বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে গল্লামারী স্বাধীনতা স্মৃতিসৌধ

খুলনা অফিস : অর্থ বরাদ্দের অভাবে আজও পূর্ণতা পায়নি খুলনার গল্লামারী স্বাধীনতা স্মৃতিসৌধ। ফলে অরক্ষিত হয়ে পড়েছে এ বধ্যভূমি। দিনের বেলায় সৌধটির চারপাশে উন্মুক্ত জায়গায় অবাধে বিচরণ করছে গরু-ছাগল। আর রাতের বেলায় বসছে মাদক সেবীদের আড্ডা।
জানা গেছে, ২০০৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর খুলনায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবহুল গল্লামারীতে স্বাধীনতা সৌধ নির্মাণের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. আনোয়ারুল ইকবাল বিপিএম (বার) পিপিএম ওই ভিত্তি প্রস্তরের উদ্বোধন করেন। খুলনা জেলা পরিষদের উদ্যোগে সৌধটি নির্মাণে মোট প্রকল্প ব্যয় ধরা করা হয় ১০ কোটি টাকা। যার মধ্যে ছিল মূল স্তম্ভ ও বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ, স্তম্ভের চারপাশে ১০ ফুট লাল টাইলস্ বসানো, পায়ে হাঁটা পথ, পার্কিং ইয়ার্ড, সীমানা প্রাচীর, গেট, সিকিউরিটি শেড, রেস্টুরেন্ট, দৃষ্টিনন্দন ফুলের বাগান, পানির ফোয়ারা ইত্যাদি। এর মধ্যে মূলস্তম্ভ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ১৬ লাখ ৩১ হাজার টাকা। প্রকল্পটির অনুমোদনের পর মূলস্তম্ভ নির্মাণে ২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের ওই অর্থ বরাদ্দের পর স্তম্ভ নির্মাণে দুই দফা দরপত্রের আহ্বান করে জেলা পরিষদ। সর্বশেষ ২০০৯ সালের ২৩ জুন আহ্বানকৃত দরপত্রের প্রেক্ষিতে কাজটি পায় খুলনার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আজাদ-ইলোরা জেভি। যার ওয়ার্ক অর্ডার হয় ২০০৯ সালের ১৫ নবেম্বর এবং মূলস্তম্ভ নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০১১ সালের নবেম্বর মাসে। কিন্তু ওই বছরের মার্চে স্মৃতিসৌধের স্থপতি আমিনুল ইসলাম ইমন নির্মিত ওই মূলস্তম্ভ শেষে স্মৃতিসৌধটিকে পূর্ণতা দিতে মূল নকশা বাস্তবায়নের পরামর্শ দেন। তার পরামর্শ ও মূল নকশা অনুযায়ী স্মৃতিসৌধের পূর্ণতা দিতে ২০১১ সালের মার্চে স্থানীয় সরকার বিভাগে বাকী ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ পেতে পত্র প্রেরণ করে জেলা পরিষদ। স্থানীয় সরকার বিভাগ বাকী অর্থ প্রদান না করে ওই বছরের এপ্রিল মাসে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে অর্থ প্রদানে সুপারিশ ও নির্দেশনা দেয়। কিন্তু আজ অবধি মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয় ওই অর্থ বরাদ্দ প্রদান করেনি। একাধিকবার মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে অবহিত করলেও কোন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে সৌধটির পূর্ণতা না পেয়ে বর্তমানে অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। চতুরপাশে উন্মুক্ত জায়গায় গরু-ছাগল অবাধে বিচরণ করছে। স্থানীয়দের অভিযোগ রাতের বেলায় সৌধটিকে ঘিরে মাদক সেবীদের আড্ডা বসে।
এ ব্যাপারে খুলনা জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী মো. হাফিজুর রহমান বলেন, নির্মাণে মন্ত্রণালয় ২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। জেলা পরিষদ ওই অর্থের সাথে আরও ১৬ লাখ যোগ করে ২ কোটি ১৬ লাখ টাকা দিয়ে মূলস্তম্ভ নির্মাণ করেছে। নকশা অনুযায়ী বাকী কাজ সম্পন্ন করতে আরও ৮ কোটি টাকা প্রয়োজন। বাকী অর্থ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার চিঠি দেয়া হয়েছে কিন্তু তাতে কোন সাড়া মেলেনি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ