শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

রংপুর-৫ আসনে গোলাম রব্বানীর প্রচারে বাধা ও সন্ত্রাস অব্যাহত

রংপুর অফিস : রংপুর-৫ মিঠাপুকুর আসনে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নির্বাচনী প্রচার কাজে বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারি দলের ক্যাডারদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ধানের শীষের প্রার্থী মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী রংপুরের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
গত ১৬ ডিসেম্বর এক লিখিত অভিযোগে তিনি জানান, ২৩ রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) আসনের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল কর্তৃক মনোনীত প্রার্থী হয়ে গত ১০ ডিসেম্বর, ২০১৮ তারিখে জেলা রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক “ধানের শীষ” প্রতীক বরাদ্দ পান। প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর তিনি সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনের প্রচার কাজ শুরু করন। কিন্তু নির্বাচনী প্রচার কাজ করতে গিয়ে তিনি এবং তাঁর সর্মথকরা নানা প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছেন। তিনি অভিযোগে জানান, বর্তমান স্থানীয় সংসদ সদস্যের পুত্র রাশেক রহমানের প্রত্যক্ষ মদদে এবং পৃষ্ঠপোষকতায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে নির্বাচনী আচরণবিধি চরমভাবে লঙ্ঘন করে তাঁর প্রচারকাজে ব্যবহৃত মাইক ভাঙচুর, অটোবাইক আটকসহ হকিস্টিক, লাঠিসোটা এবং দেশীয় অস্ত্রসহ নির্বাচনী প্রচার কাজে অংশ গ্রহণকারীদেরকে প্রতিনিয়ত আক্রমণ করেই চলছে। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন বিষয়টি জানলেও কে নো প্রতিকারের ব্যবস্থা তো গ্রহণ করছেই না, বরঞ্চ নির্বাচন কমিশনের নিষেধ থাকা সত্ত্বেও জামিনে থাকা আক্রমণের শিকার ও প্রচারকার্যে অংশ গ্রহণকারীদেরকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করে চলছে। গত কয়েকদিনে মিঠাপুকুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনা উল্লেখ করে তিনি জানান, গত ১৪ ডিসেম্বর ২নং রাণীপুকুর ইউনিয়নে ধানের শীষের লাগানো পোস্টার রাশেক রহমানের নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা ছিঁঁড়ে ফেলে। ১৬ নং মির্জাপুর ইউনিয়নে মাইক ভাংচুর করে পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়। ৭ নং লতিফপুর ইউনিয়নের জায়গীরহাটে স্থানীয় চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে পোস্টার লাগাতে বাধা দান করে সেখানে লাগানো পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়।
৪ নং ভাংনী ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি নোমানের নেতৃত্বে ঐদিন বিকেল ৪ টায় ভাংনীর বাজারে প্রচার মাইক ও অটোরিক্সা ভাংচুর করা হয়। ১৫ নং বড়হজরতপুর ইউনিয়নে  ৯নং ওয়ার্ডে আতাউর মেম্বারের বাড়ির সামনে ধানের শীষের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়। ৬ নং কাফ্রিখাল ইউনিয়নে পুলিশ গ্রেফতারের লক্ষ্যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নেতা-কর্মীদের হয়রানি করছে। ১০ নং বালুয়া মাসিমপুর ইউনিয়নে মরাহাটি বাজারে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা কামরুল ও সাবেক চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ধানের শীষের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে এবং পুলিশ দিয়ে নির্বাচনী অফিস দখলের অপচেষ্টা চালায়।
৬ নং কাফ্রিখাল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ ক্যাডার সম্রাট ও রাব্বীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ধানের শীষের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে এবং মাইক ও অটোরিক্সা ভাংচুর করে মাইকম্যান ও অটো ড্রাইভারকে পুলিশে ধরিয়ে দেয়। গত ১৫ ডিসেম্বর ৬ নং কাফ্রিখাল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের ক্যাডার সম্রাট ও রাব্বীর নেতৃত্বে ইউনিয়নের ফেডারেশন, আলীপুর, নয়ারহাট, মিয়ারহাট ও কুমরগঞ্জ বাজারে প্রায় শতাধিক মটর সাইকেল নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ সশস্ত্র মহড়া দেয় এবং ধানের শীষের প্রচার গাড়ী ও মাইক ভাংচুর করে এবং মাইকম্যান ও ড্রাইভারকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। ৭ নং লতিবপুর ইউনিয়নের খামার দূর্গাপুর গ্রামে ইউপি চেয়ারম্যানের শ্যালক গোলাপ ধানের শীষের প্রচার মাইক আটকিয়ে বাধা দেয় এবং মাইকম্যানকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও মারধর করে। পরে মাইক এবং অটোরিকশা আওয়ামী লীগের জায়গীরহাট নির্বাচনী কার্যালয়ে নিয়ে যায়।
৫ নং বালারহাট ইউপি চেয়ারম্যান কুদ্দুসের নেতৃত্বে শেরপুরসহ বেশ কিছু এলাকায় ধানের শীষের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয় এবং পোস্টার লাগাতে বাধা দেওয়া হয়। ১৭ নং ইমাদপুর ইউনিয়নে ধানের শীষের পোস্টার লাগানোর সময় মুন্সিপাড়া বাজার থেকে আতিকুর ও মিন্টু নামের দু’জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। বালারহাট ইউনিয়নের ধানের শীষ এর কর্মী মোসলেম ও রাজু খলিফাকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এ ছাড়া ৫ নং বালারহাট ইউনিয়ন থেকে ২ জন, ৬ নং কাফ্রিখাল ইউনিয়ন থেকে ২ জন ও ১৭ নং ইমাদপুর ইউনিয়ন থেকে ২জন অর্থাৎ মোট ৬ (ছয়) জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী এবং পুলিশের এহেন কর্মকান্ডে নির্বাচনী প্রচার কাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
এমতাবস্থায় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মোতাবেক নির্বাচনী প্রচারকাজ অবাধে পরিচালনা করার স্বার্থে উল্লিখিত চিহ্নিত সন্ত্রাসী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ধানের শীষ প্রতীক সহ অন্যান্য সকল প্রতীকের প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারকাজ সুষ্ঠু ও নিরাপদভাবে করার মতো ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি জোর দাবি জানান।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ