শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

বাংলাদেশের আত্মমর্যাদার সিনোনেম হচ্ছেন খালেদা জিয়া -আসিফ নজরুল

গতকাল রোববার রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে বিএনপি চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে লেখা সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ ‘বেগম খালেদা জিয়া : হার লাইফ, হার স্টোরি’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয় -সংগ্রাম

স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জীবনী নিয়ে লেখা ‘বেগম খালেদা জিয়া: হার লাইফ, হার স্টোরি’ জীবনী গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানীর একটি হোটেলে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে এই গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচিত হলো। গ্রন্থটির লেখক সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ। গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে দি ইউনিভার্সেল একাডেমি। ইংরেজিতে লেখা ৭৭১ পৃষ্ঠা এই গ্রন্থের মূল্য ধরা হয়েছে দুই হাজার টাকা। বেগম জিয়ার বর্ণাঢ্য দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনসহ নানা ঘটনা প্রবাহ নিয়ে এই বই রচিত হয়েছে।
১৯৪৫ সালে জন্মগ্রহণকারী খালেদা জিয়া গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে পুরনো ঢাকার পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী রয়েছেন। তিনি মূল মামলায় জামিন পেলেও অন্য মামলায় তিনি কারাগারে আটক রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ৩৫ টি মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাবির শিক্ষক প্রফেসর আসিফ নজরুল, প্রফেসর লাইলা এন ইসলাম, গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাবেক রাষ্ট্রদূত আনোয়ার হাসিম, অবসরপ্রাপ্ত জজ ও কলামিস্ট ইকতেদার আহমেদ, ইংরেজী দৈনিক নিউ এজ এর সম্পাদক নুরুল কবির প্রমুখ।
বইটিতে খালেদা জিয়ার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন, দূরদর্শিতা ও সংগ্রামের রোমাঞ্চকর গল্প তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া ২০০৭ সালের সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়কালের কিছু কথাও বইটিতে উঠে এসেছে বলে জানা গেছে। ১৯৪৫ সালের দিনাজপুরে জন্ম নেয়া খালেদা খানম পুতুল কীভাবে সেনা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমানের স্ত্রী হলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর গৃহবধূর দায়িত্ব ছেড়ে কিভাবে দলের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন এবং কিভাবে দেশনেত্রী হয়ে উঠলেন- সেইসব ঘটনাপ্রবাহ বর্ণনা করা হয়েছে বইটিতে। এর আগে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নিয়ে ‘প্রেসিডেন্ট জিয়া অব বাংলাদেশ: আ পলিটিক্যাল বায়োগ্রাফি’ শীর্ষক জীবনীগ্রন্থ লিখেছিলেন সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ।
‘বেগম খালেদা জিয়া, হার লাইফ, হার স্টোরি’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সাংবাদিক নুরুল কবির বলেন, ‘গোপনে এবং প্রকাশ্যে বিএনপির বহু নেতা ভারতের সঙ্গে মিমাংসার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার প্রশংসার বড় একটা জায়গা হলো, এখন পর্যন্ত তার দলের বহু নেতা গোপনে প্রকাশ্যে ভারতের সঙ্গে মিমাংসার চেষ্টা করছেন। এতকিছুর পরও ভারত এই ভদ্রমহিলাকে (খালেদা জিয়া) বিশ্বাস করে না। এ জন্যই খালেদা জিয়া প্রশংসার দাবিদার। কারণ, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক অগ্রগতির পথে প্রধানতম বাধা ভারত। সেই ভারত যে মানুষটাকে অবিশ্বাস করে, সেই মানুষটা সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশের জন্য মঙ্গলজনক’ বলেন নুরুল কবির।
ঢাকা বিশ্বিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমাদের এখানে পলিটিক্যাল সেনসিভিটি এত বেশি যে, কেউ যদি খালেদা জিয়া সম্পর্কে একটা ভালো কথা বলেন, তাহলে ধরেই নেওয়া হয় তিনি বিএনপি। ধরে নেওয়া হয় কেউ জিয়াউর রহমানকে ভালবাসলে বঙ্গবন্ধুকে ভালবাসতে পারবেন না। এ রকম মনমানসিকতা নিয়েই আমরা বসবাস করি। আকাশকে বাদ দিয়ে কি মেঘকে ভালবাসা যায়? যারা মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন তাদের সবাইকে মূল্যায়ন করতে সমস্যা কোথায়?’ প্রশ্ন আসিফ নজরুলের।
আসিফ নজরুল বলেন, ‘বাংলাদেশের আত্মমর্যাদার সিনোনেম হচ্ছেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, আমরা শেখ হাসিনার প্রশংসা করতে পারলে, খালেদা জিয়ার প্রশংসা করতে বাধা কোথায়? লেখকরা যদি কিছু লিখতে যায়, কেউ বলেন উনি আওয়ামী লীগ, কেউ বলেন উনি বিএনপি। আমাদের মন মানসিকতা এত পুওর (দরিদ্র) যে, কোনো লেখক সাহস করে কিছু লিখতে চায় না’ বলেন আসিফ নজরুল।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ