শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

থেরেসাকে আস্থা ভোটের দিকে ঠেলছেন করবিন

১৮ ডিসেম্বর, বিবিসি : যুক্তরাজ্যের বিরোধী নেতা জেরেমি করবিন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের বিরুদ্ধে আস্থা ভোটের উদ্যোগ নিয়েছেন। ১৪ জানুয়ারির আগে ব্রেক্সিট চুক্তিতে আইনপ্রণেতাদের (এমপি) ভোট দেওয়া উচিত নয় বলে মন্তব্য করার পর জেরেমি করবিন এই পদক্ষেপ নেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়াকে ব্রেক্সিট বলে।

হেরে যাওয়ার আশঙ্কায় গত সপ্তাহ থেকে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ব্রেক্সিট চুক্তি বিষয়ে ভোট বিলম্ব করছেন। লেবার পার্টির নেতা করবিন গতকাল সোমবার বলেন, ব্রেক্সিট বিষয়ে ভোটের জন্য এমপিদের এক মাস অপেক্ষা করা অগ্রহণযোগ্য। তিনি অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাজ্যকে জাতীয় সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।

তবে সরকারের একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, আস্থা ভোটের জন্য সরকার কোনো সময় বের করবে না। মন্ত্রীরা ছোটখাটো এসব রাজনৈতিক খেলায় অংশ নেবেন না।

ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে সরাসরি ভোটের আয়োজনে ব্যর্থ হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের বিরুদ্ধে আস্থা ভোটের এ আয়োজন। এ উদ্যোগ যত না সরকারের বিরুদ্ধে, তার চেয়ে বেশি প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের বিরুদ্ধে।

১২ ডিসেম্বর আস্থা ভোটে টিকে যান যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। এতে তিনি ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী পদে বহাল আছেন। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, আস্থা ভোটে উতরে গেলেও মের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে যে তাঁর নিজ দলের এমপিদের একটি বড় অংশের সমর্থন নেই, তা স্পষ্ট। ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে বিরোধের জেরে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির আইনপ্রণেতাদের একটি অংশ মের নেতৃত্ব চ্যালেঞ্জ করে আস্থা ভোটের দাবি জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে দলটির এমপিরা মের নেতৃত্বের পক্ষে-বিপক্ষে ভোট দেন। ঘণ্টা খানেক পর ঘোষিত হয় ফলাফল।

২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত এক গণভোটে যুক্তরাজের মানুষ ব্রেক্সিটের পক্ষে রায় দেন। পরাজয় মেনে নিয়ে পদত্যাগ করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। নতুন প্রধানমন্ত্রী হন মে।

এদিকে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে মধ্য-জানুয়ারিতে পার্লামেন্টে ভোট হবে বলে ঘোষণা করেছেন। পার্লামেন্টে এক ঘোষণায় তিনি বলেন, ১৪ জানুয়ারিতে শুরু হওয়া সপ্তাহেই এমপি’রা ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে ভোটাভুটি করবেন। এ ভোট গত সপ্তাহে হওয়ার কথা থাকলেও মে তা পিছিয়ে দিয়েছিলেন। ভোটাভুটিতে ব্রেক্সিট চুক্তিটি পাস না হওয়ার আশঙ্কার কারণেই মে ওই পদক্ষেপ নেন।

এতে করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার (ব্রেক্সিট) পরিকল্পনা আরো অনিশ্চয়তায় পড়ে। এরপর মে ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে আশঙ্কার জায়গাগুলো ইইউ’র কাছ থেকে আরো স্পষ্ট করে জানার চেষ্টা নেন।

এরপরই ফের ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভোটের নতুন তারিখ ঘোষণা করলেন তিনি। সেইসঙ্গে মে সবাইকে একথা বলেও আশ্বস্ত করেন যে, আইরিশ সীমান্ত নিয়ে যুক্তরাজ্যের যে আশঙ্কা ছিল তা ইইউ দূর করেছে।

কমন্সের এক বিবৃতিতে মে বলেন, পার্লামেন্টে ভোট হওয়ার আগে ৭ জানুয়ারি থেকে এমপি’রা ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে বিতর্ক শুরু করবেন। এরপরই পরবর্তী সপ্তাহে ভোট হবে।

যুক্তরাজ্যের ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আর মাত্র ১৪ সপ্তাহের কিছু বেশি সময় বাকি। ফলে তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে পার্লামেন্টের অনেক সদস্যই চিন্তিত সেটি জানেন উল্লেখ করে মে বলেন, গত সপ্তাহে ইইউ সম্মেলনে গিয়ে তিনি ব্রেক্সিট চুক্তির বিতর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই বলে নতুন করে আশ্বাস এবং নিশ্চয়তা পেয়েছেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ