শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

আসসালাতু আসসালামু আলাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ সা.

মিয়া হোসেন: আজ মঙ্গলবারবার পবিত্র মাহে রবিউল আউয়াল মাসের ১১তম দিবস অর্থ্যাৎ বিশ্ব মানবতা মুক্তির দূত হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জন্মের আগের দিন। রাসূল (সাঃ) এর জন্মদিনে পৃথিবীর সকল সৃষ্টি জীব উৎসব করেছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ১২ রবিউল আউয়াল ঈদ-এ মিলাদুন্নবী তথা রাসূলের জন্মের খুশিতে আনন্দ উৎসব পালন করা হয়।
হাদীসে উল্লেখ আছে, একজন দাসী রাসূলের জন্মের সু-সংবাদ চাচা আবু লাহাবকে দেয়ার পর আবু লাহাব খুশি হয়ে শাহাদাত আঙ্গুল উচুঁ করে উক্ত দাসীকে মুক্ত করার ঘোষণা দেন। এ জন্য প্রতি সোমবার তার কবরের শাস্তি কিছুটা লাঘব করা হয় এবং ঐ আঙ্গুল থেকে তার মুখে পানীয় পান করানো হয়।
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) পৃথিবীতে সংস্কারক, সফল রাষ্ট্র প্রধান, প্রথম সংবিধান প্রণেতা শ্রেষ্ঠ মহামানব ও মানবতার মুক্তির জন্য আজীবন কঠোর সংগ্রামকারী প্রভৃতি সকল দিক দিয়ে তিনি সকলের জন্যই মডেল। বর্তমান বিশ্বে যারা রাসূল (সাঃ) এর রেখে যাওয়া আদর্শ ও শিক্ষা অনুযায়ী বিভিন্ন গবেষণা কাজ করেছেন অথবা জীবনকে পরিচালিত করেছেন তারা সকলেই সফল হয়েছেন। ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে বিশ্ব শান্তির আদর্শ প্রতিষ্ঠা করে বিদায় হজ্বে দ্বীন তথা জীবন ব্যবস্থার পূর্ণাঙ্গতার ঘোষণা দিয়ে গেছেন। সুতরাং জীবন ব্যবস্থাকে পূণাঙ্গ ঘোষণা দেয়ার পর নতুন করে কোন জীবন পদ্ধতি অবলম্বন করার কোন প্রয়োজন নেই। কিন্তু আজ মুসলমানসহ মানবজাতি রাসূলের জীবনাদর্শ থেকে বিমূখ হয়ে নতুন পদ্ধতির দিকে ঝুঁকে পড়ায় বিশ্ব অশান্তির দাবানলে জ্বলছে।
রাসূল (সা:) বহুগুণে গুনান্বিত ছিলেন। বিভিন্ন হাদীসে বর্ণনা থেকে জানা যায়, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দৃষ্টি অবনত রাখতেন। কোন জিনিসের প্রতি পুনরায় দৃষ্টি দিতেন না, স্থির দৃষ্টিতেও তাকাতেন না। আকাশের চেয়ে জমির দিকে বেশি তাকাতেন। সাহাবাদের সঙ্গে হাঁটার সময় তাদেরকে আগে দিতেন। তিনি তাদের আগে বাড়তেন না। কারো সাথে দেখা হলে সালাম দিতেন। তাঁর কথা ছিল সংক্ষিপ্ত, অথচ ব্যাপক অর্থবোধক ও সুস্পষ্ট। প্রয়োজন অনুসারে কথা বলতেন-বেশিও বলতেন না কমও বলতেন না। রাসূলের সব কথা ছিল ভাল ও কল্যাণধর্মী। কিন্তু তিনি দীর্ঘ নীরবতা অবলম্বনকারী ছিলেন । রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সর্বাধিক কোরআন তেলাওয়াতকারী, এস্তেগফার ও জিকিরকারী এবং প্রার্থনাকারী। সারাটি জীবন সত্যের আহবানে ও সৎকাজে ব্যয় করেছেন। তিনি ইসলামের আগে ও পরে অর্থাৎ সদা সত্যবাদী ও আমানতদার ছিলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন বুদ্ধিমান, গাম্ভীর্য পূর্ণ, ও সঠিক সিদ্ধান্তের অধিকারী, প্রজ্ঞাময় মহান নেতা, ক্রোধ সংবরণকারী, নম্র। সব কিছুতে নম্রতা পছন্দ করতেন, এবং বলতেন: যে নম্রতা থেকে বঞ্চিত, সে কল্যাণ থেকে বঞ্চিত।” (মুসলিম-৪৬৯৬)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সদা চিন্তাশীল, কোমল, শান্ত ও ভদ্র চরিত্রের অধিকারী, রূঢ়স্বভাবের ও হীন চরিত্রের অধিকারী ছিলেন না। নিয়ামত কম হলেও বেশি মনে করতেন। ব্যক্তিগত বা পার্থিব স্বার্থে আঘাত হলে রাগ করতেন না। আল্লাহর বিধান লংঘিত হলে প্রতিবিধান না করা পর্যন্ত ক্রোধ থামতেন না এবং ক্ষান্ত হতেন না। হাসির সময় প্রায় মুচকি হাসতেন। এক কথা তিন বার বলতেন। তিন বার সালাম দিতেন। তিন বার অনুমতি চাইতেন। যাতে তার কথা ও কর্ম, আচার-আচরণ সহজে বোধগম্য হয়, অনায়াসে মানুষের হৃদয়ে আসন করে নেয়।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ