বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

টাই ব্যবহার ও কিছু কথা

শাহ্ আব্দুল হান্নান : মুসলমানদের টাই ব্যবহারকে সব সময়ই নিরুৎসাহিত করছি। আমার মনে হয়, মুসলিম দেশগুলোতে পাশ্চাত্য পোশাকের ব্যবহার শুরুর বিষয়ে কিছু লেখা দরকার।
মুসলিম দেশগুলোতে পাশ্চাত্য পোশাকের আগমন ঘটে ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীতে ঔপনিবেশিক আমলে। তার আগে মুসলমানদের চমৎকার পোশাক ছিল ভারত, আরব এলাকা ও ইন্দোনেশিয়ায়। মহিলাদের ব্যাপারটা এ দিক দিয়ে ভালো ছিল যে, তারা পাশ্চাত্য পোশাকের প্রভাবে কম পড়েছিলেন।
প্রধানত প্যান্ট ও কোট ব্যবহার শুরু হলো। টাই কমই ব্যবহার হতো। এমনকি এখনো আমি যদি ঢাকার রাস্তা দিয়ে চলি, তাহলে দুই কোটি মানুষের এই শহরে শতকরা একজনেরও টাই পরা দেখি না। অবশ্য কিছু কিছু অফিসে ও স্কুলে টাই পরাকে ড্রেসের মধ্যে শামিল করে দেয়া হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয়। কোট ও প্যান্ট প্রয়োজনীয় কিন্তু টাইয়ের উপযোগিতা নেই, এটির দামও বেশি।
টাই শুরু হয়েছিল মূলত ক্যাথলিক দেশ ক্রোয়েশিয়ায় ষোড়শ শতকে, ক্রুশের প্রতীক হিসেবে। তারপর এটি ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডে আসে অষ্টাদশ শতকে।
এটি আমরা কেন ব্যবহার করব, যদি এর কোনো উপযোগিতা না থাকে; তার ওপর এটি ক্রুশের একটা চিহ্নও বটে। ইসলামি নেতৃবৃন্দ এটি ব্যবহারের বিরুদ্ধে বলতেন।
আমার বন্ধুদের বলি, টাই এমন একটি ড্রেস যা শার্ট, প্যান্ট, সালোয়ার ও পাঞ্জাবির মতো প্রয়োজনীয় নয়। এর কোনো উপযোগিতা নেই। এর দামও বেশি। এই টাকা অন্য প্রয়োজনে বা গরিবের সাহায্যে কাজে লাগানো যেতে পারে। এ জন্য আমি মনে করি, টাই ব্যবহার না করাই ভালো। নিজে টাই ব্যবহার করি না। ইউরোপ, আমেরিকায় অনেকবার গিয়েছি; এতে আমার কোনো অসুবিধা হয়নি।
ইরানের নেতারা টাই ব্যবহার করেন না, এমনকি শীতে তেহরান জমে গেলেও না। আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট এবং সৌদি আরবের বাদশাহরা টাই ব্যবহার করেন না। ইসলামি স্কলার ও উলামা টাই ব্যবহার করেননি, এখনো করেন না। আমি বলি না টাই ব্যবহার নিষেধ বা হারাম, কিন্তু জোরের সাথে বলি- টাই ব্যবহার না করাই উত্তম। নাগরিকেরা যদি এটা ত্যাগ করেন তাহলে তারা অপ্রয়োজনীয় পাশ্চাত্যকরণ থেকে বিরত থাকলেন। আমি ইসলামি প-িতদের পরামর্শ দিতে বলব এ ব্যাপারে।
লেখক : আইন, রাজনীতি ও ইসলামি বিষয়ের লেখক

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ