শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

দেশের উন্নয়নে অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগান

সংগ্রাম ডেস্ক : রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স (এনডিসি) এবং আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্সে (এএফডব্লিউসি) অংশগ্রহণকারীদের দক্ষতার সঙ্গে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার মাধ্যমে দেশের সার্বিক উন্নয়নে আরো অবদান রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
রাজধানী মিরপুর ক্যান্টনমেন্টে শেখ হাসিনা কমপ্লেক্সে এনডিসি ও এএফডব্লিউ কোর্স ২০১৮ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে আজ তিনি বলেন, “আশা করি সদ্য সমাপ্ত প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আপনারা চ্যালেঞ্জসমূহ দক্ষতার সঙ্গে মোকাবেলা করে দেশের সার্বিক উন্নয়নে আরো বেশি অবদান রাখবেন।”
সফলভাবে কোর্স সম্পন্ন করার জন্য কোর্সে অংশগ্রহণকারীদের অভিনন্দন জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, “আমার বিশ্বাস অর্জিত জ্ঞান, ইচ্ছাশক্তি এবং অঙ্গীকারকে সামনে রেখে আপনারা জনগণকে আরো বেশি সেবা দিতে পারবেন এবং দেশকে টেকসই উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে ইতিবাচক অবদান রাখতে সক্ষম হবেন।”
রাষ্ট্রপতি বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, আন্তর্জাতিক পরিম-লে বাংলাদেশের কৌশলগত গুরুত্ব ক্রমাগত বাড়ছে। বর্তমানে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ফোরামে বাংলাদেশ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও গঠনমূলক ভূমিকা রাখছে। ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে বৈরিতা নয়’- বঙ্গবন্ধু সূচিত এই মূলমন্ত্রকে ধারণ করে আমাদের পররাষ্ট্র নীতি পরিচালিত হচ্ছে।
আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বশান্তি ও স্থিতিশীলতায় বিশ্বাসী। প্রতিবেশী দেশসমূহের সাথে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এ কারণে নানাবিধ সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও পার্শ্ববর্তী মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ও নির্যাতিত লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
তিনি বলেন, বিশ্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে সমুন্নত রেখে সরকার দেশের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে অসামান্য উন্নয়নের নজির স্থাপন করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় রূপকল্প-২০২১, রূপকল্প-২০৪১ এবং ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ অনুসরণ করে বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। তবে এ যাত্রায় সফলতার পাশাপাশি অনেক চ্যালেঞ্জও আছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক অফিসারগণকে স্ট্র্যাটেজিক বিষয় ছাড়াও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সমসাময়িক বিভিন্ন ইস্যুতে কৌশলগত দিক সম্পর্কে উচ্চতর প্রশিক্ষণ প্রদান করে যাচ্ছে। ফলে অফিসারগণ সামরিক ও বেসামরিক বিষয়ে নীতিগ্রহণ ও বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হচ্ছেন।
তিনি বলেন, ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের সুখ্যাতি এবং বহির্বিশ্বে এর সুপরিচিতি আমাদের জন্য সত্যিই একটি গর্বের বিষয়। এনডিসি’র শিক্ষা কার্যক্রমে অব্যাহত উঁচুমান ইতোমধ্যে এটিকে আন্তর্জাতিক মানের একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যগণ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি যে-কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে জনগণের ভালোবাসা ও আস্থা অর্জন করতে সমর্থ হয়েছে। এ ছাড়াও দেশে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়নসহ জাতিসংঘ মিশনে অংশ নিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে।
রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করে বলেন, জনগণ ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে এই অংশীদারিত্ব সময়ের পরিক্রমায় আরও বলিষ্ঠ হবে। সশস্ত্র বাহিনী দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের উঁচুমান সর্বদা বজায় রাখবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, একটি পেশাদার ও প্রশিক্ষিত সশস্ত্র বাহিনী জাতীয় উন্নয়ন এবং নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সশস্ত্র বাহিনীর পেশাদারিত্ব অর্জনের জন্য সদা পরিবর্তনশীল যুদ্ধ-কৌশল ও তথ্য-প্রযুক্তির বিকাশের দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রযুক্তির প্রসার সাইবার ক্রাইমের মাত্রাকেও বাড়িয়ে দিচ্ছে। তাই তথ্যপ্রযুক্তি ও তার অপপ্রয়োগ সম্পর্কেও কর্মকর্তাদের সম্যক ধারণা থাকা অনস্বীকার্য। একবিংশ শতাব্দীর বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে ফোর্সেস-গোল ২০৩০ বাস্তবায়ন করছে।
বন্ধুপ্রতীম দেশগুলো থেকে কোর্সে অংশগ্রহণকারীদের অভিনন্দন জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশে বছরব্যাপী অবস্থান কালে আপনারা যে মূল্যবান জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, তা ভবিষ্যতে আপনাদের আলোকিত করবে। এছাড়াও পেশাদারিত্বের সম্পর্ক ও নিয়মিত কর্মসূচীর বাইরে উষ্ণ সামাজিক বন্ধন ও বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছে। আপনারা এখান থেকে নিজ নিজ দেশে ফিরে গিয়ে আপনারা বাংলাদেশের শুভেচ্ছা দূত হবেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, তিন বাহিনী প্রধানগণ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, সিনিয়র বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তা এবং বঙ্গভবনের সংশ্লিষ্ট সচিববৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ