনগণ আগামী সংসদ নির্বাচনে সরকারের জুলুম নির্যাতন ও হামলা মামলার জবাব ভোটের মাধ্যামে দিবে।  নেতৃবৃন্দ  অবিলম্বে জামায়াতের উত্তর জেলা আমীর আলী আশ্রাফ খানসহ  সকল রাজবন্দীদের  বিরুদ্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে  নি:শর্ত মুক্তি দাবী জানান।
নাটোর
নাটোরে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ২১ আগষ্ট মামলার রায় বাতিল এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসাসহ মুক্তির দাবীতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মিছিলের প্রস্তুতির সময় শনিবার পুলিশ শহরের হাফরাস্তা এলাকা থেকে পাঁচ ছাত্রদল নেতাকর্মীকে আটক করেছে। জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মারুফ ইসলাম সৃজন জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার সকালে শহরের হাফরাস্তা এলাকায় মিছিলের প্রস্তুতির সময় সাদা পোশাকের একদল পুলিশ জেলা ছাত্রদলের নেতা জুবায়ের হোসেন, আফ্রিদি খান, মুরাদ, সুজন ও কামালকে আটক করে একটি সাদা মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে আটককৃতদের কোন খবর পাওয়া যাচ্ছে না। ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈকত হাসান জানান, নাশকতা সৃষ্টির অভিযোগে শহরের হাফরাস্তা এলাকা থেকে পাঁচ ছাত্রদল নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে দুপুরে বৃষ্টি উপেক্ষা করে বড়াইগ্রাম উপজেলার রাজাপুর বাজারে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বড়াইগ্রাম উপজেলা ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক শামসুল ইসলাম রনি, ছাত্রদল নেতা জাহিদ হোসেন বিপুল, শাহীন খান, কানন খান ও আব্দুল্লাহ আল মামুন লিটন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ