বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

হোপের সেঞ্চুরিতে সিরিজে সমতা আনল ওয়েস্ট ইন্ডিজ

রফিকুল ইসলাম মিঞা : ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের অপেক্ষা বাড়ল বাংলাদেশের। প্রথম ম্যাচ জিতে সিরিজ জয়ের পথে টাইগাররা এগিয়ে থাকলেও দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে সিরিজ সমতায় এনেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফলে তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচে হবে সিরিজের সমতা। গতকাল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে একাই জয় এনে দিয়েছেন ওপেনার শাই হোপ। ওপেনিংয়ে ব্যাট করতে নেমে সেঞ্চুরিসহ ১৪৬ রান করে অপরাজিত থেকে দলকে জয় এনে দিয়েই ছাড়েন ছাড়েন এই ওপেনার। ফলে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জয়ের টার্গেট পুরণ হলোনা টাইগারদের। বোলাররা বার বার চেস্টা করেও হোপের উইকেটটি নিতে পারেননি। ফলে একাই দলকে জয় এনে দেন এই ওপেনার। আগে ব্যাট করে বাংলাদেশ ৭ উইকেটে করেছিল ২৫৫ রান। জয়ের জন্য দলটির সামকে টার্গেট ছিল ২৫৬ রান। তবে দুই বল বাকি থাকতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৬ উইকেটে ২৫৬ রান তুলে ম্যাচ জিতে নেয় ৪ উইকেটে। বিজয়ী দলের পক্ষে সেঞ্চুরিয়ান হোপই হন ম্যান অব দ্য ম্যাচ।
জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে টার্গেট ছিল ২৫৬ রান। টার্গেটটা কঠিন না হলেও একেবারে সহজ ছিলনা। ব্যাট করতে নেমে দলীয় প্রথম উইকেট হারিয়ে সেটা প্রমাণ করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলীয় ৫ রানে ওপেনার হেমরাজকে এলবি আউট করে প্রথম উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দলীয় ৫ রানে প্রথম উইকেট হারালেও দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ওপেনার শাই হোপ ব্রাভোকে নিয়ে দলকে ৭০ রানে পৌছে দেন। দলীয় ৭০ রানে ব্র্যাভোকে সরাসরি বোল্ড করে ফিরান রুবেল হোসেনর। তবে আউট হওয়ার আগে তিনি করেন ২৭ রান। তৃতীয় উইকেট জুটিতে হোপের সাথে ব্যাট করতে নেমে স্যামুয়েল দলকে ভালোই এগিয়ে নেন। এই জুটি ভাংগার আগে দলটি পৌছে যায় ১৩২ রানে। স্যামুয়েলের বিদায়ে ভাংগে এই সফল জুটি। মোস্তাফিজের বলে মুশফিককে ক্যাচ দিয়ে বিদায়ের আগে স্যামুয়েল করেন ২৬ রান। এক দিকে উইকেট পড়লেও ওপেনার হোপ একাই দলকে এগিয়ে নেন। ফলে ক্রমেইে পিছিয়ে পড়ে টাইগাররা। তবে ব্যাট করতে নেমেম হেটমায়ার আর অধিনায়ক পাওয়েল দ্রুত আউট হলে ১৫৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে একটু বিপদে পড়ে সফরকারীরা। তবে  রোস্টন চেজকে নিয়ে জুটি করে ঠিকই শক্ত হাতে ব্যাট চালিয়ে দলকে এগিয়ে নেন শাই হোপ। এই জুটি ভাংগার আগে দলটি পৌছে যায় ১৮৫ রানে। চেজের বিদায়ে ভাংগে এই জুটি। মোস্তাফিজের বলে তামিমকে ক্যাচ দিয়ে বিদায়ের আগে চেজ করেন ৯ রান। চেজ বিদায় নিলেও কেমো পলকে নিয়ে হোপ নিজের সেঞ্চুরি তুলে নেয়ার সাথে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নেয়। ফলে জয়ের জন্য শেষ দুই ওভারে দরকার ছিল ২২ রান। ৪৯ ওভারে মোস্তাফিজ বল করতে এসে ১৬ রান দিলে শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল মাত্র ৬ রান। শেষ ওভারে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের প্রথম চার বলে ৬ রান নিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন হোপ-পল জুটি। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেটে ৪৯.৪ ওভারে ২৫৬ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ জিতে নেয় ৪ উইকেটে। হোপ ১৪৪ বলে ১৪৬ রান করে অপরাজিত ছিলেন। তার ১৪৬ রানের ইনিংসটি সাজানো ছিল ১২ বাউন্ডারি আর তিন ছক্কায়। পল অপরাজিত ছিলেন ৩১ বলে ১৮ রানে। বাংলাদেশের পক্ষে মোস্তাফিজুর রহমান আর রুবেল হোসেন নেন ২টি করে উইকেট।  এরআগে, টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে তিন হাফসেঞ্চুরিতে ৭ উইকেটে ২৫৫ রান করে বাংলাদেশ। স্কোরটা আরো বড় হতে পারত। শুরুটা সেভাবেই হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত স্কোরটা থেমে যায় ২৫৫ রান্।ে গতকাল দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৫ রন এসেছে সাকিব আল হাসানের ব্যাট থেকে। দলের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬২ রান করেছেন মুশফিকুর রহিম। অপর ফিফটিটি করেছেন ওপেনার তামিম ইকবাল। এছাড়া দলের পক্ষে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ করেছেন ৩০ রান।  মেহেদী হাসান মিরাজ ১০ রানে আর মাশরাফি মর্তুজা ৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। এই ম্যাচটি ছিল বাংলাদেশের সিনিয়র পাচ ক্রিকেটারের একত্রে মাঠে নামার সেঞ্চুরির ম্যাচ। আর এই মাইরফলক ম্যাচে গতকাল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেই পাচ ব্যাটসম্যানই রান পেয়েছেন। যার মধ্যে হাফসেঞ্চুরি করেছেন সাকিব, মুশফিক আর তামিম ইকবাল। রিয়াদ হাফসেঞ্চুরি করতে না পারলেও আউট হয়েছেন ৩০ রান করে। তামিম ইকবালের সাথে ওপেনিংয়ে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৭ রান করে ইনজরিতে পড়ে মাঠ ছাড়েন লিটস দাস। ওয়ান ডাউনে ব্যাট করতে নেমে ইমরুল কায়েস মোটেও ভালো করতে পারেনি। তবে তৃতীয় উইকেট জুটিতে তামিম আর মুশফিক মিলে ১১১ রানের পার্টনাশীপ গড়ে দলকে বড় স্কোরের পথে নিয়ে যায়। হাফসেঞ্চুরি করে তামিম আউট হলে দলকে এগিয়ে নেয়ায় দায়িত্ব পদে সাকিব-রিয়াদ জুটির উপর। ৫ম উইকেট জুটিতে এই দুই ব্যাটসম্যান দলকে উপহার দেন ৬১ রান। অবশ্য এই জুটি ভাংগার পর আর কোন বড় জুটি গড়তে পারেনি টাইগাররা। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের স্কোর থেমে যায় ২৫৫ রানে। দ্বিতীয় বার ব্যাট করতে নেমে সাকিবের সাথে জুটি করে লিটন দাস ১ রান করে ৭ম উইকেটে জুটিতে ২৬ যোগ করেন।  ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে ওশান থমাস এ্কাই নিয়েছেন তিন উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ—-২৫৫/৭ (৫০ ওভার)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ —- ২৫৬/৬ (৪৯.৪ ওভার)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪ উইকেটে জয়ী।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ